গ্রেফতার হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভারতীয় ছিটমহলের ৭ জন বাসিন্দাকে জামিন দিল আদালত। রবিবার দিনহাটা এসিজেএম আদালতে তোলা হয় তাঁদের। আদালত সূত্রের খবর, সেখানেই সব শুনে বিচারক ডিবি ভুটিয়া ৭ জনকে জামিন দেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিএসএফ নাজিরহাট সীমান্ত থেকে ১১ জনকে আটক করে। তাঁদের মধ্যে ৭ জন পূর্ণবয়স্ক। ৩ জন শিশু এবং ১ জন নাবালিকা। ওই বাসিন্দাদের জনগণনায় সামিল করতে ভারতীয় ছিটমহল ছোট গাড়োলঝরায় পাঠানোর জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটি। কমিটি জানিয়েছে, ২০১১ সালে ছিটমহলে যে জনগণনা হয়েছিল তাতে ওই ১১ জন বাসিন্দার নাম উল্লেখ আছে। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের এবারে কোনওরকম বাধা দেওয়া ঠিক হবে না। কোচবিহারের জেলাশাসক পি ঊল্গানাথন বলেন, “আমরা বিষয়টি জয়েন্ট বাউন্ডারি ওয়ার্কিং কমিটিকে জানাব।” কোচবিহারের জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “বিএসএফ অভিযোগ দায়ের করেছে। সেই হিসেবে মামলা করা হয়।”
ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটির পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আরও মানবিক হওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “বহু কষ্টের পর ছিটমহলের মানুষ স্বাধীনতা পেতে চলেছে। একজন বাসিন্দাও যাতে তাঁদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হন, তা নিয়ে আমরা লড়ে যাব। আমরা চাই বাসিন্দাদের যে কোনও উপায়ে ভারতীয় ছিটমহলে পাঠিয়ে জনগণনায় সামিল করার ব্যাপারে উদ্যোগী হোক প্রশাসন। আমরা সে ব্যাপারে লিখিত ভাবেও প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছি।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতরা বেশ কয়েক বছর ধরেই দিল্লিতে একটি কারখানায় কাজ করতেন। ছিটমহলে জনগণনা শুরু হয়েছে শুনে সেখান থেকে ফেরেন তাঁরা। শনিবার দুপুরে নাজিরহাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের ভূখন্ডে ঘেরা ছোট গাড়োলঝোরায় ফেরার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। সে সময় বিএসএফ তাঁদের আটক করে। পরে পুলিশের হাতে তুলে দিলে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ৬ জুলাই থেকে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ দল ছিটমহলগুলিতে গণনার কাজ শুরু করেছে। সে সময়ই ছিটমহলের বাইরে থাকা বাসিন্দাদের ছিটমহলে হাজির থাকার জন্যে আর্জি জানানো হয়। ছিটমহল বিনিময় কমিটির পক্ষ থেকেও প্রশাসনের ওই বার্তা প্রচার করা হয়। আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত গণনা চলবে। তাঁর মধ্যেই ওই বাসিন্দাদের হাজির থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। দুই দেশের যৌথ প্রতিনিধি দল গত সপ্তাহে ভারত-বাংলাদেশের একাধিক ছিটমহল ঘুরে দেখেন। সে সময়ই ওই তথ্য ওঠে এসে। বাংলাদেশের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মহম্মদ রহমাতুল মনিম জানান, ছিটমহলের বেশ কিছু বাসিন্দা ভিন রাজ্য অথবা ভিন জেলায় কাজের জন্যে রয়েছেন। ওই তথ্য নথিবদ্ধ করার জন্য গণনাকর্মীদের নির্দেশ দেন তারা। বিনিময় কমিটির নেতারাও বলেন, “অনেকেই ভিনরাজ্যে কাজের জন্যে থাকেন। ব্যাপারটি মানবিকতার সঙ্গে দেখতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy