Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পাহাড়ে ফের নিশানা পুলিশ

সুখিয়াপোখরি থানার পুলিশ কর্মীদের দাবি, রাত পৌনে দুটোর সময়ে হঠাৎই মোটরবাইকে চেপে আসে দুষ্কৃতীরা। তার পরই তীব্র শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৩:০৩
Share: Save:

সর্বদল বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে নবান্ন থেকে। এর আগে আরও এক বার বিস্ফোরণ হল পাহাড়ে। একই রাতে। এবং নিশানা করা হল থানা ও পুলিশ ফাঁড়িকে। এর ফলে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে পাহাড়ে। পাহাড় জুড়ে নাশকতার জন্য পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এগুলি ঘটানো হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে নবান্নকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিটি ঘটনার জন্য পৃথক ভাবে মামলা দায়ের করা হবে। বুধবার রাত পৌনে দু’টো নাগাদ দার্জিলিঙের সুখিয়াপোখরি থানার সামনে প্রথম বিস্ফোরণ হয় বলে পুলিশের দাবি। তার কিছু পরে লোধামা ফাঁড়ির সামনে তীব্র শব্দ শোনা যায়। ভোর রাতে মংপুতে সিঙ্কোনা গুদামে পেট্রোল বোমা ছুড়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সুখিয়াপোখরি থানা দেখতে যান উত্তরবঙ্গের আইজি (ট্র্যাফিক) জাভেদ শামিম। তিনি বলেন, ‘‘দার্জিলিং এবং কালিম্পঙের বিস্ফোরণের সঙ্গে কী সাদৃশ্য রয়েছে, তা দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওখানে গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে।’’

সুখিয়াপোখরি থানার পুলিশ কর্মীদের দাবি, রাত পৌনে দুটোর সময়ে হঠাৎই মোটরবাইকে চেপে আসে দুষ্কৃতীরা। তার পরই তীব্র শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। ওই দুষ্কৃতীরাই গ্রেনেড ছুড়েছে, দাবি পুলিশের। থানার সামনে পুলিশের তিনটে গাড়ি রাখা ছিল। সব ক’টিই ক্ষতিগ্রস্ত। কোনওটার সব কাচ ভেঙে গিয়েছে, কোনওটার দেওয়াল দুমড়ে গিয়েছে। থানার আশেপাশে প্রচুর লোহার টুকরো পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেনেডটি স্থানীয় ভাবে তৈরি। জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের থেকে এমন একাধিক গ্রেনেড উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। লোহার টুকরোকে স্‌প্লিন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। লোধমা ফাঁড়ির থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিস্ফোরণ হয়েছে। সেই বিস্ফোরণের তীব্রতা খুব একটা বেশি ছিল না বলেই মনে করা হচ্ছে।

কালিম্পঙের পরে হামলা চালাতে সুখিয়াপোখরি থানাকে বেছে নেওয়ার নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের। মোর্চার ডাকা বন্‌ধকে উপেক্ষা করে সপ্তাহখানেক ধরে সুখিয়াপোখরিতে দোকানবাজার খুলছিল। এলাকার কয়েকটি রেশন দোকানও খুলে গিয়েছিল। জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘সুখিয়াপোখরি এলাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ক্রমশই ফিরে আসছিল। তাই আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে। অপটিক্যাল ফাইবার কেটে দেওয়া হয়েছে যাতে দ্রুত বিস্ফোরণের খবর বিভিন্ন প্রান্তে না পৌঁছয়।’’

প্রশাসনের তরফে বিস্ফোরণের দায় নিয়ে মোর্চার দিকে ইঙ্গিত করা হলেও দলের সহ-সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ দাবি করেছেন, এর সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই, তাঁদের বদনাম করতেই এ সব চলছে। বিনয় বলেন, ‘‘পাহাড়কে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে আলোচনার প্রক্রিয়া চলছে। মোর্চা গণতান্ত্রিক পথে ছিল, আগামীতেও থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Darjeeling police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE