Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জাতীয় সড়ক অবরোধ তৃণমূল কাউন্সিলরের, দুর্ভোগ

বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে তৃণমূল কাউন্সিলরের নেতৃত্বে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরোধ করা হল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। ঘণ্টা দুয়েকের অবরোধের জেরে নাকাল হন নিত্য যাত্রীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৬
Share: Save:

বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে তৃণমূল কাউন্সিলরের নেতৃত্বে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরোধ করা হল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। ঘণ্টা দুয়েকের অবরোধের জেরে নাকাল হন নিত্য যাত্রীরা।

সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ ইংরেজবাজারের রথবাড়ি মোড়ে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশিস কুণ্ডুর নেতৃত্বে তাঁর অনুগামীরা অবরোধ শুরু করেন। সামিল হয় মালদহ জেলা ব্যবসায়ী সমিতিও। জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে থাকার ফলে ইংরেজবাজার শহরেও ব্যাপক যানযটের সৃষ্টি হয়। স্কুল, কলেজ ও অফিস যাত্রীদের ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। পুলিশ গিয়ে কথা বলার পরেও অবরোধ তুলতে রাজি হননি বিক্ষোভকারীরা। পরে ইংরেজবাজারের জয়েন্ট বিডিও সুব্রত সাহা যাওয়ার পরেও অবরোধ চলতে থাকে। দুপুর দেড়টা নাগাদ জাতীয় কর্তৃপক্ষ গিয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে সময়ের মধ্যে কাজ না হলে, আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে বলে কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ীরা হুমকি দেন।

আশিসবাবু বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বহু বার জানানো সত্ত্বেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এ দিন বাধ্য হয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছি। এতে সাধারণ মানুষের সমস্যা হলেও, তাঁদের দৈনিক দুর্ভোগ থেকে রেহাই মেলার জন্য এই আন্দোলন।’’

ইংরেজবাজারের রবীন্দ্র ভবন মোড় থেকে মঙ্গলবাড়ি রেল গেট পর্যন্ত ছ’কিলোমিটার জাতীয় সড়ক খানা খন্দে ভরে রয়েছে। রাস্তার মাঝে বড়ো বড়ো গর্ত। সম্প্রতি মালদহ সফরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে সংস্কার করা হয়েছিল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। তবে বর্ষার শুরুতেই ফের বিপজ্জনক হয়ে ওঠে রাস্তা। রাস্তা থেকে পিচ উবে গিয়ে পাথরের কুচি ছড়িয়ে গিয়েছে। যার ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা। বেহাল রাস্তার জেরে গাড়ির যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হচ্ছে। প্রায়ই জাতীয় সড়েকর মাঝখানে বিকল হয়ে পড়ে থাকছে গাড়িগুলি। ফলে যানযট নিত্য দিনের সমস্যা হয়ে উঠেছে।

৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রথম দু’টি লেন কার্যত জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। জাতীয় সড়কের ধারে নিকাশি না থাকায় জল জমে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমনই দাবি নিয়ে ইংরেজবাজারের আশিসবাবুর নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। এ দিনের বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু, সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা-সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। তাঁরা শহরে ঢোকার রাস্তার মুখও বন্ধ করে দেন। যার জন্য রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ রোড, স্টেশন রোড, নেতাজি মার্কেট রোডেও তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়। অবরোধ উঠলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও ৩০ মিনিট সময় লেগে যায়। বিপাকে পড়েন বাসিন্দা।

গাজলের আদিনার বাসিন্দা অজিত সাহা বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী গর্ভবতী। মালদহ মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলাম। রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকায় তিন কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেই হাসপাতালে পৌঁছতে হয়েছে।’’ একই সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন ইংরেজবাজার শহরের নেতাজি কলোনির বৃদ্ধ দম্পতি গৌর সরকার ও তাঁর স্ত্রী। গৌরবাবু বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে বৃদ্ধ ভাতার টাকা তুলতে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে অবরোধের মুখে পড়ি। এই বয়সে আর হেঁটে যাতায়াত করতে পারছি না। তাই অবরোধ ওঠার আশায় বসে থাকতে হয়েছে।’’ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উজ্জ্বলবাবু বলেন, ‘‘অবরোধের জেরে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হওয়ায় আমরা ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’ জাতীয় সড়কের মালদহ প্রোজেক্ট ডিরেক্টর সঞ্জীবকুমার শর্মা বলেন, ‘‘১৫ দিনের মধ্যে সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে যাবে। আগে থেকেই কাজ শুরুর কথা রয়েছে। বর্ষার জন্য কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।’’

জাতীয় সড়ক আটকে এ ভাবে অবরোধ করাতেই দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NH 34 Trinamool councilor malda Jayanta Kundu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE