Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তদন্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ দাদা

গত ২৯ জুন দুপুরে মৃত্যু হয় এলআইসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্তর৷ তাকে খুনের অভিযোগে পরদিনই গ্রেফতার করা হয় উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকাকে৷ ঘটনার পর থেকে পলাতক লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণ৷

উত্তম মোহান্ত। ফাইল চিত্র।

উত্তম মোহান্ত। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০২:১৬
Share: Save:

উত্তম মোহান্তকে খুনের অভিযোগের তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তার দাদারা৷ ঘটনার পর প্রায় দু’সপ্তাহ পার হতে চললেও অন্যতম অভিযুক্ত অনির্বাণকে ধরতে সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের৷ পাশাপাশি, গোটা ঘটনায় উত্তমবাবুর মেয়ের ভূমিকা নিয়ে কিছু বলতে চাইলেই পুলিশ তাদের ধমকে চুপ করিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তারা৷ এই পরিস্থিতিতে ঘটনাটি নিয়ে আদালতে গোপন জবানবন্দী দেওয়ার আর্জি জানিয়ে এ দিন পুলিশের কাছে আবেদন করেছেন উত্তমবাবুর এক দাদা৷

গত ২৯ জুন দুপুরে মৃত্যু হয় এলআইসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্তর৷ তাকে খুনের অভিযোগে পরদিনই গ্রেফতার করা হয় উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকাকে৷ ঘটনার পর থেকে পলাতক লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণ৷ উত্তমবাবুর দাদা স্বপন মোহান্ত এ দিন অভিযোগ করেন, ঘটনার তদন্ত যে গতিতে এগোনো উচিত তা হচ্ছে না৷ অন্যতম অভিযুক্ত অনির্বাণকে ধরতেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ৷ তাঁর আরও অভিযোগ, উত্তমবাবুর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় সব সময়ই দশ থেকে পনেরো লক্ষ টাকা থাকতো৷ কিন্তু তার মৃত্যুর পর সেই অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে৷ তারা ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে গত ১ থেকে ৩ জুলাইয়ের মধ্যে উত্তমবাবুর এটিএম কার্ড ব্যবহার করে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে৷ কে বা কারা তার ভাইয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে এ ভাবে টাকা তুলে নিচ্ছে সে ব্যাপারে পুলিশের কোন নজরই নেই বলে অভিযোগ তাদের৷

উত্তমবাবুর দাদারা গোটা ঘটনায় এ দিন তাদের ভাইঝির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন৷ স্বপনবাবুর অভিযোগ, মৃত্যুর আগে তার ভাইকে যখন বেধে রাখা হত তখন তা দেখেও ভাইয়ের মেয়ের চুপ করে থাকাটা যথেষ্ট সন্দেহের৷ কিন্তু উত্তমবাবুর স্ত্রীর আইনজীবী সন্দীপ দত্ত পাল্টা বলেন, ‘‘উত্তমবাবুর মেয়ে তার জ্যাঠাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন৷ সেজন্যই প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এ ভাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছেন তারা৷ সত্যিই যদি তার বিরুদ্ধে তাদের কোনও অভিযোগ থাকতো তাহলে ঘটনার পর কেন তা করলেন না?’’ উত্তমবাবুর দাদা মনোজ মোহান্ত যার উত্তরে বলেন, ‘‘আমরা গত ৫ জুলাই জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় গিয়ে ভাইয়ের মেয়ের ভূমিকা নিয়ে পুলিশকে বলেছিলাম৷ কিন্তু পুলিশ কর্তারা আমাদের ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেন৷’’

তারপরও প্রশ্ন উঠছে, এই ঘটনায় আরও কারও বিরুদ্ধে উত্তমবাবুর দাদাদের সন্দেহ বা অভিযোগ থাকে তাহলে তারা তা লিখিতভাবে এ দিন কেন পুলিশকে দিল না৷ যার উত্তরে স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আমরা আর পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করব না৷ এ বার যা বলার মুখ্যমন্ত্রী ও আদালতে বিচারককে বলবো৷ প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সিআইডি তদন্তেরও আবেদন করব৷’’ আদালতে গোপন জবানবন্দী দেওয়ার আর্জি জানিয়ে স্বপনবাবু এ দিনই কোতোয়ালি থানায় লিখিত আবেদন করেন৷ পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই আবেদনের ভিত্তিতে আমরা স্বপনবাবুর গোপন জবানবন্দীর ব্যবস্থা করবো৷ কিন্তু ওনারা পুলিশের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ করছেন তা ঠিক নয়৷’’ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতিও বলেন, ‘‘যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত চলছে৷ ঘটনায় দু’জন ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে৷ বাকিদেরও গ্রেফতার
করা হবে৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE