Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আলো-শব্দে ইতিহাস ফিরছে আদিনায়

মালদহ জেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে গাজোল ব্লকের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রয়েছে আদিনা গ্রাম। আদিনা গ্রামের মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে কলকাতা-শিলিগুড়ি যাতায়াতের মূল রাস্তা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। কাছেই রয়েছে আদিনা রেলস্টেশনও।

অসমাপ্ত: এই অবস্থায় পড়ে আছে পর্যটক আবাস। নিজস্ব চিত্র

অসমাপ্ত: এই অবস্থায় পড়ে আছে পর্যটক আবাস। নিজস্ব চিত্র

জয়ন্ত সেন
মালদহ শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ১১:১০
Share: Save:

বাংলার ঐতিহাসিক স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন আদিনা মসজিদ ও ডিয়ার পার্ককে ঘিরে বছরভরই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। পর্যটক আকর্ষণ বাড়াতে এ বার সেই আদিনাতেই ইকো ট্যুরিজম পার্ক গড়তে চলেছে মালদহ জেলা প্রশাসন।

আদিনা মসজিদের ঠিক পিছন দিকে সরকারি জমিতে প্রকৃতির সঙ্গে ভারসাম্য রেখে ওই ইকো পার্ক গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, কোনও পর্যটক বা জেলার বাসিন্দারাও পরিবার নিয়ে এসে যাতে সারা দিন কাটাতে পারে, এমনই ব্যবস্থা সেখানে করা হবে।

মালদহ জেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে গাজোল ব্লকের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রয়েছে আদিনা গ্রাম। আদিনা গ্রামের মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে কলকাতা-শিলিগুড়ি যাতায়াতের মূল রাস্তা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। কাছেই রয়েছে আদিনা রেলস্টেশনও।

কী আছে এখন আদিনায়?

আদিনা বাসস্টপ থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরেই রয়েছে আদিনা ডিয়ার পার্ক। বন-জঙ্গলে ঘেরা সেখানে এখন প্রচুর হরিণ সহ পরিযায়ী পাখি, দুটি নীলগাই প্রভৃতি রয়েছে। সেই পার্কে একটি মিনি জু, চিলড্রেন পার্ক, পাখিরালয়, কচ্ছপ উদ্ধার কেন্দ্র ও পুকুরে ঘড়িয়াল রাখারও প্রস্তাব রয়েছে পর্যটন ও বন দফতরের তরফে। এ দিকে আদিনা বাস স্টপের পাশেই রয়েছে ১৩৬৪ থেকে ১৩৭৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সুলতান সিকন্দর শাহ নির্মিত আদিনা মসজিদ। সেই আদিনা মসজিদে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডেরও ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও সেটি এখন চালু নেই। এ ছাড়াও আদিনার পাশেই রয়েছে একলাখী মসজিদ, ছোট সোনা মসজিদের মতো প্রাচীন নিদর্শনও।

মসজিদের পিছন দিকেই তৈরি হতে চলেছে প্রস্তাবিত আদিনা ইকো ট্যুকিজম পার্ক। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেখানে সরকারের ৯.৪ একর বা ২৯ বিঘার মতো জমি রয়েছে। সেখানে একটি পুকুর রয়েছে ২.৪৪ একরের ও অপরটি .৭০ একরের। এ ছাড়া ওই জমিতে জেলা পরিষদের তরফে একটি পর্যটক আবাস তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রস্তাব রয়েছে, ওই অর্ধ নির্মিত ভবন সংস্কার করে সেখানেই প্রস্তাবিত ইকো ট্যুরিজম পার্কের ক্যাফেটারিয়া হবে। দু’টি পুকুরের একটিতে হবে বোটিং ও মাছ ধরার ব্যবস্থা। অন্য পুকুরে ফোয়ারা তৈরি হবে। রঙিন মাছেরও একটি ছোট পুকুর থাকবে। লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে সেখানে মালদহের গৌরবময় পাল ও সেনযুগ থেকে শুরু করে সুলতানি আমল, মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের পদার্পণ—সবই তুলে ধরা হবে। পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে সেখানে কৃত্রিম ভাবে পাহাড়, ঝরনা, গ্রিন ফেন্সিং তৈরি করা হবে। প্রকৃতির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সেখানে গ্রাম বাংলার কুটীরের আদলে কয়েকটি কটেজও হবে। গোটা এলাকা জুড়ে লাগানো হবে বাহারি গাছ। প্রশাসন সূত্রে খবর, ইকো পার্কটি তৈরিতে অন্তত ২৫ কোটি টাকা খরচ করা হবে। মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পর্যটক থেকে শুরু করে জেলার মানুষও আদিনায় ঘুরতে গিয়ে যাতে সারাদিন প্রকৃতির সঙ্গে কাটাতে পারেন, সেদিক লক্ষ্য রেখেই ইকো ট্যুরিজম পার্কটি তৈরি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE