পড়ুয়াদের সংখ্যা ১৬৫০। কিন্তু ‘সহজ পাঠ’ মিলেছে ৩০৮টি। কাকে বাদ দিয়ে কার হাতে বই দেবেন, তা ভেবে পাননি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ফলে ‘সহজ পাঠ’ বাদ দিয়েই পড়াশোনা চলছে স্কুলে।
কোচবিহারের দিনহাটা শহর মণ্ডলের ওই চিত্রে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে প্রত্যেকের মধ্যে। ওই মণ্ডলে রয়েছে ৭০টি স্কুল। অভিযোগ, শুধু দিনহাটা নয়, সিতাই, শীতলখুচির মতো প্রত্যন্ত এলাকার অনেক স্কুলেই শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার ছ’মাস পরেও প্রাথমিকের ছাত্রছাত্রীদের হাতে ‘সহজ পাঠ’ পৌঁছয়নি। অভিভাবকদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, শিশু শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি বই ছাড়া কী ভাবে স্কুল চালানো হচ্ছে। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।
প্রাথমিকের কোচবিহার জেলা স্কুল পরিদর্শক নৃপেন সিংহের দাবি, তিনি বিষয়টি জানেন না। তিনি বলেন, “আমি নতুন কোচবিহারে কাজে যোগ দিয়েছি। তাতে এমন রিপোর্ট পাইনি। হাতে যা বই ছিল সব নিবিড় মন্ডলগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ কী কারণে এমন হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
দিনহাটা শহর নিবিড় মণ্ডলের স্কুল পরিদর্শক দেবরাজ মণ্ডল অবশ্য ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ছ’মাস ধরে ‘সহজ পাঠ’ বই তাঁরা পাননি। বহু বার আবেদন করার পর গত সপ্তাহে মাত্র ৩০৮টি বই হাতে পাওয়া গিয়েছে। তিনি বলেন, “দেড় হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী রয়েছে। সেই তুলনায় বই প্রায় নেই বললেই চলে। তাই এখনও দেওয়া শুরু করতে পারিনি।”
প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে স্কুলগুলোয় শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। সাধারণ ভাবে ডিসেম্বরেই স্কুলগুলোর হাতে ওই বই পৌঁছে যায়। নতুন ক্লাসে ভর্তি হলেই পড়ুয়াদের হাতে ওই বই তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে তা হয়নি। জুলাই মাসেও বহু স্কুলে ওই বই পৌঁছয়নি। অভিভাবকরা বার বার দাবি জানালেও কাজ হয়নি। এই বিষয়ে তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষা সেলের পক্ষ থেকে জেলা স্কুল পরিদর্শককে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছিল। তাতেও হাল ফেরেনি। এক শিক্ষক বলেন, “কোথাও কোথাও পুরনো বই থেকেই কোনও ভাবে পড়ানো হচ্ছে।’’
বই না পাওয়ার ঘটনায় জেলা স্কুল দফতরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষা সেলের কোচবিহার জেলা সভাপতি দেবাশিস কর। তিনি বলেন, “তাঁদের ব্যর্থতার জন্যেই এমন ঘটনা ঘটছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy