Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

চা নিয়ে ফের আশ্বাসই মিলল, ক্ষোভ

রাজ্য সরকারের হাতে থাকা পাঁচটি চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের সামাজিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে গড়া প্রকল্পের টাকা দ্রুত ব্যবহারের নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বীরপাড়ায় ডিমডিমায় একটি সভায় মুখ্যমন্ত্রী ওই ঘোষণা করেছেন। চলতি বছরের রাজ্য বাজেটে ওই প্রকল্প বাবদ ১০০ কোটি টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই টাকাই এ দিন দ্রুত শ্রমিকদের কাজে ব্যবহারের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাগানগুলির সামাজিক ক্ষেত্র ঠিক রাখতে ওই টাকা খরচ হবে।

ডিমডিমায় সভামঞ্চের পথে মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

ডিমডিমায় সভামঞ্চের পথে মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বীরপাড়া শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২৮
Share: Save:

রাজ্য সরকারের হাতে থাকা পাঁচটি চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের সামাজিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে গড়া প্রকল্পের টাকা দ্রুত ব্যবহারের নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বীরপাড়ায় ডিমডিমায় একটি সভায় মুখ্যমন্ত্রী ওই ঘোষণা করেছেন। চলতি বছরের রাজ্য বাজেটে ওই প্রকল্প বাবদ ১০০ কোটি টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই টাকাই এ দিন দ্রুত শ্রমিকদের কাজে ব্যবহারের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাগানগুলির সামাজিক ক্ষেত্র ঠিক রাখতে ওই টাকা খরচ হবে।

তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় আশ্বস্ত হতে পারছেন না বিরোধী চা শ্রমিক সংগঠনগুলি। উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিক সংগঠনগুলি যৌথ কমিটির আহ্বায়ক চিত্ত দে বলেন, ‘‘এ রাজ্যে ঘোষণা, বরাদ্দ তো অনেকই হচ্ছে। আদতে কাজ না করে কী লাভ। বাগানগুলি নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে, কোনটাই তো এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এ বার কী হয়, তা আমরাও দেখব।’’

সরকারি সূত্রের খবর, পাহাড় এবং সমতল মিলিয়ে সরকারের হাতে পাঁচটি চা বাগান রয়েছে। পাহাড়ে রংঙারুন, পান্দাম, রংমুখ সিডার ছাড়াও ডুয়ার্সের হিলা ও মহুয়া চা বাগান বামফ্রন্ট আমলে অধিগ্রহণ হয়। আর্থিক থেকে পরিকাঠামো নানা সমস্যায় জর্জরিত বাগানগুলিকে বর্তমান সরকার বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কিছু বেসরকারি সংস্থা আগ্রহ দেখালেও তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বাগানে পিপিপি মডলে পর্যটন এবং আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ইচ্ছুক স্থায়ী শ্রমিকদের অন্য সরকারি দফতরে পাঠানো হবে বলেও নির্দেশ জারি হয়। যদিও এখনও কোনও কিছুই চূড়ান্ত না হওয়ায় শ্রমিকদের সামজিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। এই অবস্থায় তহবিল গড়ার কথা ঘোষণা করে রাজ্য। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই চা বাগানগুলির শ্রমিকদের জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আবাসন, রেশন চিকিৎসা সহ একাধিক পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। পুনরুজ্জীবন দিতে টি প্ল্যান্টেশন ওয়েল ফেয়ার ফান্ড গঠন হয়েছে। তাদের রাজ্য সরকার ১০০ কোটি টাকা দিয়েছে।’’

মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ ছাড়া বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের আমরা মাসে ২ টাকা কেজি দরে চাল ও ১২ কিলো স্পেশাল জিআর দিচ্ছি। এই জেলায় ৫০ হাজার শ্রমিক তা পাচ্ছেন। এক সময় এক বছর বন্ধ থাকার পর শ্রমিকরা অনুদান পেতেন, তা এখন তিন মাস বাগান বন্ধ থাকলে দেড় হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। মালিকদের বলছি শ্রমিকদের স্বাস্থ্যও ভাল ভাবে দেখাশোনা করতে। এই জেলায় তিনটি বড় মাপের হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। সামসিং এবং মেটিলির জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য কিছু করতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় খুশি জেলার তৃণমূল নেতারা। দলের আলিপুরদুয়ার জেলার সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চা বাগান-সহ স্বাস্থ্য শিক্ষা পরিষেবাগুলিকে যে ভাবে ঢেলে সাজাচ্ছেন, তাতে জেলাবাসী হিসেবে আমরা গর্বিত।’’ আবার তৃণমূল চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা জোয়াকিম বাক্সলা বলেন, ‘‘ওই ১০০ কোটি টাকা পুরোটাই বাগানগুলির শ্রমিকদের সামাজিক স্বার্থে খরচ হবে। বাজেট ঘোষণা করে বরাদ্দও হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে নিজেই বিষয়টি দেখছেন, তাতে বাগানগুলির সার্বিক হাল ফিরবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE