Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রণক্ষেত্র বৈষ্ণবনগর

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫টি বোমা এবং দশ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বোমাবাজির মাঝে পড়ে যায় পুলিশও। পুলিশকে লক্ষ করেও বোমা চালানো হয় বলে অভিযোগ।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৩
Share: Save:

রাস্তার কাজ নিয়ে ঠিকাদারদের দু’গোষ্ঠীর সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার মোয়াজ্জেমপুর গ্রাম। শনিবার সকালে দু’গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় গুলি, বোমা নিয়ে সংঘর্ষ চলে। অভিযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করেও বোমাবাজি করা হয়। ঘটনায় আহত হন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে শূন্যে গুলি চালায় পুলিশও। ঘটনাস্থল থেকে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ দিনের ঘটনায় থমথমে হয়ে রয়েছে পুরো গ্রাম। পুলিশি টহলদারি চলছে গ্রাম জুড়ে। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) দীপক সরকার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ইতিমধ্যে হায়াত শেখ ও হাকিম শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’

বৈষ্ণবনগর থানার কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোয়াজ্জেমপুরে জেলা পরিষদের তরফে ৪ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয়ে দেড়শো মিটার ঢালাই রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই রাস্তাটি তৈরি হলে কৃষ্ণপুর গ্রামপঞ্চায়েতের সারিয়াত টোলা ও মুন্সিটোলা গ্রামের বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। রাস্তার কাজের বরাত পান ওই গ্রামের বাসিন্দা লোকমান আলি। এদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ শুরু করে দেন তিনি। তবে কাজ করতে বাধা দেন গ্রামেরই অপর ঠিকাদার আনারুল শেখ। জানা গিয়েছে, রাস্তার কাজটি করতে চেয়ে আনারুলও আবেদন করেছিলেন। তবে তাঁকে কাজটি না দিয়ে দেওয়া হয় লোকমানকে। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তাই এদিন সকালে রাস্তার কাজ শুরু হলে বাধা দেয় আনারুল গোষ্ঠীর লোকেরা। পাল্টা প্রতিরোধ করতে গেলে শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের মধ্যে গুলি, বোমার লড়াই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫টি বোমা এবং দশ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বোমাবাজির মাঝে পড়ে যায় পুলিশও। পুলিশকে লক্ষ করেও বোমা চালানো হয় বলে অভিযোগ। সেই বোমায় আঘাতে সামান্য আহত হন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার সহ কয়েকজন গ্রামবাসী। তাঁদের বেদরবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে বৈষ্ণব নগর থানা থেকে বাড়তি পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে শূন্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশও। তারপরই গ্রামের পাটের জমি থেকে আনারুল গোষ্ঠীর দুই সদস্য হায়াত শেখ ও হাকিম শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ, রবিবার তাকে পেশ করা হবে মালদহ জেলা আদালতে।

ঠিকাদার লোকমান আলি বলেন, “আমি রাস্তার কাজে বরাত পাওয়ায় এক লক্ষ টাকা তোলা চায় আনারুল। সেই টাকা না দেওয়ায় এদিন আমাদের উপরে হামলা চালানো হয়”। যদিও কাজ নিয়ম মেনে করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন আনারুল গোষ্ঠী। আনারুলের কাকা তথা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কংগ্রেসের আব্দুর মতিব বলেন, “নিয়ম মেনে কাজ করা হচ্ছে। ঠিকাদার কোন সিডিউলই দেখা যাচ্ছে না। তাই গ্রামবাসীরা এদিন কাজ বন্ধ করতে গেলে তাঁরা বোমাবাজি শুরু করে দেয়”। যদিও নিয়ম মেনেই কাজ হচ্ছে বলে দাবি করেন লোকমান আলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE