নজরদারি: দিনভর এনজেপি আইওসি টার্মিনালের সামনে ট্যাঙ্কারের সারি। সন্ধেয় সে সব সরিয়ে এলাকা ফাঁকা করে দিয়েছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
দিনভর ইন্ডিয়াল অয়েল কর্পোরেশনের (আইওসি) টার্মিনালের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে সারি সারি ট্যাঙ্কার। সন্ধ্যা নামতেই একাংশ ট্যাঙ্কার থেকে শুরু হয়ে যায় তেল চুরি কারবার। চালকদের টাকা দিয়ে ট্যাঙ্কার থেতে তেল বার করার প্রক্রিয়া। কয়েক দশক ধরে এনজেপি এই বেআইনি তেলের ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ। মাঝেমধ্যে পুলিশ অভিযান, ধরপাকড় চললে থামে ব্যবসা। ফের ধীরে ধীরে শুরু হয়ে যায় তেলের কারবার। গত ১৫ জুলাই বিধ্বসী অগ্নিকান্ডের পর নড়চড়ে বসে পুলিশ ও আইওসি কর্তৃপক্ষ।
এলাকা থেকে ট্যাঙ্কার সরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের বৈঠকও হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আবার নতুন করে ময়দানে নামল পুলিশ। আগুন লাগার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা ছাড়াও এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল সমস্ত ট্যাঙ্কার। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের নাম তপন ঘোষ ওরফে টাবু। টার্মিনাল লাগোয়া বস্তিতে তার বাড়ি। ঘটনার দিন রাত থেকে সে পালিয়ে ছিল। ভক্তিনগর থানার বাইপাস লাগোয়া লুকিয়ে ছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার দিন একটি ট্যাঙ্কার থেকে চুরির তেল টাবুর কাছেই পৌঁছানো হচ্ছিল বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পারে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘বেআইনি তেলের কারবার চলবে না। থানা থেকে বিভিন্ন স্তরে জানিয়ে দিয়েছি। আইওসিকে ডেকে বলা হয়েছে, প্রয়োজন ছাড়া তাদের টার্মিনালের বাইরে ট্যাঙ্কার বেশিক্ষণ যাতে না দাঁডায় তা দেখতে হবে। এদিন সন্ধ্যায় এলাকায় খালি করা হয়েছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, টার্মিনালের উল্টোদিকের বস্তি কার্যত ছোট ছোট পেট্রোল পাম্পের মত। একসময় মাটি নিচে কুয়ো খুঁড়ে তেল রাখা হত। পাম্প দিয়ে সেই তেল তোলা হত। উপর থেকে কিছুই বোঝার উপায় ছিল না। পরে তা অনেকটা বন্ধ হলেও ঘরের আনাচে কানাচে বড় বড় জ্যারিকেন, ড্রামে লুকিয়ে রাখা হয় চোরাই তেল। অনেক বাস থেকে অটো, ট্যাক্সি এই তেল ব্যবহার হয়। তেমনিই, হাত বদল হয়ে কম দামে তা চলে যায় বহু পাম্পেও। আগুনের ঘটনার পরেরদিনই কয়েক হাজার লিটার তেল বস্তি থেকে উদ্ধার হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের একাংশের সঙ্গে বোঝাপড়া করেও অনেক সময় ব্যবসা চলেছে। আগুনের ঘটনার পর বিভিন্ন মহল থেকে চাপ তৈরি হওয়ায় তা বন্ধ হয়েছে।
আইওসি কতৃর্পক্ষ পুলিশকে জানিয়েছেন, অনেক সময় লাইনের জন্য ট্যাঙ্কার বাইরে অপেক্ষা করানো হয়। সেখানে নজরদারি জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। তেমনিই, টার্মিনালের কিছুটা দূরে যাতে তালিকাভুক্ত ট্যাঙ্কার দাঁড় করানোর জায়গা থাকে তা পুলিশকে দেখতে বলা হয়েছে। পুলিশের দাবি, সন্ধ্যার পর লাইন দিয়ে বাইরে ট্রাক থাকলেই তেলের কারবার শুরু হচ্ছে। তাই বিকালের পর ট্যাঙ্কার না রাখার নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy