Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

উত্তরের চিঠি

পাঠ্যের বাইরেও পড়া বাড়ুক শৈশব থেকেই

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ০০:৪১
Share: Save:

পাঠ্যের বাইরেও পড়া বাড়ুক শৈশব থেকেই

আদিম যুগের গুহাচিত্রে, শিলালিপির মাধ্যমে মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করতে শুরু করেছিল। পরবর্তী সময়ে গাছের ছাল, তুলট কাগজ, তালপাতার বুক জুড়ে মানুষের মেধানুশীলনের মাধ্যম হয়ে উঠল। এমন অজস্রতার প্রবাহে অবগাহন করতে করতে সভ্যতার অগ্রগমনের হাত ধরে ঘরে এল ‘বই’ নামক আশ্চর্য প্রদীপ! বই হয়ে উঠল মানুষের পরম বন্ধু।

শৈশবই হচ্ছে বই-পড়ার আঁতুড়ঘর। পাঠ্য বইয়ের ভিড় ঠেলে নানা স্বাদের গল্প-কাহিনি শিশুমনকে অন্য জগতে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখন আর শিশুপাঠ্য বইগুলি তেমন ভাবে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না। ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ থেকে শুরু করে মনোরঞ্জক গল্পগুলি ক্যাসেট ও সিডি-তে বন্দি হয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। তা ছাড়া রয়েছে দেশি-বিদেশি হরেক রকমের কমিকসের বই। টিভি-র পর্দায় মজাদার কার্টুনগুলিতেও শিশুরা মজে থাকছে।

বড়দের হাতেও এখন আর আগের মতো বই দেখা যাচ্ছে না। বইয়ের মতো বান্ধব সঙ্গত কারণেই বিষণ্ণ। এক সময় উপহার হিসেবে বই-এর কোনও বিকল্প ছিল না। এখন হরেক রকমের কেজো অকেজো উপহার সামগ্রীর মাঝে ‘বই’ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। প্রকাশনা সংস্থাগুলি নানা ধরনের বই বছরভর প্রকাশ করে চলেছে। সে সব বই যে অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে, তা-ও নয়। বইমেলাগুলিতে উপচে পড়া ভিড় সে কথাই প্রমাণ করে। কিন্তু বই কেনা আর পড়া তো এক কথা নয়। নামিদামি লেখকদের শোভন-সুন্দর সংস্কারগুলি ড্রইংরুমে মর্যাদার যতটা সহায়ক, সেগুলি অপঠিত থাকার কারণে ততটাই বিমর্ষ।

স্কুলে স্কুলে, কলেজে কলেজে বইয়ের অভাব নেই। কিন্তু লাইব্রেরিগুলিতে খোঁজ নিলে দেখা যাবে কম ছাত্রছাত্রীই তাদের পড়াশুনার প্রয়োজনে যতটা বই নিয়ে থাকে, অন্যান্য বই সে ভাবে তাদের মনোযোগকে আকর্ষণ করে না। গ্রাম-শহরের সাধারণ পাঠাগারগুলি সরকারি অনুদানে পুষ্ট হলেও মানুষের মননকে পুষ্ট করতে পারছে না। মনোরঞ্জনের হাজারো উপকরণ সর্বগ্রাসী হয়ে বইকে কোণঠাসা করে রাখছে। এটা কিন্তু শুভ লক্ষণ নয়। বইয়ের বিকল্প শুধু বই-ই হতে পারে। এই বোধ জাগ্রত করা তাই একান্ত জরুরি। শৈশব থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে মা-বাবাকেই কিন্তু এগিয়ে আসতে হবে। সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠবার পেছনে পাঠ্যবইয়ের চেয়েও পাঠ্যবহির্ভুত বইয়ের অবদানই সর্বাধিক।

নির্মল কুমার ভট্টাচার্য। আলিপুরদুয়ার

রক্ষণাবেক্ষণ নেই, ভগ্নপ্রায় প্রাচীন কুঠি

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সীমান্তবর্তী থানা কুশমন্ডি। ওই থানার একটি ঐতিহাসিক স্থান মহীপাল। মহীপালে রয়েছে নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ ও দিঘি। ১৮০৭ সালে বুকানন হ্যামিলটন সাহেব ও ১৯১২ সালে এফ ডব্লু স্ট্রং সাহেব তাদের বিবরণীতে মহীপাল দিঘির কথা উল্লেখ করেছেন।

মহীপাল দিঘির উত্তর প্রান্তে রয়েছে বিখ্যাত নীলকুঠি যেটি আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত। ১৭৯৩ সালে জন টমাস মহীপালের নীলকুঠির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক হিসেবে কাজে যোগ দেন। বাংলা গদ্যের জনক ও সার্বিক বিকাশে অগ্রণী মিশনারি প্রাতঃস্মরণীয় উইলিয়াম কেরিও মহীপালের নীলকুঠির অস্থায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন। কেরি সাহেব মহীপালের নীলকুঠির ম্যানেজার ছিলেন। নীলকর হিসেবে এসে দিনাজপুরে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম ও সংস্কৃতির বিস্তারে উদ্যোগী হন। উইলিয়াম কেরির মূল কার্যালয় ছিল মদনাবতী ও ছোট খিদিরপুর (বর্তমানে বংশীহারী)। সেখান থেকেই তিনি মাঝে মাঝে মহীপালে আসতেন। পালরাজ মহীপালের স্মৃতিধন্য এই অ়ঞ্চল আজও অবহেলিত।

নীলকুঠির এখন ভগ্নদশা। নীল চোবানোর জন্য ইটের ঘর জঙ্গলাকীর্ণ। চারি দিকে অযত্নের ছাপ পরিলক্ষিত। উঁচু ঢিপি যেটি নীলকুঠির উৎকৃষ্টস্থল তার অনেকটা অংশ আজ দখল হয়ে গেছে। ইটের যে কাঠামো রয়েছে তাতে স্থানীয় মানুষজন ঘুঁটে দেয়, অনেকে আবর্জনা ফেলে। হেরিটেজ মর্যাদার নীলকুঠিকে বাঁচানোর জন্য নেই কোনও প্রতিবাদ। নেই কোনও প্রতিরোধ। ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত দক্ষিণ দিনাজপুরের মহীপালের নীলকুঠিকে সংস্কারের জন্য রাজ্য হেরিটেজ কমিশন পুরাতত্ত্ব সার্বেক্ষণ তথা প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত নতুবা অচিরেই কালের অতলে এই নীলকুঠি হারিয়ে যাবে।

শমিত ঘোষ। দক্ষিণ দিনাজপুর

রায়গঞ্জবাসীর দুর্ভোগ কমাতে ব্যবস্থা হোক

রায়গঞ্জবাসীর কাছে সবচেয়ে যানজটপূর্ণ এলাকা পাবলিক বাসস্ট্যান্ড মোহনবাটি বাজার। পাবলিক বাসস্ট্যান্ডে অটো, লোকাল গাড়ি, ফাইটার গাড়ি, রিক্সার দৌরাত্ম্যে হামেশাই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যায়। তার ওপর সামনে রেললাইনের ওপর বাস, অটো দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানোয় রোজ যানজটের সৃষ্টি হয়। মোহনবাটি বাজার সংলগ্ন এলাকা আরও যানজটপূর্ণ। একে তো বাস অটো তার ওপর রাস্তার অর্ধেক জুড়ে হকার। অবস্থা এমন যে, সেখানে অবস্থিত দু’টি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের বাইক, সাইকেল প্রভৃতি রাখাটাই দুষ্কর। আর পথচলতি মানুষও প্রত্যহ হয়রানির শিকার হচ্ছে এই এলাকাতে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না-করলে রায়গঞ্জবাসীর দুর্ভোগ বাড়বে বই কমবে না।

রায়গঞ্জের উপরে যে সমস্যাটি আমি তুলে ধরতে চাইছি, সেটি শ্রম আইন সংক্রান্ত, আগে রায়গঞ্জে প্রতিটি দোকান শুক্রবার অর্ধদিবস ও শনিবার পূর্ণদিবস বন্ধ থাকত। কিন্তু বর্তমানে বিশেষ করে বিয়ের মরসুমে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শহরের ছোট বড় মাঝারি প্রতিটি দোকান শুক্রবার রাত ৭-৮টা আবার কেউ কেউ ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখছে। এমনকী শনিবারেও দোকান খোলা রাখার হিড়িক পড়ে গেছে। এর কারণটি কী? প্রশাসন দেখেও দেখছে না। শ্রমিকেরা ভিতরে ভিতরে ক্ষুব্ধ হলেও ভয়ে প্রকাশ করতে পারছেন না। কারণ, ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে পার পেয়ে যাওয়ার পর তাদের হয়তো কর্মস্থল থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হবে। তবে অনেকেরই প্রশ্ন, শ্রমদফতরগুলি কি শুক্রবার শনিবার দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে? ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি কী বলেন?

আমার মতে, সমগ্র রাজ্য বা বলা যায় দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা খুদে পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের চাল সংক্রান্ত। সেই চালটির মান সরকারি ভাবে নির্ধারিত। তবে যদি কখনও কোনও স্কুলে ‘অখাদ্য ও নষ্ট’ চাল পৌঁছে থাকে। তবে চাল সরবরাহকারী সেটি নিতে টালবাহানার মাধ্যমে দিন রাত করে ফেলেন। এই চাল সরকারি দফতর এফ সি আই মারফত চাল সরবরাহকারীর কাছে পৌঁছয় তবে কেন চালের বস্তার গায়ে এফসিআই-এর সিল থাকবে না বা বস্তায় সিলের জায়গায় হাতসেলাই দেখা যায়? এমনকী কোনও স্কুলে এফসিআই সিলযুক্ত চালের স্যাম্পেলও পান না যাতে তারা চালটি মিলিয়ে দেখতে পারেন।

অথচ কোনও স্তর থেকেই এ ব্যাপারে নজরদারি নেই। শিক্ষক সংগঠনগলির প্রত্যেকের এ ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি নেই।

প্রবাল সাহা। রায়গঞ্জ, দিনাজপুর

দিনহাটা-কলকাতা রেল চালু হোক

উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে নিউকোচবিহার থেকে সম্প্রসারণ করে তা বামনহাট থেকে চালু হওয়ার কথা অনেক দিনের। সেই মতো রেলের প্রয়োজনীয় কাজ শুরুও হয়েছে। কবে থেকে চলবে তা কেউ বলতে পারে না। মাঝে মাঝে আলিপুরদুয়ার জংশনের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা পরিদর্শনে আসেন, এটুকু আমরা দেখি বা জানি।

দীর্ঘ দিন দিনহাটার রেলস্টেশন বন্ধ ছিল। বন্ধ বলতে সব ছিল কিন্তু গাড়ি ছিল না। মিটার গেজ থেকে ব্রড গেজে উত্তীর্ণ হয়ে এই এলাকার মানুষের কাছে রেলের পরিষেবা কিছুটা মিলেছে। এই জনপদের মানুষের দীর্ঘ দিনের আশা, দিনহাটা কিংবা বামনহাট থেকে কলকাতার একটা ট্রেন চলুক।

মানুষের এই আশা যে কবে পূরণ হবে তা একমাত্র রেলকর্তৃপক্ষই বলতে পারবে।

দ্রুত গতির সময়ের সঙ্গে চলতে গিয়ে এখানকার মানুষের হোঁচট খেতে হয়। কেননা, এই অঞ্চলের মানুষজনকে কলকাতা যাওয়ার ট্রেন ধরতে গেলে নিউকোচবিহার স্টেশনে যেতে হয়, যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টকর, সর্বোপরি ব্যয়বহুল। সরাসরি কোনও বাস নেই। যে ট্রেনগুলো বামনহাট-শিলিগুড়ি চলে তা ‘কানেকশন ট্রেন’ নয়। কাজেই অসুবিধা থেকেই যায়।

কোচবিহার-দিনহাটা-বামনহাট রেল রুটে লুপ লাইন তৈরি হয়েছে। মাঝপথের স্টেশনগুলোর পরিকাঠামোতে পরিবর্তন হচ্ছে কিন্তু কাজের অগ্রগতি দেখে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা হতাশ।

একটা সময় ছিল যখন এই রুটেই বাংলাদেশ হয়ে শিয়ালদহ যেত কলকাতার গাড়ি। না, আমরা আপাতত সে আশা করছি না, বামনহাট কিংবা দিনহাটা থেকে চলুক কলকাতার একটি ট্রেন। কর্তৃপক্ষ ভাববেন কি?

শুভাশিস দাশ। দিনহাটা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE