রক্তের দাগ। —নিজস্ব চিত্র।
এক দিন কাটতে না কাটতেই ফের খুনের ঘটনা ঘটল মালদহের ইংরেজবাজারে। শুক্রবার সকালে শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের রেল কলোনি এলাকায় একটি মন্দিরের পিছন থেকে উদ্ধার হল এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত দেহ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম প্রসন্ন দাস (৫৫)। তিনি ওই মন্দির দেখভাল করতেন। ওই ওয়ার্ডেরই সুকান্ত পল্লী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। প্রসন্নবাবুকে খুনের কারণ নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট কারও নামে কোন অভিযোগ এখনও মেলেনি। খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
খুনের ঘটনা জানাজানি হতেই পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। তাঁরা জানান, রেল কলোনি এলাকা মাদক কারবারীদের কাছে মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যের পর থেকেই চলছে রমরমা কারবার। পুলিশকে জানানোর পরেও কোনও কাজ হয়নি।
বুধবার রাতে ইংরেজবাজার থানার কোতুয়ালির তালতলা এলাকায় আম ব্যবসায়ী চন্দন সরকারকে কুপিয়ে খুনের ঘটনা ঘটে। দুষ্কৃতীরা চুরি করতে গিয়ে চন্দনবাবুকে খুন করে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এর মধ্যে ফের খুনের ঘটনা ঘটল একই থানার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের রেল কলোনি এলাকায়। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কংগ্রেসের নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, ‘‘ইংরেজবাজারে একের পর এক খুন হচ্ছে। পুলিশি টহলদারির অভাব রয়েছে।’’ রাতে পুলিশের টহলদারি আরও বাড়ানোর দাবি তুলেছেন তিনি।
প্রসন্নবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী কল্পনাদেবী বছর দশেক আগেই মারা গিয়েছেন। তাঁর চার ছেলে। প্রত্যেকেই কাজ করেন। বছর খানেক ধরে দিনের অধিকাংশ সময় ওই মন্দিরেই থাকতেন তিনি। রাতেও মন্দিরের পেছনে একটি অস্থায়ী ঘরে ঘুমিয়ে থাকতেন। জানা গিয়েছে, বুধবার তিনি রামকেলি মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফিরে আসেন। তবে বাড়িতে না গিয়ে মন্দিরেই রাতে থেকে যান। এদিন সকালে কম্বল জড়ানো অবস্থায় তাঁর ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় মন্দিরের কলা বাগান থেকে।
তাঁর শোওয়ার ঘরের সমস্ত আসবাবপত্র ছড়ানো ছেটানো অবস্থায় ছিল। রক্ত ছড়িয়ে ছিল ঘরের সর্বত্র। পুলিশ রক্ত মাখা একটি কোদালও উদ্ধার করে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান এই কোদালের আঘাতেই খুন করা হয়ে থাকতে পারে তাঁকে। পরিচিত কেউ খুন করে থাকতে পারে বলেও অনুমান পুলিশের। এ দিন সকালে স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রসন্নবাবুর মৃতদেহটি দেখতে পান। মৃতের ছেলে উত্তম দাস বলেন, ‘‘বাবাকে বাড়িতে থাকতে বলা হলেও থাকতেন না। মন্দির দেখাশোনা করতেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy