দূরত্ব: আদালতের পথে কাছাকাছি, কিন্তু মুখোমুখি নন জুহি, চন্দনা। ছবি: সন্দীপ পাল
জলপাইগুড়ির ওই হোমটির তথ্য বলছে, ১৪টি শিশুকে তাদের বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, ওই শিশুদের দত্তকই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যাঁরা দত্তক নিয়েছেন, তাঁদের কেন প্রকৃত বাবা-মা বলে উল্লেখ করা হল, তা চিন্তায় ফেলেছে গোয়েন্দাদের। সিআইডির ধারণা, এই শিশুদের আসলে বিক্রিই করা হয়েছে।
সিআইডির ধারণা, আইন ফাঁকি দিতেই দত্তকের কথা উল্লেখ না করে ওই শিশুদের তাদের বাবা-মায়ের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন হোম কর্তৃপক্ষ। প্রতি ক্ষেত্রেই মোটা টাকার বিনিময়ে শিশু বিক্রি হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
বস্তুত, শুক্রবার আদালতে গোয়েন্দারা যে নথি তুলে ধরেন, তাতেও এই কথাই বলা হয়েছে। সিআইডি সূত্রের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে কারচুপি করা হয়েছে দার্জিলিং সিডব্লিউসি-র অর্ডারেও৷ আর সেই কাজ করতে গিয়ে চন্দনার কাছ থেকে মৃণাল ঘোষ টাকা নিয়েছেন বলেও দাবি সিআইডি-র৷ পাশাপাশি চন্দনার কাছ থেকে সস্মিতা ও মৃণাল নতুন ল্যাপটপ নিয়েছিলেন বলেও তাদের অভিযোগ৷
চন্দনা অবশ্য কোর্টে ঢোকার সময়ে বলেন, তিনি কোনও শিশু বিক্রি করেননি। জুহি চৌধুরীকে কোনও টাকাও দেননি। তিনি এবং শিশু পাচার কাণ্ডে ধৃত বাকি ছ’জনের এ দিন একযোগে চোদ্দো দিনের জেল হেফাজত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বহাল আয়া-রাজ
এই মুহূর্তে কাউকেই নতুন করে জেরা করছে না সিআইডি। চন্দনার হোমের এক কর্মীকে জেরা করে নতুন করে অনিয়মের খোঁজ পাওয়া যায়। ওই কর্মী সিআইডিকে জানান, নথিতে যে শিশুদের বাবা-মায়ের কাছে ফেরানোর কথা বলা হয়েছে, তা সত্যি নয়। সিআইডির তরফে প্রশাসনকেও জানানো হয়। প্রশাসনের থেকেও শুরু হয় খোঁজখবর। ঠিকানা ধরে যাচাইও করা হয়। সেই খোঁজ খবরের পরেই সিআইডি নিশ্চিত হয়েছে, কাউকেই প্রকৃত বাবা-মায়ের কাছে ফেরত পাঠানো হয়নি। হোমের ওই কর্মীকে মামলায় সাক্ষী করেছে সিআইডি।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভকত বলেন, ‘‘সিআইডি তদন্ত করছে। আমাদের নতুন করে কিছু বলার নেই। যা হবে সকলে জানতেই পারবেন।’’
সেই সঙ্গে, দত্তক নিয়ে যাবতীয় অনিয়ম ধামাচাপা দিতে রাজ্যের বেশ কয়েকজন পদস্থ আমলার সঙ্গে চন্দনারর যোগাযোগ করেছিল বলে সিআইডি জেনেছে। সেই আমলাদের সুপারিশে কাউকে শিশু পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে সিআইডি।
এখনও পর্যন্ত যত শিশুকে দত্তক দেওয়া হয়েছে, তার সব নথি যাচাই করছে সিআইডি। কারও সুপারিশের জন্য নিয়ম ভাঙার প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট আমলাকেও জেরা করা হতে পারে বলে দাবি সিআইডির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy