কলকাতায় হয়ে গেল। এখানে হবে না তো! বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে এই প্রশ্নটাই সমানে খুঁচিয়েছে শিলিগুড়ির লোকজনকে। গত বছরে বারবার ভূমিকম্পে থরহরি উত্তরের এই শহর তাই আশঙ্কা আর নতুন আতঙ্কে দাবি তুলেছে, মহাবীরস্থানের উড়ালপুলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হোক।
এই উড়ালপুল নিয়ে আশঙ্কা অবশ্য আজ নতুন নয়। গত বছর ভূকম্পের পরে চাউর হয়ে গিয়েছিল, সেতুতে নাকি ফাটল দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল সেতুটি পরিদর্শনও করে আসেন। তবে কোনও সমস্যা তাঁদের নজরে পড়েনি।
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তরফে ওই উড়ালপুল নির্মাণ করা হয়েছিল। তাদের তরফেও জানানো হয়, নিয়মিত ওই উড়ালপুলটি তাঁরা দেখভাল করেন। এসজেডিএ’র সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার দীপেশ বণিক জানিয়েছেন, মহাবীরস্থান উড়ালপুল নিয়ে কোনও সমস্যা নজরে আসেনি।
আধিকারিকরা এ কথা জানালেও বাস্তবে কতটা নজরদারি রাখা হয় তা নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। এসজেডিএ’র একটি সূত্রেই জানা গিয়েছি, গত বছর ২৫ এপ্রিল ভূমিকম্পের পর উড়ালপুলের পরিস্থিতি একবার দেখা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তার পর আর কিছু হয়নি। সেতুটি নিয়মিত পরিদর্শনের কথা তাই মেনে নিতে পারছেন না অনেক শিলিগুড়িবাসীই। তাঁদের বক্তব্য, ও সব মুখের কথা। সত্যি যদি কলকাতার মতো এখানেও দুর্ঘটনা ঘটে, কে সামলাবে!
হাসমিচক থেকে শুরু ওই উড়ালপুলের একটি অংশ শিলিগুড়ির থানার সামনে দিয়ে গিয়েছে। অন্য অংশটি টিকিয়াপাড়ার দিকে নেমেছে। শিলিগুড়ি থানার সামনের অংশ এতটাই অপ্রশস্ত যে একমুখী যান চলাচল করে। এই অংশটি দ্বিতীয় পর্যায়ে তৈরি হয়েছিল। উড়ালপুলটি তৈরি হয় বাম জমানায়। এবং এর পিছনে মূলত ছিল এসজেডিএ। তখন এই সেতুর পরিকল্পনায় খামতি রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তৎকালীন বিরোধীরা। কেমন ত্রুটি? বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, উড়ালপুলের ওই অংশে নীচে থাকা রাস্তাটিতে যাতায়াতের কিছুটা সমস্যা তো ছিলই। তখন ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি মেনে থানার সামনে পুলটির যে অংশ রয়েছে, তা ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছিল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তা খতিয়েও দেখা হয়। নকশা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। তবে সেই কাজ পরবর্তীতে আর এগোয়নি।
বাসিন্দারা একই সঙ্গে চিন্তিত ভূমিকম্প নিয়েও। গত কয়েক বছর ধরেই এই শহরে বারবার ভূমিকম্প হয়েছে। শিলিগুড়ি ভূমিকম্পপ্রবণ শহরও বটে। তাই এখন কোনও সমস্যা না থাকলেও নিয়মিত এই উড়ালপুলের উপর নজর রাখা উচিত, মনে করেন অনেক বাসিন্দাই।
বিশেষ করে ভূমিকম্পের মতো ঘটনা ঘটলে তার পর যথাযথ ভাবে উড়ালপুলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা দরকার। প্রয়োজনে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাঁদের যুক্তি, উড়ালপুলের গা ঘেঁষে বহু দোকান রয়েছে। নীচের রাস্তাটিও দিনভর জমজমাট থাকে। শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা সেটি। তাই কোনও রকম দুর্ঘটনা ঘটলে বড় রকমের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
আধিকারিকরা অবশ্য অভয় দিয়েই জানান, সেতুটি এখনও ভালই রয়েছে। একে নিয়ে বড় কোনও সমস্যার আপাতত চিহ্ন নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy