ক্লাস করা ও পরীক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে ছাত্রদের খেয়ালখুশি মনোভাবে রাশ টানার জেরেই হেনস্থা হতে হয়েছে তাঁকে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ বিভাগের ডিন তপন হাত।
ছাত্রদের টানা বিক্ষোভে অসুস্থ হয়ে পড়া তপনবাবুকে শনিবার কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। তারপরেই তিনি অভিযোগ করেন, অনেক ছাত্র-ছাত্রীই নিয়মিত ক্লাস করত না। পরীক্ষাও দিতে চাইত খেয়ালখুশি মতো। সে সব নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন তিনি। কিছুদিন আগে ৮ ছাত্রকে শো-কজও করেছিলেন। সে সব কারণেই কিছু ছাত্র তাঁর উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁরাই পরিকল্পিত ভাবে রাতভর তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে রেখে হেনস্থা করে। তাঁর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাহানুর আলম রয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন। সাংবাদিক নিগ্রহের অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে সাহানুরকে।
তপনবাবু বলেন, “আমাকে পদত্যাগ করানোর জন্যেই এমন ভাবে আক্রমণ হয়। তবে আমি পদত্যাগ করব না। আশা করব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দোষী ছাত্রদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবেন। যাতে এমনটা আর কোনওদিন না হয়।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরন্তন চট্টোপাধ্যায় জানান, তিনি ইতিমধ্যে ওই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আর দু’দিন পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে আসবেন। তাঁর আগে এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে পুলিশ-প্রশাসন। ইতিমধ্যেই কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন স্বরাষ্ট্র দফতরের সচিব এবং অতিরিক্ত মুখ্যসচিবকে মৌখিক ভাবে ওই ঘটনার রিপোর্ট দিয়েছেন।
টিএমসিপির জেলা সভাপতি সাবির সাহা চৌধুরী শুক্রবার দাবি করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তির ঘটনায় তাঁদের সংগঠন কোনওভাবেই জড়িত নন। কিন্তু কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ঘটনার জেরে গ্রেফতার হওয়ার পর এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কেউ যদি দোষ করে থাকে সংগঠন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’
পদত্যাগ চেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাতভর তপন হাতকে ঘেরাও করে রাখে একদল ছাত্র। শুক্রবার সকালে খবর সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা সেখানে গেলে তাঁদের উপড়ে চড়াও হয় কিছু ছাত্র। সাত জন সাংবাদিককে মারধর করা হয়। এ দিন ওই সাংবাদিকরাও হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দিয়ে ওই ঘটনার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে অবশ্য পুরো ঘটনা ঠিক নয় বলে দাবি করা হয়। এ দিন তাঁরাও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মিছিল করেন। সংসদের পক্ষ থেকে এক ছাত্র দাবি করেন, ‘‘ডিন ছাত্রবিরোধী কাজ করেন। তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সে কারণেই তাঁরা তাঁর পদত্যাগ দাবি করে ঘেরাও করে রেখেছিলেন। হেনস্থা করা হয়নি।’’
তবে উপাচার্য দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাহানুর আলমকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘ওই ছাত্র তপনবাবুকে নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখানে যা যা ঘটেছে তা নিয়ে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy