Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন

দিনহাটার ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ছড়াল শাসক-বিরোধী সব শিবিরেই। সকাল থেকে কয়েক দফায় গোলমাল হলেও তা ঠেকাতে পুলিশ ঝাঁপাল না কেন সেই প্রশ্নে বিরোধীরা বটেই, খোদ তৃণমূল নেতাদের অনেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন। সবারই ক্ষোভ, পুলিশ এত নিষ্ক্রিয় না হলে এমন ঘটনা ঘটত না।

বিবাদ: (বাঁ দিকে) জ্বলছে বিজেপির পার্টি অফিস। (ডান দিকে) ভাঙচুর তৃণমূলের দফতরে। নিজস্ব চিত্র

বিবাদ: (বাঁ দিকে) জ্বলছে বিজেপির পার্টি অফিস। (ডান দিকে) ভাঙচুর তৃণমূলের দফতরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৪:৫৬
Share: Save:

দিনহাটার ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ছড়াল শাসক-বিরোধী সব শিবিরেই। সকাল থেকে কয়েক দফায় গোলমাল হলেও তা ঠেকাতে পুলিশ ঝাঁপাল না কেন সেই প্রশ্নে বিরোধীরা বটেই, খোদ তৃণমূল নেতাদের অনেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন। সবারই ক্ষোভ, পুলিশ এত নিষ্ক্রিয় না হলে এমন ঘটনা ঘটত না।

দু’তরফের অভিযোগ, কোথাও পুলিশের সামনে বিজেপির পতাকা লাগানো সাইকেল আছাড় মারা হচ্ছে। তা দেখেও পুলিশ হামলাকারীকে গ্রেফতার না করে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আবার কোথাও বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে লাঠি হাতে শয়ে-শয়ে মানুষ হেঁটে মিছিল করেছেন। কখনও বিজেপি নেত্রীর কনভয়ের পিছনে বাইক নিয়ে ছুটেছেন তাঁরা। কখনও মিছিলের লোকজন গিয়ে পার্টি অফিস ভেঙে দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও বাধা দেয়নি পুলিশ।

তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি নেত্রী প্রশাসনিক কোনও অনুমতি ছাড়াই মিছিল নিয়ে চারদিকে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। একের পর এক গণ্ডগোল ঘটে যাওয়ার পরও পুলিশ তাঁদের কোথাও আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেনি। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “পুলিশ একদিন আগে থেকে আমাদের ফোন করে কোথাও যাতে তৃণমূলের লোক না থাকে সেই আর্জি জানায়। আমরা সে কথা মেনে কোথাও কাউকে থাকতে মানা করেছি। এই সুযোগে বিজেপি নেত্রী লোক নিয়ে গিয়ে হামলা চালিয়েছে। পুলিশ কোথাও বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেনি।’’ পুলিশ সব জায়গায় সক্রিয় তাকলে পার্টি অফিস ভাঙার সাহস পেত না বিজেপি।

দিনহাটায় সারাদিন


সকাল ১০ টা: দিনহাটার
পথে লকেট চট্টোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদার।


সকাল ১১ টা: লকেটকে কালো পতাকা তৃণমূল কর্মীদের।


বেলা ১২টা: ভেটাগুড়ির বালাডাঙায় বিজেপি কর্মীর বাড়িতে নেত্রী।


সাড়ে ১২টা: ভেটাগুড়িতেই বিজেপি নেতা-কর্মীদের
গাড়ি-বাইক ভাঙচুর। তৃণমূল অফিসে পাল্টা হামলা।


পৌনে ১টা: ভেটাগুড়ির রাস্তা অবরোধে লকেট। তৃণমূল
পার্টি অফিসে উদয়ন গুহ।


২টো: পুলিশের সামনেই নাজিরহাটে তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর।


২টো ১৫: দিনহাটায় বিজেপি পার্টি অফিসে অগ্নিসংযোগ। রাস্তায় উদয়ন গুহ।


২টো ৩০ মিনিট: পুলিশ কর্তার ফোন জয়প্রকাশ মজুমদারকে। ফিরে যাওয়ার আর্জি।


২টো ৪০ মিনিট: বিজেপির বেশ কয়েকটি দফতরে হামলা। বাইক নিয়ে বেপাত্তা বিজেপি কর্মীরা।


৩টে: দেওয়ানহাটের ভিতরের রাস্তা ধরে লকেট ও জয়প্রকাশ কোচবিহারে।

বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেত্রীর সফরের জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তা ছিল না। নানা জায়গায় তৃণমূল কর্মীরা নেত্রীর কনভয় আটকে হামলা করেছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিল রঞ্জন দে বলেন, “পুলিশ সক্রিয় থাকলে কোথাও তৃণমূল হামলা করতে পারত না। তা হলে আমাদের লোকেরাও উত্তেজিত হত না।” ফরওয়ার্ড ব্লকের সন্দেহ, তৃণমূলে তরফে কেউ পুলিশকে নিষ্ক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অক্ষয় ঠাকুর বলেন, “পুলিশ সক্রিয় থাকলে তৃণমূল-বিজেপির নেতারা সারাদিন ধরে প্রচারে থাকতে পারতে না।’’

জেলা পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, দার্জিলিংয়ে নির্বাচনের জন্য পুলিশের একটি বড় অংশ সেখানে গিয়েছে। তার পরে যে বাহিনী ছিল তা দুই জায়গাতেই পাঠানো হয়। পুলিশ তাঁর সাধ্যমত চেষ্টা করেছে। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “পুলিশ প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে। অনুমতি ছাড়া মিছিল এবং পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় আইন মেনে মামলা দায়ের করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Clash TMC BJP Municipality Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE