ছোটবেলার স্মৃতি বিজড়িত স্কুলে গিয়ে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়লেন বাংলাদেশের প্রাক্তন রাস্ট্রপতি হুসেইন মহম্মদ এরশাদ। সোমবার দুপুরে দিনহাটা হাইস্কুলে যান দিনহাটার ‘পেয়ারাদা’। স্কুল চত্বর ঘুরে দেখার পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক ও অন্যদের সঙ্গে সৌজন্য কথা বলেন।
আলোচনার মাঝেই পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। বলেন, ‘‘ছাত্রাবস্থায় প্রধানশিক্ষকের ঘরে যেতে খুব ভয় পেতাম। অন্য এক শিক্ষক কানমলে দিতেন।’’ স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে এ দিন তিনি নিজের লেখা কবিতা ও আত্মজীবনীর বই উপহার হিসেবে তুলে দেন। তিনি বলেন, “আমার বইয়ে স্কুলের কথা, সমস্ত শিক্ষকের কথা লেখা রয়েছে। ঘন্টা বাজাত যে তার কথাও। স্কুলের জন্য একটি কবিতা এনেছি। শেষ কবিতা।”
স্কুল থেকে ফেরার পথে ছাত্রদের ডেকে নেন তিনি। তাদের সঙ্গে ছবিও তোলেন। স্কুলের পড়ুয়ারা তাঁকে চেনেন কি না সেই ব্যাপারেও প্রশ্ন করেছেন। সমস্বরে পড়ুয়াদের জবাব এসেছে, আপনি বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। সেইসঙ্গে পড়ুয়াদের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এই স্কুলই আমার ভিত্তি। এখান থেকে আমি অনেক বড় জায়গায় গিয়েছি। রাস্ট্রপতিও হয়েছিলাম। ঠিকমতো পড়াশোনা কর। তোমরাও অনেক বড় জায়গায় যাবে।’’ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রতন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “নানা গল্প করেছেন। দারুণ অনুভূতি।” দিনহাটা হাইস্কুলের প্রাক্তন ছাত্র তথা এরশাদের তুতো ভাইপো জ্যাকারিয়া হোসেন বলেন, “জ্যাঠার ছাত্রাবস্থায় স্কুলের পণ্ডিত স্যার কীভাবে কানমলে দিতেন তাও দেখিয়েছেন। কোথায় কোন ঘর ছিল সেসবও খুঁটিয়ে দেখেছেন। খানিকক্ষণের জন্য যেন জ্যাঠা শৈশবে ফিরে গিয়েছিলেন।”
ছোটবেলার বন্ধু সুধীররঞ্জন সাহার বাড়িতেও যান এরশাদ। উপহার দিয়ে আড্ডার মেজাজে পুরানো দিনের গল্পে মাতেন। ১৯৪৬ সালে দিনহাটা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন এরশাদ। রংপুরে কলেজে ভর্তি হন। দেশভাগের জন্য তাঁর ফেরা হয়নি। রবিবার দিনহাটা পৌঁছে এরশাদ বলেন, “এখানে জন্মগ্রহণ করেছিলাম। বাবার ভিটে দেখতে এসেছি।” আজ, মঙ্গলবার এরশাদ কোচবিহার শহরে আসবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও ওই দিন কোচবিহারেই থাকছেন। দুজনের দেখা হতে পারে কি না সেটা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy