Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বুনিয়াদপুরে ধৃতদের নামে খুনের মামলা

বুনিয়াদপুরে বৃদ্ধ খুনে অভিযুক্ত দুই ইভটিজারের বিরুদ্ধে বুধবার খুনের মামলা দায়ের করলো পুলিশ। এ দিন ধৃতদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে মৃতের পরিবার। তবে জানা গিয়েছে অভিযোগপত্রে পিটিয়ে মারার উল্লেখ থাকলেও গুলি চলার কথা বলা হয়নি।

আদালতে হাজির করানো হচ্ছে ধৃতদের। —নিজস্ব চিত্র।

আদালতে হাজির করানো হচ্ছে ধৃতদের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৫ ০২:১৯
Share: Save:

বুনিয়াদপুরে বৃদ্ধ খুনে অভিযুক্ত দুই ইভটিজারের বিরুদ্ধে বুধবার খুনের মামলা দায়ের করলো পুলিশ। এ দিন ধৃতদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে মৃতের পরিবার। তবে জানা গিয়েছে অভিযোগপত্রে পিটিয়ে মারার উল্লেখ থাকলেও গুলি চলার কথা বলা হয়নি।

সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি থানার বুনিয়াদপুর শহরের পীরতলা এলাকায় প্রদীপ্ত ওরফে বাবুন তিওয়ারি নামে এক যুবককে লক্ষ্য করে সুমন সরকার ও পাবন মুখোপাধ্যায় নামে দুই দুষ্কৃতী গুলি চালায় বলে অভিযোগ। গুলি লক্ষভ্রষ্ট হলে বেঁচে যান বাবুন। কিন্তু আওয়াজ পেয়ে তার বাবা রমেশ তিওয়ারি (৬৮) ঘর থেকে বের হলে অভিযুক্তরা তাঁকে পিটিয়ে মারে বলে অভিযোগ। রাতেই স্থানীয় লোকজন তাড়া করে অভিযুক্ত সুমন ও পাবনকে পাকরাও করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করাতেই অভিযুক্তদের সঙ্গে বাবুনের গণ্ডগোল ছিল বলে জানা গিয়েছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতে তার বাড়ির সামনে বাবুনকে লক্ষ করে গুলি চালায় দুই অভিযুক্ত। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরেও তাদেরকে আটক দেখিয়ে থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছিল। বুধবার সকালে রমেশবাবুর বাড়ির লোকজন থানায় অভিযোগ জানানোর পরেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। তৃণমূলের এক আইনজীবীর ছত্রছায়ায় থাকতেই অভিযুক্তরা এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ছোঁয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘এ দিন মৃতের বাড়ির লোকের তরফে ধৃত ওই দুই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে খুনের মামলা রুজু করা হয়। আদালত থেকে ধৃতদের সাত দিনের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ’’

নিহত রমেশবাবু বড় ছেলে প্রশান্তবাবু পারিবারিক বিবাদের জেরে অভিযুক্তরা তার বাবাকে মাথায় রড় দিয়ে আঘাত করে খুন করেছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে ভাইকে লক্ষ করে গুলি চালানোর বিষয়টি তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেননি বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ বিষয়ে এদিন মুখ খুলতে চাননি প্রশান্তবাবু। তাই পুলিশের চাপের মুখেই তাঁদের পিছু হটতে হল কি না তা নিয়েও জল্পনা বাড়ছে। কারণ মঙ্গলবারও গুলি চলার অভিযোগ অস্বীকার করেছিল পুলিশ।

এ দিকে তৃণমূলের যে আইনজীবীর বিরুদ্ধে দুই দুষ্কৃতীকে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেই প্রতুল মৈত্রও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের সঙ্গে আমার আইনজীবী ও মক্কেলের সম্পর্ক। প্রশ্রয় দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠেনা। সুমনের একটি পুরনো গণ্ডগোলের মামলায় আইনজীবী ছিলাম। তাছাড়া ওদের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত সুমনের বিরুদ্ধে থানায় পুরনো অপরাধের মামলা রয়েছে। অভিযুক্তদের সঙ্গে সংশ্রব নেই বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের সভা মিছিলে তাদের দেখা যেত। ফলে এলাকায় দাদাগিরির খবর পেয়েও ওদের বিরুদ্ধে পুলিশ হাত গুটিয়ে ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE