আহতেরা চিকিৎসাধীন মালদহ মেডিক্যালে। নিজস্ব চিত্র।
ফের আম চুরিতে বাধা দেওয়ায় দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন বাগানের এক জোগানদার। বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন ওই জোগানদার পরিবারের দুই মহিলা-সহ পাঁচজন। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের পুকুরিয়ার কাগাচিরা গ্রামে। ঘটনায় আক্রান্তেরা প্রত্যেকেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। শনিবার সকালে পুকুরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও ফেরার রয়েছে অভিযুক্তেরা।
আম চুরির রুখতে গিয়ে জেলা জুড়েই আক্রান্ত হচ্ছেন বাগানের কর্মীরা। বাগান গুলিতে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আম ব্যবসায়ীরা। মালদহের আম ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘‘এই মরসুমে লাগাতার আক্রান্ত হচ্ছেন বাগানের প্রহরীরা। এমনকী, বাগান প্রহারা দিতে গিয়ে একজন খুন হয়েছেন। তবুও দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের ব্যর্থ পুলিশ।’’ বাগানে দুষ্কৃতীদের হামলা অব্যাহত থাকায় এর প্রভাব আগামী মরসুমে পড়বে বলেও তাঁর আশঙ্কা। সেই সময় বাগান জোগানোর জন্য কোনও শ্রমিক মিলবে না বলেও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। যদিও প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ছাড়া রাত বিরেতে আম বাগান প্রবণ এলাকা গুলিতে টহলদারি চলছে। প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে।’’
মাসখানেক ধরেই লাগাতার জেলার বাগানগুলিতে হামলা চলছে বলছে অভিযোগ। জেলার পুরাতন মালদহ এবং ইংরেজবাজারে একাধিকবার আম চুরিতে বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে বাগানের প্রহরীরা। এ বার ঘটনাটি ঘটেছে পুকুরিয়ায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুকুরিয়া থানার কাগাচিরা গ্রামের বাসিন্দা সোনা শেখ চলতি মরসুমের বাড়ির পাশের একটি আম বাগানে মাস খানেক ধরে বাগান জোগানোর কাজ করছেন। প্রায় তিন বিঘা জমির আমের বাগান রয়েছে। ওই বাগানের মালিক রতুয়ার পান্নালাল শেখ। বাগানে এখনও ৪০ শতাংশ আম রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনা ওইদিন রাতে একাই বাগান প্রহারা দিচ্ছিলেন। সেই সময় একটি ট্রাক্টরে সাত আটজনের একটি দল আম চুরি করছিল বলে অভিযোগ। সোনা বাধা দিতে গেলে কোদাল দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। চিৎকারে পরিবারের লোকেরা ছুটে গেলে তাঁদের উপরেও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই মহিলাও। আহত হয়েছেন সোনার বাবা সামিউদ্দিন শেখ, মা জামু বিবি এবং দুই দাদা নাসিরুল শেখ ও সাফিকুল শেখ। প্রত্যেকের মাথায় লোহার রডের আঘাত রয়েছে। ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা ছুটে গেলে অভিযুক্তেরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে আহতদের নিয়ে যান রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে প্রত্যেকের আঘাত গুরুতর থাকায় রাতেই তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। পরে পুকুরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আহত সোনা বাবু বলেন, আমি রোজকার মতো বাগান প্রহারা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে দেখি একটি ট্রাক্টরে সাত আটজনের একটি দল বাগানের আম পেড়ে নিচ্ছে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে মারধর করা হয়। আমার পরিবারের সদস্যদেরও মারধর করা হয়। আম চুরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছিল গ্রামেরই এজাজুল শেখ। তার নেতৃত্বেই হামলা বলে দাবি সোনা শেখের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এজাজুল পেশায় ট্রাক্টর চালক। ঘটনার পর থেকে ফেরার রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy