Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
মালদহ জেলা পরিষদ

দুই পক্ষেরই ৩২,নজর তলবি সভায়

ম্যাজিক ফিগার ৩৪। মালদহ জেলা পরিষদের একাধিক স্থায়ী সমিতির সাত সদস্যের বিরুদ্ধে আনা অপসারণের তলবি সভাকে ঘিরে ওই ম্যাজিক ফিগার জোগাড়ে তৎপর কংগ্রেস-সিপিএম জোট ও তৃণমূলও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:২৯
Share: Save:

ম্যাজিক ফিগার ৩৪। মালদহ জেলা পরিষদের একাধিক স্থায়ী সমিতির সাত সদস্যের বিরুদ্ধে আনা অপসারণের তলবি সভাকে ঘিরে ওই ম্যাজিক ফিগার জোগাড়ে তৎপর কংগ্রেস-সিপিএম জোট ও তৃণমূলও।

কিছু দিন আগে জেলা পরিষদের বেশ কিছু সদস্য কংগ্রেস ও সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছে। তাই, ম্যাজিক ফিগার জোগাড়ে তৃণমূল ফের দল ভাঙাতে পারে, এই আশঙ্কায় জোট তাঁদের সদস্যদের গোপন ডেরায় পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এক্ষেত্রে আগামী ৭ তারিখ তলবি সভার দিন সেই সদস্যদের সরাসরি জেলা পরিষদে হাজির করানো হবে। যদিও কী কংগ্রেস বা সিপিএম, কোনও নেতৃত্বই সদস্যদের গোপন ডেরায় পাঠানোর পরিকল্পনার বিষয়টি সরাসরি জানাতে চাননি।

গত ৩১ অগস্ট কংগ্রেস ও সিপিএম মিলে জেলা পরিষদের সাত সদস্যের অপসারণ চেয়ে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছিল। সেই সাত সদস্যরা হলেন আশাদুল আহমেদ, দুর্গেশ সরকার, চন্দনা সরকার, বাদল সাহা, শ্যামল মণ্ডল, কাঞ্চন সিংহ ও মিলন দাস। এঁদের মধ্যে প্রথম পাঁচ জন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে গিয়েছেন।

বাকি দু’জন সমাজবাদী পার্টির। তাঁরা আগে পরিষদে কংগ্রেস বোর্ডকে সমর্থন করলেও বর্তমানে তৃণমূল বোর্ডকে সমর্থন করছেন। ওই সাত জন আটটি স্থায়ী সমিতির ১৩টি পদে রয়েছেন। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই চিঠির প্রেক্ষিতেই বিভাগীয় কমিশনার আগামী ৭ তারিখ সেই অপসারণের তলবি সভা ডেকেছেন। ওই অপসারণের তলবিসভা হবে জেলা পরিষদের সাধারণ সভার ৬৬ জন সদস্যদের মধ্যে। সেই সাধারণ সভার সদস্যদের মধ্যে জেলা পরিষদের ৩৭ জন সদস্য সহ জেলার ১২ জন বিধায়ক, ২ জন সাংসদ, ১৫ জন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরাও রয়েছেন।

এই মূহুর্তের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, বিধায়ক ও সাংসদ মিলিয়ে কংগ্রেস ও সিপিএমের ঝুলিতে ৩২ জন সদস্য রয়েছেন। আবার তৃণমূলেরও ৩২ জন রয়েছেন। এ ছাড়া রয়েছেন গাজোলের বিধায়ক দিপালী বিশ্বাস। তিনি সিপিএমের হয়ে জিতলেও ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের শহিদ সমাবেশে গিয়ে দলে যোগ দেন। তৃণমূল সূত্রেই খবর, তিনি দলে যোগ দিলেও কাগজে-কলমে এখনও দলের নন। ফলে জেলা পরিষদের ওই অপসারণ সভায় সিপিএম হুইপ জারি করলে তাঁকে নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে, তাই তাঁর সভায় যোগদানের বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনও বলেন, দিপালীদেবীর তলবিসভায় যোগ দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্ব দেখছে। এদিকে অপরজন বৈষ্ণবনগরের বিজেপির বিধায়ক স্বাধীন সরকার। তিনি সেদিন আসবেন কি না, বা এলেও কাকে সমর্থন করবেন তা নিয়ে রয়েছে চর্চা।

তবে, সেদিনের সভার ম্যাজিক ফিগার যোগাড়ে তৎপর হয়েছে কংগ্রেস-সিপিএম জোটের পাশাপাশি ও তৃণমূলও। তৃণমূল ম্যাজিক ফিগার যোগাড় করে তলবিসভা ভোটাভুটিতে খারিজ করে দিতে চাইছে। পালটা জোটও সদস্যদের অপসারণে বদ্ধপরিকর, তা নিয়ে পরিকল্পনা করতে কংগ্রেস-সিপিএম একটি গোপন বৈঠকও করে।

জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নূর বলেন, ‘‘ম্যাজিক ফিগার যোগাড় করে ওই সাত জনকে আমরা অপসারণ করবই।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘কোনও ছল-চাতুরি না হলে ৭ তারিখ সাতজন অপসারণ হচ্ছেই।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘ম্যাজিক ফিগার আমাদের কাছেই সেদিন থাকবে। ফলে জোট কাউকেই অপসারণ করতে পারবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Congress CPM Vote
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE