পণের খাট পছন্দ না হওয়ায় নববধূকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠলো স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে।
বিয়ের ১২ দিনের মাথায় মালদহের হবিবপুরের ঋষিপুর গ্রামের এই ঘটনার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার রাতে হবিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের পরিজনেরা। বুধবার অভিযুক্ত স্বামী ও তাঁর দুই ভাই-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার জানান, তিন জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই বধূর নাম শিখা রায় (২০)। গত ১ জুলাই তাঁর বিয়ে হয় পিন্টু সরকারের সঙ্গে। পিন্টু নিজের জমিতে চাষবাস করেন। শিখার বাবা রঞ্জিত রায় মঙ্গলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভুয়াডাঙা গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় কৃষক রঞ্জিতবাবুর তিন ছেলে মেয়ে। তাঁদের মধ্যে শিখাই বড়। তাঁদের পরিবারের লোকেদের দাবি, বিয়েতে পণ বাবদ পিন্টুদের নগদ ২০ হাজার টাকা, এক ভরি সোনা এবং বেশকিছু আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছিল। তবে বিয়েতে খাট পছন্দ হয়নি বলে পিন্টু অভিযোগ তোলে। এই নিয়ে বৌভাতের দিন মেয়ের বাড়ির সঙ্গে বচসাও হয় পিন্টুদের। এমনকী বৌভাতের রাতেই শিখাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
শুক্রবার পিন্টু তাঁর বিয়ের খাট ফেরত দেন শ্বশুরবাড়িতে। তা নিয়েও দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। মঙ্গলবার সকালে শিখাকে পিন্টুরা বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। মাথায় আঘাত লাগে শিখার। ঘটনার পরিবারের লোকেরা জানতে পেরে তাঁকে প্রথমে বাড়ি নিয়ে যান। বিকেলের দিকে প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।
রাতেই হবিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পরিজনেরা। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী পিন্টু সরকার-সহ তাঁর দুই খুড়তুতো ভাই উজ্জ্বল ও সমরকেও গ্রেফতার করে। মৃত বধূর বাবা রঞ্জিতবাবু বলেন, ‘‘বিয়ের রাত থেকেই আমার মেয়ের উপরে অত্যাচার শুরু করেছিল ওর স্বামী। কারণ তার খাট পছন্দ হয়নি। আমাদেরকেও গালিগালাজ করা হয়েছিল বৌভাতের রাতে। তবে ভাবতেই পারিনি খাটের জন্য আমার মেয়েকে ওরা পিটিয়ে খুন করবে। আমরা প্রত্যেকের কঠোর শাস্তি চাই।’’ মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy