রাজ্য সরকার যাই নির্দেশ দিক না কেন, তাঁদের স্কুল নিজস্ব ‘নিয়ম’ মেনেই চলবে বলে জানিয়ে দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সরাসরি রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রচারও চালাবে তারা। রবিবার সঙ্ঘের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয়েছে, উত্তরবঙ্গে বিদ্যাভারতীর ১০৬টি স্কুল চলে। এত দিন যে ভাবে স্কুলগুলিতে রামায়ণ-মহাভারত-স্তোত্র পড়ানো হয়েছে তাই হবে।
সম্প্রতি রাজ্যের তরফে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে স্কুলগুলিকে জানানো হয়েছে কোনও রকম ‘ধর্মীয়’ শিক্ষা দেওয়া যাবে না। সঙ্ঘের দাবি, সংস্কৃত স্তোত্র অথবা রামায়ণ-মহাভারত কোনও ধর্মীয় পাঠ্য নয়, ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ। বিদ্যাভারতীর সব স্কুলই সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন করা রয়েছে। রাজ্যের তরফে আরও কোনও পদক্ষেপ হলে আইনি পথে মোকাবিলার রাস্তাও খোলা থাকছে বলে সঙ্ঘের দাবি।
কোয়ম্বত্তুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের তিন দিনের সর্বভারতীয় প্রতিনিধি সভা শেষ হয়েছে। সেই সভাতে বিদ্যাভারতী স্কুল নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশ প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। সঙ্ঘের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অভয়েই স্কুল নিয়ে সরাসরি রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে যেতে তারা প্রস্তুত হয়েছে বলে জানায় উত্তরবঙ্গের শাখা। বিদ্যাভারতীর অনুমোদিত বিবেকানন্দ বিদ্যা বিকাশ পরিষদ উত্তরের জেলাগুলির স্কুল পরিচালনা করে।
এ দিন সঙ্ঘের উত্তরবঙ্গের যুগ্ম সম্পাদক তরুণ পণ্ডিত বলেন, ‘‘সঙ্ঘ সরাসরি কোনও স্কুল না চালালেও আমাদের স্বয়ংসেবকরা পরিচালনায় যুক্ত রয়েছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেমন ভাবে এত দিন স্কুল চলেছে, তেমন ভাবেই চলবে। রাজ্যের ফরমানের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচার করা হবে।’’ উত্তরবঙ্গের সব স্কুল মিলিয়ে পড়ুয়াদের সংখ্যা আশি হাজারের বেশি বলে তাঁর দাবি। পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের মধ্যে অনেক মুসলিম সম্প্রয়াদের ব্যক্তিরাও রয়েছেন বলে দাবি।
কোয়ম্বত্তুরের সভায় কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সংখ্যালঘু তোষণের নানা অভিযোগে পুস্তিকা প্রকাশ করে জেলাওয়াড়ি প্রচার চালাতে বাছাই করা সদস্যদের নিয়ে দল গড়েছে সঙ্ঘ। সেই দল বাড়ি বাড়ি প্রচারও চালাবে। বিজেপি সরাসরি আগামী লোকসভা ভোটের লক্ষ্যে রাজ্য জুড়ে প্রচার শুরু করেছে। সঙ্ঘের উত্তরবঙ্গের প্রচারের দায়িত্বে থাকা সাধন পালের দাবি, ‘‘আমরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে রাজ্যের ফরমানের বিরুদ্ধে লড়ছি।’’
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার চালালে সঙ্ঘের মুখোশ খুলে যাবে বলে পাল্টা দাবি করছেন তৃণমূল নেতারা। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দেব বলেন, ‘‘সঙ্ঘ আসলে লুকিয়ে রাজনীতি করছে। পশ্চিমঙ্গে যতই ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে রাজনীতির চেষ্টা হবে ততই মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়াবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy