Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রাক্তন মেয়রকে প্রকাশ্যে অপমান, অভিযোগ তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে

প্রাক্তন মেয়রকে অপমান ও গালিগালাজের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে শহরের ঋষি অরবিন্দ রোডে শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র তথা কংগ্রেস নেত্রী গঙ্গোত্রী দত্তকে গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেই ঋষি অরবিন্দ রোড ১২ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ন্তগত। গঙ্গোত্রীদেবী ওই ওয়ার্ডেরই প্রাক্তন কাউন্সিলর। এ বারে গঙ্গোত্রী দেবী নিজে প্রার্থী হননি। তবে তিনি কাউন্সিলর থাকার সময়ে দলের হয়ে ওয়ার্ডের কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা বাসুদেব ঘোষকে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে।

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২৩
Share: Save:

প্রাক্তন মেয়রকে অপমান ও গালিগালাজের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে শহরের ঋষি অরবিন্দ রোডে শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র তথা কংগ্রেস নেত্রী গঙ্গোত্রী দত্তকে গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেই ঋষি অরবিন্দ রোড ১২ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ন্তগত। গঙ্গোত্রীদেবী ওই ওয়ার্ডেরই প্রাক্তন কাউন্সিলর। এ বারে গঙ্গোত্রী দেবী নিজে প্রার্থী হননি। তবে তিনি কাউন্সিলর থাকার সময়ে দলের হয়ে ওয়ার্ডের কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা বাসুদেব ঘোষকে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে।

সোমবার বিকেলে বাসুদেববাবুকে নিয়ে গাড়িতে চেপে প্রচারে বের হচ্ছিলেন প্রাক্তন মেয়র। গাড়িতে ওঠার পরেই, এক তৃণমূল কর্মী এ গিয়ে গিয়ে গঙ্গোত্রী দেবীকে ‘তুই’ সম্বোধন করে গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। অপমানজনক কথাও বলে ওই যুবক। অভিযুক্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠদের আর্জিতে ঘটনাটি নিয়ে প্রাক্তন মেয়র থানায় অভিযোগ জানাননি। তৃণমূল প্রার্থী নান্টু পাল অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি। অভিযুক্ত ব্যাক্তি সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত বলেও নান্টুবাবু দাবি করেছেন।

প্রাক্তন মেয়রকে গালিগালাজ করার অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী অন্য দলগুলিও। তাদের দাবি, ওয়ার্ডে রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা হয়েই প্ররোচনার পরিবেশ তৈরি করে অশান্তি তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল। অভিযোগ, গত সোমবার প্রাক্তন মেয়রকে হেনস্থা হতে দেখে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা প্রতিবাদ করেন। সে সময় ওই তৃণমূল কর্মী ‘ক্ষমতা থাকলে আমার গায়ে হাত দে’ জাতীয় মন্তব্য করতে থাকেন বলে অভিযোগ। বিরোধীদের অভিযোগ, এ ভাবেই গোলমাল পাকিয়ে এলাকায় অশান্তি তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল। অভিযুক্তকে একসময়ে গঙ্গোত্রীদেবী কাজ পাইয়ে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রীদেবীর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল নানা ভাবে প্ররোচনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের পুরোনো কর্মীদের ভুল বোঝাচ্ছে। বাসিন্দাদের সমর্থন ওদের সঙ্গে নেই জেনেই অশান্তির পরিবেশ তৈরি করেছে।’’

কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, প্রাক্তন মেয়রের ওয়ার্ড হওয়ায় দলের প্রার্থী প্রচারে বাড়তি সুবিধে পাচ্ছেন। সেই সঙ্গে গঙ্গোত্রীদেবী মেয়র থাকার সময়ে দলের তরফে তিনি জনসংযোগ এবং ওয়ার্ডের কাজ দেখাশোনা করতেন। সে কারণে এলাকায় তাঁর পরিচিতি রয়েছে। তাই কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্ক অটুট থাকবে বলেই দলের নেতাদের দাবি।

ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী হরিসাধন ঘোষ। প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র প্রবীণ হরিসাধনবাবু রাজ্যে পরিবর্তনের পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তার ফলে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও তাঁর প্রভাব রয়েছে বলে অনেকে দাবি করেন। সেই সঙ্গেও ওয়ার্ডেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে। বিজেপির ভোটের সঙ্গে সাধারণ বাসিন্দাদের একাংশ হরিসাধনবাবুর দিকে ঝুঁকে পড়তে পারেন বলেও তৃণমূলের একাংশের আশঙ্কা রয়েছে। সর্বোপরি নান্টুবাবু ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা না হওয়ায় ‘বহিরাগত’ অভিযোগেরও মোকাবিলা করতে হচ্ছে তৃণমূলকে। বিরোধীদের অনেকের অভিযোগ, সে কারণেই মরিয়া হয়ে তৃণমূলের একাংশ এলাকায় অশান্তি ছড়াতে চাইছে।

নান্টুবাবু অবশ্য পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘‘যখন ঘটনা ঘটেছে, তখন আমি সেখানে ছিলাম না। তবে যে ছেলেটির নামে অভিযোগ হয়েছে, সে সামাজিক নানা কাজে যুক্ত। সে তৃণমূল সমর্থক হওয়ায় কংগ্রেসের কর্মীরা কটাক্ষ করে তাকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করে। তার প্রেক্ষিতে যা ঘটার ঘটেছে।’’ এলাকায় তৃণমূলের পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া বা কর্মীদের গালিগালাজ করার পাল্টা অভিযোগ করেছেন তিনি।

এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিপিএম প্রার্থী লক্ষ্মী মাহাতো। তাঁর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল ইচ্ছে করেই নানা ভাবে প্ররোচনা দিতে চাইছে। আমি যেখানে হোর্ডিং, পোস্টার লাগাচ্ছি, সেগুলি ঢেকে তৃণমূল পোস্টার লাগাচ্ছে। সে কারণেই অভিযুক্তকে তৃণমূল প্রার্থী সমর্থন করেছেন।’’ অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী হরিসাধনবাবু বলেন, ‘‘এই এলাকায় এমন আগে কখনও হয়নি। ঘটনাটি শুনেছি। প্রাত্তন মেয়র এলাকার সুনাগরিক। এটা মেনে নেওয়া যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE