Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জড়াল কংগ্রেস

নোট বাতিলের বিরোধিতায় নেওয়া কর্মসূচি ঘিরে প্রকাশ্যেই হাতাহাতির ঘটনায় জড়িয়ে পড়ল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠী। শুক্রবার বিকালে শিলিগুড়ির হাসমিচকে ‘জনবেদনা’ কর্মসূচি নিয়েছিল কংগ্রেস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৮
Share: Save:

নোট বাতিলের বিরোধিতায় নেওয়া কর্মসূচি ঘিরে প্রকাশ্যেই হাতাহাতির ঘটনায় জড়িয়ে পড়ল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠী। শুক্রবার বিকালে শিলিগুড়ির হাসমিচকে ‘জনবেদনা’ কর্মসূচি নিয়েছিল কংগ্রেস। এখানেই প্রদেশ কংগ্রেস নেতাকে ঘিরে বিক্ষোভ, দলের সাধারণ সম্পাদককে মঞ্চ থেকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, রাস্তায় মধ্যে প্রায় পনেরো মিনিট ধরে কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতি চলে। পরে অবশ্য জেলা কংগ্রেস দফতরে আলোচনায় বসে বিষয়টি মিটে গিয়েছে বলেও দলের দু’তরফেই দাবি করা হয়েছে।

এ দিন কর্মসূচিতে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী। তিনি আবার ‘জনবেদনা’ কর্মসূচির রাজ্য কো-অর্ডিনেটর। বিভিন্ন শাখা সংগঠনকে ঠিকঠাক মতো না জানিয়ে এক দল অনুষ্ঠান করছেন বলে অভিযোগ করে অমিতাভবাবুকে ঘিরেই মহিলা কংগ্রেসের সদস্যরা ক্ষোভ জানাতে শুরু করে। তার থেকেই গোলমালের সূত্রপাত। এর পরেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন জেলার অন্যতম দুই সাধারণ সম্পাদক সুজয় ঘটক এবং বিমলেশ মৌলিক ও তাঁদের অনুগামীরা।

বিমলেশবাবু জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকারের ঘনিষ্ট বলেই পরিচিত। উল্টোদিকে, সুজয়বাবুর সঙ্গে জেলা সভাপতির সম্পর্ক দলের মধ্যে বহু চর্চিত। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘সবাই আমাদের দলের লোক। একদল এসে কর্মসূচি বন্ধ করে পার্টি অফিসে যেতে বলছিলেন। অনুষ্ঠান সেরে পড়ে যাব বলি। এর পরে মঞ্চের পিছনে কী হয়েছে জানি না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে রিপোর্ট দেব।’’

অনুষ্ঠানে জেলা সভাপতি শঙ্করবাবুকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি মাটিগাড়ায় একটি অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ঘন্টা খানেকের কর্মসূচির পর তিনি হাসমিচকে আসেন। শঙ্করবাবু বলেন,‘‘মতানৈক্য, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। হাতাহাতি হয়েছে বলেও শুনলাম। কংগ্রেসের এমন ঘটনা আগেও হয়েছে। এটা বড় বিষয় নয়।’’ তিনি জানান, শাখা সংগঠনের সবাই কর্মসূচিতে ঠিকঠাক আমন্ত্রণ না পাওয়ায় ক্ষোভ ছড়ায়। বি‌ষয়টি মিটে গিয়েছে। তাঁরা যে কর্মসূচির রূপরেখা জেলা থেকে পাঠিয়েছিলেন, তাতে হাসমিচকের অনুষ্ঠান ছিল না।

৮ নভেম্বর নোট বাতিলের পর দেশের মানুষের সমস্যা তুলে ধরতে দেশজুড়ে ‘জনবেদনা’ কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস। হাসমিচকে সুজয়বাবুর উদ্যোগেই অনুষ্ঠানটি হচ্ছিল। সেখানে একদল নেতানেত্রী এসে অমিতাভবাবুকে ক্ষোভের কথা জানান। এরপরেই মঞ্চের পাশে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘এটা এআইসিসি-র কর্মসূচি। আমরা সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। জেলা সভাপতির আশেপাশে থাকেন এমন, একদল নেতানেত্রী এসে গোলমাল শুরু করেন। অমিতাভবাবুকে নিয়ে যেতে চাইছিলেন। আমরা বারণ করি। হাতাহাতি হয়েছে বলে তো জানি না।’’

এ দিন বিমলেশবাবুকে মঞ্চ থেকে ফুটপাতে ধাক্কা নিয়ে নামিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ কর্মীরা তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টার করেন।
মহিলা কংগ্রেসের নেত্রীরাও গোলমালে জড়িয়ে পড়েন। বিমলেশবাবু বলেন, ‘‘জেলার এমন কর্মসূচি ছিলই না। অমিতাভবাবু, সুজয়বাবুর কাছে বিষয়টি জানতে গিয়েছিলাম। পার্টি অফিসে বসে আলোচনার কথাও বলি। উল্টে আমাকে মারধর করা হল।’’

ঘটনার জেরে হাসমিচকের ব্যবসায়ী ও পথ চলতি মানুষরা হকচকিয়ে যান। পরে বিরাট পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিধায়ক নুরুল হুদা, সুখবিলাস বর্মারাও এ দিনের কর্মসূচিতে এসেছিলেন। ছিলেন সমস্ত কাউন্সিলরাও। তাঁদের উপস্থিতিতেই হাতাহাতি হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Group Conflict Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE