বন বাংলোতে ছুটি-যাপন। সেই সঙ্গে রসনাতৃপ্তি। বন উন্নয়ন নিগমের সৌজন্যে এ বার পুজোয় এমন সুযোগই হয়তো অপেক্ষা করছে পর্যটকদের জন্য।
পুজোর মুখে ভোজনরসিক পর্যটকদের জন্য ওই রেস্তোরাঁ চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য বন উন্নয়ন নিগম। পরীক্ষামূলকভাবে চারটি বনবাংলোয় রেস্তোরাঁ চালুর পরিকল্পনা পাকা। ডুয়ার্সের রাজাভাতখাওয়া, মালঙ্গি ছাড়াও পাহাড় ঘেরা জলঢাকা ও দক্ষিণবঙ্গের মুকুটমণিপুরে রেস্তোরাঁ চালুর ব্যাপারে শনিবার কলকাতায় বৈঠক করেন চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ। ছিলেন নিগমের দফতরে ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ডিভিশন্যাল ম্যানেজার-সহ পদস্থ কর্তারাও। জানা গিয়েছে, বন দফতর, বন উন্নয়ন নিগমের বাংলোয় থাকা পর্যটকেরা তো বটেই বেসরকারি হোটেলে রাত্রিবাস করলেও সমস্যা নেই। রেস্তোরাঁর খোলা থাকবে সবার জন্যই। উদয়নবাবু বলেন, “পুজোর আগে নিগমের চারটি বাংলো চত্বরে পরীক্ষামূলক ভাবে রেস্তোরাঁ চালু করতে চাইছি। উত্তরবঙ্গে তিনটি ও দক্ষিণবঙ্গে একটি রেস্তোরাঁ চালুর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।”
নিগম সূত্রেই জানা গিয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে বহু জায়গায় নিগমের বাংলো রয়েছে। ডুয়ার্সের রাজাভাতখাওয়া, সুলতালেখোলা, কোচবিহারের রসিকবিল থেকে পাহাড়ের লাভা, লোলেগাঁও, মংপং, লেপচাজগত, প্যারেন, জলঢাকা ও দক্ষিণের তিনটি এলাকা মিলিয়ে মোট বাংলোর সংখ্যা ৩২টি। সারাবছরই নিগমের ওই সব বাংলোয় পর্যটক ভিড় লেগেই থাকে।
দুর্গাপুজোর মুখে উৎসবের মরসুমে ওই চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। নিগমের উদ্যোগে রেস্তোরাঁ চালু করা হলে যারা অন্য বাংলোয় থাকছেন তাদের অনেকেও সেখানে আসবেন। ফলে নিগমের প্রচারের সঙ্গে বিকল্প আয়ের সম্ভবনাও খানিকটা বাড়বে। এ ভাবেই মূলত এক ঢিলে দুই পাখি মারার ভাবনা থেকে রেস্তোরাঁর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে নিগম সূত্রে খবর।
কী কী মিলবে রেস্তোরাঁয়? উদয়নবাবু জানিয়েছেন, বাঙালি ও অবাঙালিদের পছন্দের হরেক মেনু রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। সূত্রের খবর, চাউমিন, মোমো, চিকেন ললিপপ, ফিসফ্রাই, স্যুপ, চিকেন তন্দুরি, আলু পরোটা থেকে রকমারি চাইনিজ ও কন্টিনেন্টাল মেনু তালিকায় রাখার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। সবকিছু দেখে ওই তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। নিগমের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ী সংগঠন কর্তারা। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট স্যানাল বলেন, “পর্যটকদের যত বেশি জিনিস পছন্দের সুযোগ দেওয়া যাবে আকর্ষণও তত বাড়বে। বেড়াতে গিয়ে রেস্তোরাঁয় বসে খাবারের আমেজ নেওয়া গেলে নিগমের রাজস্বও বাড়বে। সত্যি দারুণ উদ্যোগ।” ভ্রমণপ্রেমী বাসিন্দাদের কয়েকজনও জানান, বেড়াতে গিয়ে রুম-সার্ভিস হিসেবে অনেক মেনু পাওয়া যায়। তবে পরিবারের সবাইকে নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে রেস্তোরাঁয় বসার আনন্দটাই আলাদা। পর্যায়ক্রমে ওই বিষয়টি সব বাংলোর জন্য ভাবা দরকার।
নিগম সূত্রের খবর, এ দিনের নিগমের কাঠ বিক্রি, সামাজিক উন্নয়ন, সরকারি আর্থিক বরাদ্দের মত নানা প্রকল্পের প্রসঙ্গও আলোচনা হয়েছে। এক কর্তা বলেন, এ বার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে বন দফতরের কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ জন্য নিগমের কাজে বাড়তি ‘সতর্কতা’ নেওয়া হচ্ছে। কেউ ঝুঁকি নিতে চান না। বৈঠকে নিগমের অন্য বন বাংলোগুলিতে আরও পর্যটক বাড়ানো, রাজস্ব বৃদ্ধি, শূন্যপদ পূরণ নিয়ে রূপরেখা তৈরি করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy