Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মুখোমুখি জেরা হবে লিপিকা-অনির্বাণের

রবিবার তাকে জলপাইগুড়িতে নিয়ে আসে পুলিশ৷ এ দিন তাকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ পাশাপাশি, সংশোধনাগারে লিপিকার মুখোমুখি বসিয়ে অনির্বাণকে জেরা করতে পুলিশ যে আবেদন করেছিল, তা-ও আদালত এ দিন মঞ্জুর করেছে৷

ধৃত: অনির্বাণ। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: অনির্বাণ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩৮
Share: Save:

পুলিশ যে তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে তা অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিল সে৷ আর তাই ফেসবুক থেকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিকের ছবি ডাউনলোড করে নিজের মোবাইলে রেখে দিয়েছিল উত্তম মোহান্ত খুনে অন্যতম অভিযুক্ত অনির্বাণ৷ যাতে করে সাদা পোশাকে পুলিশ তাঁকে ধরতে গেলে সহজেই তাঁদের চিনে ফেলে সেখান থেকে সে পালাতে পারে৷ তবে তা কাজে লাগেনি। শুক্রবার হাওড়ার গোলাবাড়ি থেকে গ্রেফতার হয় অনির্বাণ৷

রবিবার তাকে জলপাইগুড়িতে নিয়ে আসে পুলিশ৷ এ দিন তাকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ পাশাপাশি, সংশোধনাগারে লিপিকার মুখোমুখি বসিয়ে অনির্বাণকে জেরা করতে পুলিশ যে আবেদন করেছিল, তা-ও আদালত এ দিন মঞ্জুর করেছে৷

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনির্বাণের কাছ থেকে দু’টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ভুয়ো পরিচয়পত্র, কয়েকটি সিম কার্ড, শ্বেতার এটিএম কার্ড, লিপিকার একটি ব্ল্যাঙ্ক চেক, লিপিকাকে লেখা একটি চিঠি ও একটি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার উদ্ধার হয়েছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি মোবাইলের মধ্যে একটি শ্বেতার। অন্যটি উত্তমবাবুর মৃত্যুর দু’দিন পর অনির্বাণ নিজেই কিনেছিল৷ তার সেই মোবাইলের মধ্যেই মিলেছে কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার সহ পুলিশ কর্তাদের ছবি৷ সেই সঙ্গে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা বিভিন্ন সংবাদপত্রে বের হওয়া উত্তমবাবুর মৃত্যু সংক্রান্ত খবরের স্ক্রিন শট৷ ঘটনা কোন দিকে এগোচ্ছে, তা জানতেই ইন্টারনেটে খবর দেখে নিজেকে আপডেট রাখতো অনির্বাণ৷

পুলিশ সূত্রের খবর, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারটি শ্বেতার নামে কেনা৷ তাতে লেখা রয়েছে, উত্তমবাবু লিপিকার সঙ্গে অনির্বাণের সম্পর্ক মেনে নিচ্ছেন এবং অনির্বাণ তাদের বাড়িতে থাকলেও উত্তমবাবুর কোনও আপত্তি নেই৷ বিনিময়ে বাড়ির বিভিন্ন কাজ ও উত্তমবাবুর এলআইসি সংক্রান্ত কাজ অনির্বাণকে করতে হবে৷ এবং তার খাওয়ার খরচ তাঁকেই বহন করতে হবে৷ স্ট্যাম্প পেপারের নীচে উত্তম মোহান্ত ছাড়াও লিপিকা, শ্বেতা ও অনির্বাণের সই রয়েছে৷ যদিও পুলিশের ধারণা, জোর করে ওই স্ট্যাম্প পেপারটিতে উত্তমবাবুকে দিয়ে সই করানো হয়েছে৷

পুলিশের দাবি, উত্তমের মধ্যে যে অপরাধী মানসিকতা কাজ করছিল, তা বিভিন্ন ঘটনা থেকে স্পষ্ট৷ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘খুনের সঙ্গে যে সে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত, তা নিজে মুখেই স্বীকার করেছে অনির্বাণ৷’’ উত্তমবাবুর সঞ্চিত অর্থের প্রতি তার লোভ ছিল বলেই এই খুন বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে৷ পাশাপাশি অনির্বাণ যে একটা প্রতারক তাতেও কোন সন্দেহ নেই৷ সে জন্যই তার থেকে রেল সহ একাধিক সরকারি সংস্থার ভুয়ো পরিচয়পত্র মিলেছে৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE