Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পিঙ্কির দেহ নিলেন পরিজনেরা

নিমাইবাবু ও মালতিদেবীর দাবি, পিঙ্কি গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা থাকলে তাঁরা রায়গঞ্জে এসে মেয়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে সাহস দিতেন ও জামিনের জন্য চেষ্টা করতেন। তাহলে পিঙ্কির মৃত্যু হত না।

শোকার্ত: পিঙ্কির পরিবার। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত: পিঙ্কির পরিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০১:৪১
Share: Save:

অবশেষে চার দিন পর স্বামী খুনে অভিযুক্ত বিচারাধীন বন্দি পিঙ্কি মজুমদারের (২৫) দেহ তাঁর বাপের বাড়ির লোকেদের হাতে তুলে দিল রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। পিঙ্কির দেড় বছরের মেয়ের দায়িত্ব নেননি তাঁরা।

বৃহস্পতিবার রাতে জলপাইগুড়ি জেলার কোতোয়ালি থানার ইন্দিরা কলোনি এলাকার বাসিন্দা পিঙ্কির বাবা নিমাই রায়, মা মালতি রায়, দিদি মৌসুমী হালদার, দুই মাসি মালা রায় ও সাবিত্রী অধিকারী অ্যাম্বুল্যান্সে চেপে পিঙ্কির মৃতদেহ নিতে রায়গঞ্জে আসেন। মৃতদেহ হস্তান্তরের নথি তৈরির কাজ শেষ করে এ দিন দুপুরে পুলিশ পিঙ্কির মৃতদেহটি তাঁদের হাতে তুলে দেন। এরপরেই জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। মেয়ে ও জামাইয়ের মৃত্যুর খবর তাদের না দেওয়ায় পিঙ্কির শ্বশুরবাড়ি ও পুলিশকে দায়ী করেছেন তাঁরা।

নিমাইবাবু ও মালতিদেবীর দাবি, পিঙ্কি গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা থাকলে তাঁরা রায়গঞ্জে এসে মেয়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে সাহস দিতেন ও জামিনের জন্য চেষ্টা করতেন। তাহলে পিঙ্কির মৃত্যু হত না। তাঁর মৃত্যুর খবর পুলিশও তাঁদের জানায়নি। জানানো হয়নি জামাইয়ের মৃত্যুর খবরও। প্রতিবেশীরা সংবাদপত্র পড়ে তাঁদের সমস্ত ঘটনার কথা জানান। নিমাইবাবুর কথায়, ‘‘আদালতের মাধ্যমে পিঙ্কির কন্যা সন্তানকে নিতে সময় লাগবে। তাই মেয়ের সত্কারের পর বিষয়টি চিন্তাভাবনা করব।’’

রায়গঞ্জ থানার আইসি অভিজিত সরকার অবশ্য দাবি করেছেন, পিঙ্কির অস্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ার পরেই কোতয়ালি থানার মাধ্যমে তাঁর বাপের বাড়ি ও ডালখোলা থানার মাধ্যমে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের খবর দেওয়া হয়েছিল।

গত মঙ্গলবার বিকালে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগার চত্বরে মহিলা বন্দিদের শৌচাগারের পিছনের দেওয়ালে থাকা একটি লোহার হুক থেকে গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় পিঙ্কির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় নজরদারির কাজে গাফিলতির অভিযোগে সংশোধানাগারের মহিলা ওয়ার্ডার আল্পনা দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু করেছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। এ দিন এ কথা জানান সংশোধনাগারের সুপারিনটেনডেন্ট সুপ্রকাশ রায়।

পারিবারিক বিবাদের জেরে ব্যবসায়ী স্বামী অপূর্ব মজুমদারকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে ১১ জুন শ্বশুরবাড়ি থেকে পিঙ্কিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই থেকে আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে ছিলেন তিনি। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পুলিশের দাবি, অবসাদের জেরে পিঙ্কি আত্মহত্যা করেন। পিঙ্কির দেড় বছরের মেয়েকে শিশু কল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। সমিতি শিশুটিকে রায়গঞ্জের বোগ্রামে প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত হোমে পাঠায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dead Body police পিঙ্কি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE