বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা। নানা বিষয়ে সচেতনতা প্রচারও এবার জলপাইগুড়ি শহরের পুজোর থিম।
মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতাই পুজোর থিম। তাই মণ্ডপের সামনে থাকবে মশার মডেলও। মডেলের মশা হুল বিদ্ধ করতে উদ্যত। সেই হুল শরীরে ফুটলে কী ধরনের রোগ সংক্রমণ হতে পারে তারও বিবরণ পাওয়া যাবে মণ্ডপের ভিতরে। মণ্ডপের দেওয়ালে থাকবে দেবী মহামায়ার নানা রূপ। আর প্রতিটি রূপের নীচে থাকবে একটি করে ঘট। ঘটের গায়ে লেখা থাকবে মশাবাহিত একএকটি রোগের নাম।
সম্প্রতি জলপাইগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ শুরু হয়। এই রোগের চিকিত্সার থেকেও প্রতিরোধের উপরেই গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসন সহ নানা সংস্থার থেকে প্রচার অভিযান চলে শহরে। সেই সচেতনতাকেই পুজোর থিম করেছে জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়া সর্বজনীনের পুজো উদ্যোক্তারা।
৮৬ বছরে পুরোনো পান্ডাপাড়া সর্বজনীনের পুজো মণ্ডপ এবার তৈরি হচ্ছে পোয়াল দিয়ে। অনেকটা ‘প্যাগোডা’র মতো দেখতে হবে মণ্ডপ। ঢোকার মুখে একটি ষাঁড় এবং গরুর মূর্তি দেখতে পাবেন দর্শনার্থীরা। তার কিছুটা উপরেই থাকবে মশার মডেলটি। পদ্ম পাতার উপরে দেখা যাবে মশাটিকে। পুজো কমিটির মুখপাত্র অনিন্দ্য মজুমদার বলেন, “মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা নিয়ে শহরের বাসিন্দাদের সচেতন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। সে কারণেই পুজোর থিম বাছা হয়েছে।”
পাণ্ডাপাড়ার পুজো থেকে অনেকটাই দূরে জাগ্রত সঙ্গের পুজো মণ্ডপ। থিমে সচেতনতার প্রচার এই দুই পুজো কমিটিকে এক রেখায় যুক্ত করেছে। ৬২ তম বর্ষে জাগ্রত সঙ্ঘের থিম বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে। একমাত্র সবুজায়ন-ই উষ্ণায়নের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে পৃথিবীকে। এই বার্তা দিতে ধানগাছ দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। ৪৫ ফুট উঁচু এবং ৪০ ফুট চওড়া মণ্ডপ তৈরি করছেন কাঁথি থেকে আসা কারিগররা। থার্মোকলের ভিতরে বালি দিয়ে রাজস্থানী ঘরানার নানা নকশা তৈরি হবে। সেগুলি সাজানো থাকবে মণ্ডপের ভিতরে। সেখানে নানা দেব দেবীর মূতি এবং তাঁদের অখ্যান যেমন থাকবে তেমননি এক একটি নকশা দর্শনার্থীদের কাছে সবুজায়নের বার্তাও দেবে বলে পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি।
শিশুরা গাছের চারা লাগাচ্ছে, সেই গাছের চারা বড় হয়ে ফল দিচ্ছে, গাছের ছায়ায় বিশ্রাম, গাছের শেকড় শক্ত করে ধরে মাটির ক্ষয় রোধ করছে এমন নানা প্রচার থাকবে মণ্ডপের বাইরে। মাইকে প্রচার করা হবে সচেতনতার বার্তা।
পুজো কমিটির সম্পাদক জয়দীপ চক্রবর্তী বলেন, “পৃথিবী ভয়াবহভাবে উষ্ণ হয়ে যাচ্ছে। সেই উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ করতে সবুজায়ণ দরকার। আধুনিক প্রযুক্তির নানা ব্যবহার উষ্ণতার মাত্রা বাড়িয়ে তুলছে। সে সব নিয়েও সচেতনতার বার্তা থাকবে মণ্ডপে।”
মণ্ডপের সবুজের সঙ্গে সাযুয্য থাকছে দেবী প্রতিমাতেও। সাবেকি ডাকের সাজের প্রতিমা। ব্যাকড্রপে গাঢ় সবুজ রঙের দেওয়াল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy