তরাইয়ের শিমূলবাড়ি চা বাগানের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য অবশেষে রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হল কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার বাগানের মালিকপক্ষ কলকাতার নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে বাগানের ডিরেক্টর মহেন্দ্রকুমার বনশল জানান, জমি মাফিয়ারা বাগানের কিছু জমি কিছু আদিবাসী শ্রমিককে সামনে রেখে দখলের চেষ্টা করছে। কার্শিয়াঙের মোর্চার আহ্বায়ক ছিরিং দাহালের মদতে সব চলছে। বাগানের আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। পুলিশ-প্রশাসনকে নভেম্বর থেকে একাধিকবার তা জানালেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এর জন্য বাধ্য হয়ে ১ ফেব্রুয়ারি বাগানটিতে কাজ বন্ধের (সাসপেনশন অব ওয়র্ক) নোটিস ঝোলানো হয়েছে।
মহেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, ‘‘মোর্চা নেত্রী একাংশ আদিবাসীদের ভুল বুঝিয়ে বাগানের পরিবেশ নষ্ট করেছেন। জমি মাফিয়া, বাইরের লোকেরা বাগানে ঢুকছে। ওই জমি বাগানের জমি বলে ভূমি রাজস্ব দফতর একাধিক বার রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। আমরা সেখানে নতুন চারা গাছ লাগাতে লেগেই বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ গেলেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। মুখ্য সচিবকে সব জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।’’
যদিও দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘‘আমরা সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি। জমি বাগানের হলেও বর্তমান মালিকপক্ষ বাগানের দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকে ওই শ্রমিকেরা জমিটিতে চাষ করতেন।’’
কার্শিয়াং মহকুমায় ব্রিটিশ আমালের বাগানটি গত ২০০১ সালে বনশল গোষ্ঠী অধিগ্রহণ করে। এক সময় বাগানের জমির পরিমাণ ছিল ২ হাজার একর। পরে সেনাবাহিনীকে ৭০০ একর হস্তান্তর করা হয়েছে। বাগানের স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে শ্রমিক সংখ্যা ১৩০০ মতো। বাগানের মালিভিটা ডিভিশনের ১৮ একর জমিকে ঘিরেই সমস্যা শুরু হয়েছে। এলাকার ৩০০ শ্রমিক পরিবারের দাবি, গত ৪০ বছর ধরে জমি তাঁদের দখলে রয়েছে। শ্রমিকেরা চাষবাস করতেন। এলাকায় কোনওদিনই চা বাগান ছিল না। এখন মালিকপক্ষ জোর করে জমিটিতে চারা গাছ লাগানোর চেষ্টা করতেই গোলমাল শুরু হয়। গত ৭ দিন শ্রমিকেরা রিলে অনশন করেন। এ দিন মোর্চার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীরা শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিলও করেন।
মোর্চা নেত্রী ছিরিং দাহাল বলেন, ‘‘পাহাড়, সমতলের মানুষ জানেন আমি কী। আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য যদি আমাকে মাফিয়া বলা হয়, তাতে কোনও সমস্যা নেই।’’ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ দিনই কার্শিয়াং আদালত থেকে জমিটির উপর আগামী ১৫ মার্চ অবধি কোনও পক্ষই ঢুকতে পারবে না বলে নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy