Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অভদ্র কর্মীরা, উধাও প্রসূতি

দেড় মাস আগে ধূপগুড়ির থানা রোডে ওই মহিলাকে বসে কাঁদতে দেখে ধূপগুড়ি হাসপাতাল খবর দেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। হাসপাতালের বিএমওএইচ নিজে গাড়ি পাঠিয়ে ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ০২:৪১
Share: Save:

দু’একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মির অভব্য আচরণে অতিষ্ঠ হয়েই পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করলেন ধূপগুড়ি হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যাওয়া নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। নিখোঁজ হওয়ার সাত দিন পর বুধবার রাতে বারঘরিয়ার পূর্ব ডাঙাপাড়ার এক বাড়ি থেকে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে পুলিশ। স্বস্তি ফেরে হাসপাতালে। গত ২৩ তারিখ, শুক্রবার হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন ওই মহিলা।

বৃহস্পতিবার হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে ওই মহিলা বলেন, “এখানকার দু’একজন আমাকে পাগল বলে ব্যঙ্গ করত। ভর্তি থাকা দু’এক মহিলাও আমাকে পাগল বলত। তাই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভেবেছিলাম। পূর্ব ডাঙাপাড়ার এক মহিলা আমার পাশে ভর্তি ছিলেন। তিনি খুব ভাল। নাম মনে নেই। তাই ভাবলাম, ওই মহিলার বাড়ি গেলে আমাকে থাকতে দিতে পারেন।’’ তিনি জানান, হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে একটি টোটো করে বারঘরিয়া যান। কিন্তু ওই মহিলাকে খুঁজে না পেয়ে এক বাড়িতে ঢুকে জল খেতে চান। তাঁর অসহায়তার কথা শুনে তাঁরা থাকতে দেন। খাবার ও কাপড়ও কিনে দেন। হাসপাতালের বিএমওএইচ সব্যসাচী মণ্ডল বলেন, “আর যেন তিনি চলে না যান তার সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কর্মীদের অভব্য ব্যবহারের কথা ঠিক নয়।”

দেড় মাস আগে ধূপগুড়ির থানা রোডে ওই মহিলাকে বসে কাঁদতে দেখে ধূপগুড়ি হাসপাতাল খবর দেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। হাসপাতালের বিএমওএইচ নিজে গাড়ি পাঠিয়ে ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করান। এর আগে ওই মহিলা নাগরাকাটার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেও পালিয়ে হয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

জানা গিয়েছে অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলার বাড়ি অসমের বাসুগাঁওয়ে। সেখানকার একটি দোকানের কর্মচারি আদতে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের এক বাসিন্দার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের একটি পুত্র সন্তানও আছে। মাস ছয়েক আগে স্বামীর সঙ্গে কানপুরে শ্বশুরবাড়ি বাড়ি যাওয়ার সময় ধূপগুড়ির আলতাগ্রাম স্টেশনে কোনও কারণে ট্রেন দাঁড়ালে তাঁকে নামিয়ে তাঁর স্বামী চলে যায়। ডুয়ার্সের দুরামারির বাসিন্দা এক মহিলা তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আশ্রয় দেন। তখন ওই মহিলা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। ওই বাড়িতে পাঁচ মাস থাকার পর তার গর্ভের সন্তান দিতে হবে বলে আশ্রয়দাতা দাবি করায় তিনি সেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে বানারহাট থানার পুলিশের সাহায্যে নাগরাকাটা হাসপাতালে স্থান পায় ওই মহিলা। কয়েকদিন থাকার পর ওই হাসপাতাল থেকেও তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE