ভাঙা-হাট: রাজু মাহালির ঘর ছন্নছাড়া। নিজস্ব চিত্র
কলমি ফুলের গাছ পায়ে পিষে ভিড় চলে গিয়েছে। প্লাস্টিকের চেয়ার কয়েক টুকরো হয়ে মাটিতে পড়ে। রান্নাঘরের বেড়া এক দিকে হেলে রয়েছে। যে কোনও সময় মাটিতে নুয়ে পড়তে পারে।
নকশালবাড়ির রং মিস্ত্রি রাজু মাহালি নিজের বাড়ির এই হাল দেখে ততটাই মুষড়ে পড়েছেন, যতটা আনন্দে ভেসেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ তাঁর বাড়িতেই দুপুরে খেতে আসার পরে। অমিত শাহ এলে তাঁর সঙ্গে লোকজন তো আসবেই। কিন্তু সেই ভিড় সামলানোর কোনও ব্যবস্থা কেন করা হল না, সেটাই ক্ষোভের কারণ। দুপুরে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে তাঁর বাড়িতে যা হয়েছে তাতে ক্ষুব্ধ রাজুর বোন সরস্বতী। ভিড় সরে গেলে সরস্বতীর মন্তব্য, ‘‘কলমি গাছটাকে শেষ করে দিয়ে গেল। ভিড় সামলানোর ব্যবস্থা কেউ করতে পারল না!’’
অমিত শাহ যখন দাওয়ায় বসে খাচ্ছেন, সে সময় উঠোনে বিজেপি কর্মী থেকে আশপাশের উৎসাহী মিলিয়ে শতাধিক মানুষের জমায়েত। সকলেই দাওয়ার কাছে যেতে ঠেলাঠেলি শুরু করেন। কেউ দরমার বেড়ার উপরেই উঠে পড়তে চেয়েছেন, কেউ বা উঠোনে রাখা প্লাস্টিকের টেবিল চেয়ারে উঠে দাঁড়িয়েছেন। তাতে টেবিল চেয়ার ভেঙেও যায়। ভিড়ের ঠেলায় পাশের বাড়ির বেড়াও ভেঙে যায়। বিজেপিকর্মীদের দাবি, অমিত শাহর কাছে যাওয়ার যেতে মানুষের আবেগের কারণেই একটু সমস্যা হয়েছে বলে দাবি দলের নেতাদের। যদিও বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এ দিন অব্যবস্থা ছিল চূড়ান্ত। তাঁদের দাবি, আগে থেকে ব্যারিকেড রাখলে রাজুবাবুর উঠোন তছনছ হতো না।
দুপুর সওয়া দু’টো নাগাদ অমিত শাহ যখন ঘিঞ্জি গলিতে ছোট মঞ্চে উঠলেন, চারপাশে থিকথিকে ভিড়। সকলেই মঞ্চের সামনে পৌঁছতে চাইছেন। এক সময়ে ভিড়ের ঠেলায় মঞ্চ দুলতে থাকে। প্রমাদ গোনেন বিজেপি নেতারাই। অমিত শাহকেই হাত দেখিয়ে ভিড় শান্ত করার চেষ্টা করতে হয়। এরপর বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করার সময়েও বিপত্তি বাঁধে। অমিত শাহের সঙ্গে বিজেপি নেতাকর্মীদের ভিড়ও সব ঘুরে ঢপে পড়ে। মহম্মদ সাবিরুদ্দিনের বাড়িতে তো ফলের থালাই মাটিতে পড়ে যায় ভিড়ের ঠেলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy