দলের দৈনন্দিন কোন্দল থামাতে আইএনটিটিইউসির এনজেপি ইউনিট ভেঙে দেওয়ার পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় তৃণমূলের নেতাদের অনেকেই উদ্বিগ্ন। কারণ, এনজেপির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে তৃণমূলের কোন্দলের জেরে মাঝেমধ্যেই হট্টগোল বাঁধায় যাত্রী মহলেও ভয়ে পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়। দেশ-বিদেশের পর্যটকেরাও দু-দলের লোকজনকে প্রকাশ্যে লাঠিসোটা নিয়ে ছোটাছুটি করতে দেখে ঘাবড়ে যান। তা নিয়ে নানা মহল থেকে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের কাছে খবর পৌঁছেছে। পযটন মন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে এনজেপি স্টেশনের গুরুত্ব আলাদা। সেখানে এমন গোলমাল বরদাস্ত করা হবে না। আমি সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। সতর্কও করেছি। প্রয়োজনে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
এনজেপির আইএনটিটিইউসির একটি সংগঠনের সভাপতি ছিলেন প্রসেনজিৎ রায়। সেই সঙ্গে ভেঙে দেওয়া হয়েছে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লকের আইএটিটিইউসি ইউনিটটিও। এই ইউনিটটির সভাপতি জয়দীপ নন্দী। রাজ্য আইএনটিটিইউসির সভানেত্রী দোলা সেন নিজেই জানিয়েছেন দলীয় সংগঠনে থেকে ক্রমাগত নিজেদের মধ্যে এই ধরনের গোলমাল বরদাস্ত করা হবে না। এমন চলতে থাকলে দল থেকে সরতে হবে সে ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘দলে থাকলে দলীয় বিধি মেনে চলতে হবে। আগ বাড়িয়ে কারা গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এনজেপি এলাকাটি জলপাইগুড়ি জেলায় হলেও সংগঠনের সুবিধার জন্য দার্জিলিং জেলা আইএনটিটিইউসি থেকেই দেখা হয়। দার্জিলিং জেলার আইএনটিটিইউসির সভাপতি অরূপরতন ঘোষও জানান, দলীয় নেতৃত্ব যেখানে জয়দীপ ও প্রসেনজিতকে আলাদা দায়িত্ব দিয়ে এলাকা ভাগ করে দিয়েছিল, সেখানে সীমা লঙ্ঘন করা মানে দলের নির্দেশ উপেক্ষা করা। তিনি বলেন, ‘‘কেউ নির্দিষ্ট করে নিজের স্বার্থের জন্য সীমা লঙ্ঘন করেছে। তাই রাজ্য নেতৃত্বের হাতে বিষয়টি তুলে দিয়েছি। তাঁরাই বিচার করবেন।’’
এনজেপির বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীও। তিনিও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এনজেপি খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এলাকাটি যেহেতু ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভার মধ্যে পড়ে, তাই স্থানীয় বিধায়ক গৌতম দেবকে এবং ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক ওই সমস্যা কী তা চিহ্নিত করবেন। আমিও জলপাইগুড়ি ফিরে এনজেপি যাব। যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা মেটাতে হবে।’’
দেবাশিসবাবুকে এ ব্যপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মূলত প্রসেনজিতকে নিয়েই সমস্যা। নতুন দলে ঢুকে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে দলে টানতে চাইছে। প্রকৃত তৃণমূল কর্মীরা তা মেনে নিতে পারছেন না। ফলে গোলমাল তৈরি হচ্ছে। প্রসেনজিতের উচিত কাউকে দলে নিতে হলে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি নিয়েই তা করা।’’ যদিও প্রসেনজিত নিজে কোনও ভুল করেননি বলে দাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy