Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রাক্তন ছাত্রীর পাশে শিক্ষকরা

দু’বছর আগে মাধ্যমিকে ফেল করে আর পরীক্ষায় বসেননি। সেই ছাত্রীকে ছেঁড়া পোশাকে স্কুলের সামেন ঘোরাফেরা করতে দেখতে পান এক শিক্ষিকা। তিনি তাঁকে সটান নিয়ে যান প্রধান শিক্ষকের ঘরে।

উদ্যোগী: শ্রীদেবীর সঙ্গে স্কুল শিক্ষকেরা। নিজস্ব চিত্র

উদ্যোগী: শ্রীদেবীর সঙ্গে স্কুল শিক্ষকেরা। নিজস্ব চিত্র

জয়ন্ত সেন
মালদহ শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০৩
Share: Save:

দু’বছর আগে মাধ্যমিকে ফেল করে আর পরীক্ষায় বসেননি। সেই ছাত্রীকে ছেঁড়া পোশাকে স্কুলের সামেন ঘোরাফেরা করতে দেখতে পান এক শিক্ষিকা। তিনি তাঁকে সটান নিয়ে যান প্রধান শিক্ষকের ঘরে। পরানো হয় স্কুলেরই একটি নতুন পোশাক। শিক্ষকেরাই তার পরে সেই ছাত্রীকে ৬ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে পৌঁছে দেন।

কিন্তু বাড়িতে গিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলে চমকে ওঠেন শিক্ষকরা। তাঁরা জানতে পারেন, প্রায় দু’বছর ধরেই ওই ছাত্রী মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন। কিন্তু এই দুঃস্থ পরিবারের পক্ষে তাঁকে চিকিৎসক দেখানো সম্ভব হয়নি। বরং তাঁকে গুণিনের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মালদহের হবিবপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা আদিবাসী অধ্যুষিত দক্ষিণ পান্নাপুর গ্রামের শ্রীদেবী হাঁসদা নামে এই ছাত্রীর পরিবারের অবস্থা দেখে প্রধানশিক্ষক জয়দেব লাহিড়ি যোগাযোগ করেন হবিবপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে। দুপুরেই ব্লক থেকে চিকিৎসকরা যান ওই পরিবারে। তাঁরা দেখেছেন, ওই ছাত্রী মানসিক অবসাদে ভুগছেন। তাঁর রক্তাল্পতা রয়েছে। তাঁর দুই দাদার কুষ্ঠ হয়েছে। তাঁদের মা-ও অসুস্থ। কাছের বুলবুলচণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে শ্রীদেবীর দুই দাদার চিকিৎসা শুরু হবে আজ, শুক্রবার থেকে। ওই ছাত্রী ও তাঁর মা-কে প্রশাসন নিয়ে যাচ্ছে মালদহ মেডিক্যালে।

গ্রামে বয়স্কদের সাক্ষরতার হার কম থাকলেও অল্প বয়সী প্রায় সকলেই স্কুলে যায়। দু’টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। কিন্তু এই পরিবারটি খুবই দুঃস্থ। ছাত্রীর বাবা জোহান হাঁসদা কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। বাড়িতে রয়েছেন মা দিল্লু সোরেন, দুই দাদা সজন ও পুলিন হাঁসদা। গ্রামে বিদ্যুৎ এলেও তাঁদের ঘরে বিজলি নেই। প্রাক্তন ছাত্রীর প্রতি শিক্ষকদের এই স্নেহ দেখে খুশি প্রশাসনের কর্তারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mentally Disabled
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE