Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

অন্য হোম থেকেও সরছেন আবাসিকরা

শিশু বিক্রিতে অভিযুক্ত সংস্থার আরেকটি হোমে নজরদারি চালাতে মঙ্গলবার মাঝ রাতে পৌঁছেছিল প্রশাসনের দল। জলপাইগুড়ির ৭৩ মোড়ের ওই হোমে পৌঁছনোর পর থেকে একের পর এক অনিয়ম দেখে গভীর রাতেই শুরু হয় আবাসিকদের অন্য হোমে সরানোর কাজ।

শিলিগুড়ি হাসপাতাল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চন্দনা ও সোনালিকে। — নিজস্ব চিত্র

শিলিগুড়ি হাসপাতাল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চন্দনা ও সোনালিকে। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:২৩
Share: Save:

শিশু বিক্রিতে অভিযুক্ত সংস্থার আরেকটি হোমে নজরদারি চালাতে মঙ্গলবার মাঝ রাতে পৌঁছেছিল প্রশাসনের দল। জলপাইগুড়ির ৭৩ মোড়ের ওই হোমে পৌঁছনোর পর থেকে একের পর এক অনিয়ম দেখে গভীর রাতেই শুরু হয় আবাসিকদের অন্য হোমে সরানোর কাজ। জলপাইগুড়ি সদরের মহকুমা শাসক সীমা হালদারের নেতৃত্বে রাতে নজরদারির জন্য প্রশাসনের দল হোমে পৌঁছেছিল। মহকুমা হোমের রেজিস্টারে উল্লেখ থাকা পাঁচ মহিলার কোনও হদিশ পায়নি সরকারি দলটি। হোমে থাকা এক মহিলা এবং নাবালিকার নাম রেজিস্টারেও খুঁজে পায়নি প্রশাসন। হোমে ছিল দুই অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। যাঁদের প্রসবের সময় এগিয়ে এলেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়নি বলে দাবি। সব দেখে আবাসিকদের হোম থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। বিস্তারিত জানানো হয়েছে সিআইডিকেও। শিশু বিক্রির চক্রের সঙ্গে এই হোমের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে দলটি। এ দিন অবশ্য ধৃত চন্দনা চক্রবর্তী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন। এ দিনই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মামলা সাজানোর অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। যাঁর পাল্টা জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘শিশু বিক্রির চক্রে জড়িতদের সঙ্গে বিজেপি নেতা নেত্রীদের কী লেনদেন হয়েছে সেটা দিলীপবাবু আগে জানালে ভাল হয়।’’

নর্থ বেঙ্গল পিপল্‌স ডেভলপমেন্ট সেন্টারই ৭৩ মোড় লাগোয়া দেবনগরের আশ্রয় হোম পরিচালনা করে। হোমটি মূলত প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের রাখার জন্যই লাইসেন্স পেয়েছে। সেই হোমে কেন নাবালিকাদের রাখা হল, তার মধ্যে এক নাবালিকার নাম কেন রেজিস্টারে নেই সে প্রশ্নও উঠেছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পান হোমটিতে একুশ জন আবাসিক রয়েছেন৷ যার মধ্যে দু’জন গর্ভবতী সহ প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা সতেরো জন ও চার জন নাবালিকা৷ জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভগত বলেন, ‘‘আশ্রয় হোমে পাঁচ আবাসিককে সেখানে পাওয়া যায়নি৷ পাশাপাশি রেজিস্টারেও কিছু গড়মিল পাওয়া গিয়েছে৷ গোটা বিষয়টিই আমরা খতিয়ে দেখছি৷’’

আশ্রয় হোম থেকে মঙ্গলবার রাতেই গর্ভবতী দুই মহিলাকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ এদিন সেখান থেকে চার নাবালিকাকে অনুভব হোমে পাঠানো হয়৷ প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই বাকি আবাসিকদেরও সেখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এ দিকে সিআইডি তদন্তে জেনেছে ধৃত চন্দনা চক্রবর্তীর কোনও পাসপোর্ট ছিল না। সম্প্রতি তিনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। এ দিন শিলিগুড়ি হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয় তাঁকে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক চন্দনাদেবীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। গালের ক্ষতের জন্য শল্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ফাঁসানোর পেছনে পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আদালতের বিচারাধীন। আদালত বিচার করুক। আমি নিজেও আগেই হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের আচরণ নিয়ে মামলা করেছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Home Moving
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE