Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল

রোগীর আত্মীয়কে মার, অভিযুক্ত কর্মী

দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় রোগীর এক আত্মীয়কে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনা। অভিযোগ, মেডিক্যাল কলেজের সিল ও স্বাক্ষর করে দেওয়ার নাম করে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে তিনশো টাকা দাবি করে হাসপাতালের দুই কর্মী। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে তারা হাসপাতালের মধ্যেই মারধর করে বলে অভিযোগ।

হাসপাতালে নিগৃহীত মতিয়ার রহমান। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

হাসপাতালে নিগৃহীত মতিয়ার রহমান। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৫ ০১:৩২
Share: Save:

দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় রোগীর এক আত্মীয়কে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনা। অভিযোগ, মেডিক্যাল কলেজের সিল ও স্বাক্ষর করে দেওয়ার নাম করে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে তিনশো টাকা দাবি করে হাসপাতালের দুই কর্মী। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে তারা হাসপাতালের মধ্যেই মারধর করে বলে অভিযোগ। অন্যান্য রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন। একই সঙ্গে তাঁরা হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছেন।

ঘটনার পরে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা। এই বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজের সহকারি অধ্যক্ষ তথা সুপার মহম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, ‘‘এমন ঘটনা কখনও কাম্য নয়। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রোগীর আত্মীয়দের কাছে টাকা আদায়ের অভিযোগও আমরা খতিয়ে দেখছি।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩ এপ্রিল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মিলনগ়ড় গ্রামপঞ্চায়েতের সোনাকুল গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান তাঁর স্ত্রী রূপসানা বিবিকে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই রাতেই অস্ত্রোপচার করে একটি কন্যা সন্তান জন্মায় তাঁর। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের ছুটি দিয়ে দেয়। মতিউরের পরিবার বিপিএল তালিকাভুক্ত হওয়ায় নিশ্চয় যানের সুবিধা পান। মতিউরের দাবি, নিশ্চয় যানে করে রোগীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে দেওয়া স্লিপে মেডিক্যাল কলেজের সিল ও স্বাক্ষর লাগে। সে ব্যাপারে প্রসূতি বিভাগের ওই দুই কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তারা তাঁর কাছে ৩০০ টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার প্রসূতি বিভাগের সামনে তাঁকে ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অন্যান্য রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা ছুটে গেলে অভিযুক্ত দুই কর্মী গা ঢাকা দেন বলে দাবি অভিযোগকারীর। তার পর তাঁরাই তাঁকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর মতিউরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মতিউর বলেন, ‘‘গাড়িতে করে স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা সরকারি উদ্যাগে গাড়ি পেয়েছি। এর জন্য প্রসূতি বিভাগে সিল ও সই চাইতে গেলে দু’জন কর্মী ৩০০ টাকা চান। বিনামূল্যে এই পরিষেবা পাওয়া যায় বলে আমি টাকা দিতে রাজি না হতেই দু’জন মিলে মারধর শুরু করে দেয়। সবাই এসে আমাকে উদ্ধার করে।’’

মেডিক্যাল কলেজের এক রোগীর আত্মীয় মাহাজনি বিবি বলেন, ‘‘টাকা চাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। সব সময়েই টাকা দাবি করছে বেশ কিছু কর্মী। দিতে অস্বীকার করলে গালিগালাজ করছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। কারণ, এ দিন ওই ব্যক্তি প্রতিবাদ করে মার খেয়েছে। প্রতি নিয়ত এমন ঘটনা ঘটেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE