Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

টেটের ফর্ম বিলিতেও এ বার পুলিশই ভরসা

চোর ডাকাত সামলাতে ঘাম ছোটে। কয়েক বছর হল রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন, ফুটবল খেলা আয়োজনেও থাকতে হচ্ছে। আলুর কালোবাজারি হলে তা বিক্রির জন্যও দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ বার টেট পরীক্ষার ফর্মও বিলি হল থানা চত্বরে। এর পরে আর কী কী করতে হবে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ কর্মীদের একাংশ এখন তা নিয়েই আলোচনায় ব্যস্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৫ ০১:২৬
Share: Save:

চোর ডাকাত সামলাতে ঘাম ছোটে। কয়েক বছর হল রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন, ফুটবল খেলা আয়োজনেও থাকতে হচ্ছে। আলুর কালোবাজারি হলে তা বিক্রির জন্যও দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ বার টেট পরীক্ষার ফর্মও বিলি হল থানা চত্বরে। এর পরে আর কী কী করতে হবে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ কর্মীদের একাংশ এখন তা নিয়েই আলোচনায় ব্যস্ত।

সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে থানায় ফর্ম বিলি করার কথা লেখা ছিল না। বিধির তোয়াক্কা না করে তবু জলপাইগুড়ি থানায় বিলি হল টেট-এর আবেদনপত্র। যা দেখে কয়েক জন পরীক্ষার্থীর মন্তব্য, ‘‘এত দিন জানতাম অপরাধের ঘটনার নালিশ জানাতে থানায় আসতে হয়। এখন তো চাকরির পরীক্ষার ফর্মের জন্যও।” কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা এক সিভিক ভলান্টিয়ারের কটাক্ষ, “পুলিশ এখন কাঁঠালি কলা। সবেতে লাগে।” যদিও কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায় বলেন, “ফর্ম বিলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কর্মীরা করছেন। সেটা ওঁদের বিষয়।”

গত সোমবার শুরুতে এমনটা ছিল না। ওই দিন শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক থেকে টেটের ফর্ম বিলি হয়। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের ভিড় দেখে মাথায় হাত পড়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ কর্তাদের। দীর্ঘ লাইনে যানজটে থানা মোড় এলাকায় পথচারীদের কাহিল দশা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে অবশেষে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে ব্যাঙ্কের উল্টো দিকে কোতোয়ালি থানা চত্বরে শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য একটি কাউন্টার খোলা হয়। এর পর থেকে থানায় পা ফেলার জায়গা নেই।

জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক তৃপ্তি গুহ জানান, প্রথম দিন ভিড় বেড়ে যাওয়ায় বিশৃঙ্খলা এড়াতে মঙ্গলবার শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য সংসদ থেকে কোতোয়ালি থানা চত্বরে একটি কাউন্টার খোলা হয়েছে। এ জন্য সরকারি ভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল? স্কুল পরিদর্শক বলেন, “বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। সংসদ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে থানা চত্বরে কাউন্টার খোলা হয়। ফর্ম তুলতে গিয়ে মেয়েরা খবর পেয়েছেন।”

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ধরতিমোহন রায় জানান, ভিড়ের জন্য যানজটের সমস্যা দেখা দেয়। এর পরেই কোতোয়ালি থানা চত্বরে একটি কাউন্টার খোলার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সংসদের কর্মীরা সেখানে ফর্ম বিলি করছেন। তিনি বলেন, “ছেলেমেয়েদের সুবিধার জন্য শিক্ষা দফতরের অনুমতি নিয়ে আমরা এটা করেছি। এর সঙ্গে পুলিশের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা শুধুমাত্র থানা চত্বরকে ব্যবহার করছি মাত্র।”

যদিও লাইনে দাঁড়িয়ে মেয়েরা প্রশ্ন তুলেছেন থানায় কেন? কেন কলেজে কাউন্টার খোলা হল না? চাকরির জন্য থানার সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে অস্বস্তি হচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ওই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। যদিও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এক কর্মী বলেন, “থানা চত্বরে কাউন্টার তাই রক্ষা। না হলে ঝামেলায় পড়তে হতো।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্ক ও থানা চত্বরে শান্তিপূর্ণ ভাবে ফর্ম বিলি হয়েছে। শনিবার ব্যাঙ্ক থেকে ৭০০ ফর্ম বিলি হয়েছে। থানার কাউন্টার থেকে ৬৫০ ফর্ম বিলি হয়েছে এ দিন। জলপাইগুড়ির ডিএসপি প্রভাত চক্রবর্তী বলেন, “গোলমাল নেই।” থানা চত্বরে এক জন এআই এবং সংসদের তিন জন কর্মী ফর্ম বিলির কাজ করছেন। নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝা বলেন, “থানা চত্বরে এআই এবং সংসদের কর্মীরা ফর্ম বিলি করছেন। কাউন্টার খোলার দাবি রেখেছিলাম। অন্তত পক্ষে প্রতিটি এস আই অফিস থেকে ফর্ম বিলি করা হলে চাপ কমত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tet jalpaiguri police bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE