ডাকাতির পরে লন্ডভন্ড ঘর। নিজস্ব চিত্র।
কলেজ পড়ুয়ার মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে বাড়ির মহিলাদের বেঁধে রেখে লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে তাণ্ডব চালানোর পর ফ্রিজের ঠান্ডা জল খেয়ে চম্পট দেয় ডাকাত দলটি।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রয়াত ব্যবসায়ীর বাড়িতে এমন ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে মালদহের হবিবপুর থানার বুলবুলচন্ডীর পূর্বপাড়ায়। জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী মহলে। অভিযোগ, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় বুলবুলচন্ডীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে বেআইনি মদ ও জুয়ার ঠেক। বাড়ছে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য।
মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাসের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘বুলবুলচন্ডীর মতো শান্ত এলাকাতেও ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটল। বাড়িতে ঢুকে সোনা ও রুপোর সমস্ত অলঙ্কার নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। জেলার সমস্ত স্তরের ব্যবসায়ীরা এখন আতঙ্কিত। পুলিশ দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে না পারলে আমরা আন্দোলনে নামব।’’ মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
বছর আটেক আগে মৃত্যু হয় হবিবপুর থানার বুলবুলচন্ডী রেল স্টেশন সংলগ্ন পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বিজন সাহার। বাড়িতে তিন ছেলে-মেয়ে এবং বৃদ্ধা মা মীরা সাহাকে নিয়ে থাকতেন ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী অর্চনাদেবী। জানা গিয়েছে তাঁর এক অসুস্থ আত্মীয় দেখতে এ দিন জেলার বাইরে গিয়েছিলেন অর্চনা দেবী। অভিযোগ, এ দিন রাত ১টা নাগাদ বাড়ির পেছনে থাকা কাঠের দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে সাত জনের একদল দুষ্কৃতী। অর্চনাদেবীর কলেজ পড়ুয়া ছেলে শুভজিৎ এর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকায় তারা। তারপরে বাড়িতে থাকা তিন মহিলাকে একসঙ্গে বেঁধে রেখে তিনটি ঘরে তাণ্ডব চালায় দু্ষ্কৃতীরা। বাড়িতে থাকা সমস্ত সোনা ও রুপোর অলঙ্কার এবং নগদ হাজার দশেক টাকা নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা।
পরিবারের দাবি, প্রায় ২০ ভরি সোনা ও রুপোর অলঙ্কার ছিল। এমন কী, বাড়িতে থাকা একটি রুপোর গোপাল মূর্তি এবং পুজোর সরঞ্জামও নিয়ে গিয়েছে তারা। এছাড়া তিনটি নামি কোম্পানির মোবাইল ফোন, দু’টি এটিএম কার্ডও নিয়ে যায় তারা। রাত ১টা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত দুষ্কৃতীরা লুঠপাট চালায় বলে দাবি পরিবারের। এরপর খাবার ঘরের ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা জল খেয়ে ফের পেছনের দরজা দিয়েই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
মীরাদেবী বলেন, ‘‘আচমকা দেখি বন্দুক হাতে নিয়ে সাত জন ঘরের মধ্যে। আমার নাতির মাথায় বন্দুক ধরে রেখে আমাকে এবং দুই নাতনিকে একসঙ্গে করে হাত বেঁধে দেয়। তারপর সব নিয়ে পালিয়ে যায়।’’ শুক্রবার সকালে এই ডাকাতির ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করেন তারা। ঘটনার তদন্তে আসে হবিবপুর থানার পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দা তথা মালদহ জেলা পরিষদের সদস্য তৃণমূলের প্রভাস চৌধুরী বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই আতঙ্কের। পুলিশকে দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy