নৃত্যরতা: নাচের তালেই বিকল্প আয় রাভা মহিলাদের। —নিজস্ব চিত্র।
হাতে মাছ ধরার ‘ঝাকোই’ বাঁশের ঝুড়ি, গানের তালে নেচে চলছেন রাভা মহিলারা। কুরমাই বনবস্তিতে সূর্য ডুবলেই রাভাদের নাচে গানে মেতে উঠছেন পর্যটকেরা। জঙ্গল থেকে কাঠ আনা ছাড়াও এই বিকল্প উপায়েও এই উপজাতির মহিলারা নিজেদের স্বনির্ভর করার চেষ্টা শুরু করেছেন। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বনদফতরের সহযোগিতায় চিলাপাতায় পাঁচটি রাভা মহিলা গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করছেন। এক সময় সকাল হলে বন্যজন্তুর ভয় উপক্ষা করে জঙ্গল থেকে জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করতে যেতেন রাভা মহিলারা।
শুক্লা রাভা, প্রেমিকা রাভা, জ্যোৎস্না রাভারা জানান, এত দিন নিজেদের প্রয়োজনে অনুষ্ঠান করতেন তাঁরা। কিন্তু বনদফতর থেকে প্রস্তাব আসার পরে প্রতিদিনই পর্যটকদের জন্য অনুষ্ঠান করছে ওঁরা। প্রথম প্রথম হলেও আয় মন্দ হচ্ছে না। কুরমাই বনবস্তির তিনটি মহিলা দল রয়েছে এবং আন্দু বস্তির দু’টি। গ্রামের অধিকাংশ পরিবার থেকে একজন করে মহিলা রয়েছেন দলগুলোয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা জানান, আগে সকাল হলেই ঘরের রান্না করে, কোমোড়ে ভোজালি গুঁজে জঙ্গলে ছুটতেন জ্বালানী কাঠ সংগ্রহে। বিকেলে গাছের শুকনো ডালপালা সংগ্রহ করে ফিরে আসতেন। মাঝে মধ্যেই হাতি, গন্ডার ও বাইসনের মতো জন্তুর সামনে পড়তে হয়েছে। শুক্লা রাভা জানান, এখন মূলত আলু তোলার গান, জঙ্গলে ঝাকোই, খোলাই নিয়ে মাঝ ধরতে যাওয়ার গান, যুদ্ধের গান ও নাচ পর্যটকদের সামনে তুলে ধরেন তাঁরা। কারসাফারির মালিক বিমল রাভা জানান, পর্যটকেরা যখন কার সাফারির টিকিট কাটেন, সেই সময় মাথা পিছু পঁচিশ টাকা করে কেটে নেওয়া হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য।
সেই টাকা কিছু দিন পর পর পেয়ে যান গোষ্ঠীর মহিলারা। বন্যপ্রাণ তিন বিভাগের ডিএফও ভাস্কর জেভি জানান, চিলাপাতায় পর্যটকদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে উপকৃত হচ্ছেন গ্রামের মহিলারাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy