আদালতে পথে বুলেট।— নিজস্ব চিত্র
দু’বছর আগে বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিককে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন মালদহের যুব তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ রায় ওরফে বুলেট। আর এ বার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার হলেন তিনি।
শনিবার রাতে ইংরেজবাজার শহর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রবিবার পুলিশ যুব তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পেশ করে মালদহ জেলা আদালতে। আদালতে যাওয়ার পথে দলের এক জেলার নেতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন বুলেট। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইদল ছাত্রের মধ্যে গোলমাল হয়েছিল। সেখানে আমি হাজির না থাকলেও আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হল। প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর নির্দেশেই পুলিশ আমাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছে।’’ যদিও কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এখানে আমার বলার কিছু নেই।’’ মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
২০১৪ সালের ৫ ডিসেম্বর বুলেট স্মারকলিপি দিতে গিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিককে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতার হন। এমনকী, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁকে ছয়বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। এরপর থেকেই জেলার রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন বুলেট। এবারের বিধানসভা নির্বাচনের সময় ফের দলে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।
চলতি বছরের ৫ ডিসেম্বর গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রকাশ্যে দুই গোষ্ঠী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বাঁশ, লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়। এমনকী, ছাত্রীদেরও শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে ওই দিন।
দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তে নেমে সঞ্জীব দাঁ নামে বুলেটের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে জেরা করেই বিশ্বজিৎ রায়ের নাম পাওয়া গিয়েছে। তাঁর নির্দেশে ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা হয়েছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ৩৪৫ শ্লীলতাহানি, ৪২৭ ভাঙচুর, ১৪৩ বেআইনি জমায়েত সহ একাধিক ধারায় মামলারুজু করা হয়েছে। তাঁকে একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আজ, সোমবার ফের তাকে আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ফের বিশ্বজিৎ রায় গ্রেফতার হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়ে যান তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বরা।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘আইনের উর্দ্বে কেউ নন। আইন আইনের পথে চলবে। এর বেশি কিছু বলার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy