Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

দ্বন্দ্বে ভোট কম পড়ল কলেজে

শহরের তিন কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে শেষ হাসি হাসলেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়৷ তিনটির মধ্যে দু’টি কলেজেই জয়ী হলেন তাঁর অনুগামীরা৷

পুলিশ পিকেট।নিজস্ব চিত্র

পুলিশ পিকেট।নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৬
Share: Save:

শহরের তিন কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে শেষ হাসি হাসলেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়৷ তিনটির মধ্যে দু’টি কলেজেই জয়ী হলেন তাঁর অনুগামীরা৷ তবে অন্য পক্ষ তথা টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ সিংহের গোষ্ঠীর নেতাদের দাবি শহরের দু’টি কলেজে সৈকত অনুগামীরা জিতলেও, জেলার বেশিরভাগ কলেজ তাদের দখলে এসেছে৷

জলপাইগুড়ি শহরের তিনটি কলেজের ভোট ঘিরে গত কয়েক দিন ধরে সৈকতগোষ্ঠী ও অভিজিৎগোষ্ঠীর কোন্দল চরমে ওঠে৷ এই গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই কিছু দিন আগে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারাত্মক জখম হন যুব তৃণমূল কর্মী শুভঙ্কর মিশ্র৷ তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি৷

তবে গোলমাল এড়াতে নির্বাচন শুরুর অনেক আগে থেকেই সক্রিয় ছিল পুলিশ৷ শহরের এই তিন কলেজের নির্বাচনের জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় চারশো পুলিশ কর্মী আনা হয়৷ তিন কলেজেই মোতায়েন হয় বিভিন্ন থানার বাছাই করা পুলিশ অফিসাররা৷ জেলার পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি দিনভর রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিরাপত্তার তদারকি করেন৷ মোবাইল, রুমাল, মাফলার প্রভৃতি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজে প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়৷ ভোট দিতে যাওয়ার আগে কোনও কলেজে দু’বার তো কোথাও তিন বার ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করা হয়৷ কিন্তু এত কিছুর পরও অবশ্য সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের খুব বেশি ভোট দিতে যেতে দেখা গেল না৷ যার জন্য তৃণমূলের অন্দরের এই গোষ্ঠী কোন্দলকে দায়ী করছে বিভিন্ন মহল৷

জানা গিয়েছে, এদিন প্রসন্নদেব মহিলা কলেজে ভোট পড়েছে মাত্র ১৪.১ শতাংশ, আনন্দচন্দ্র কলেজে সেই হার ১৫ শতাংশ৷ তবে আনন্দচন্দ্র কমার্স কলেজে ভোট পড়েছে ৪৬.৫ শতাংশ৷ প্রসন্নদেব মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শান্তি ছেত্রী বলেন, ‘‘কোনও বার আমাদের কলেজে এত কম ভোট পড়ে না৷ গতবারও প্রায় ৩৮শতাংশ ভোট পড়েছিল৷’’

তিন কলেজের মধ্যে প্রসন্নদেব মহিলা কলেজ ও আনন্দচন্দ্র কলেজে সৈকত অনুগামীরা জয়ী হন৷ কমার্স কলেজে জয় পান অভিজিৎ অনুগামীরা৷ প্রসন্নদেব মহিলা কলেজে ৩৯টি আসনের মধ্যে ৩৬টিতে তাঁরা জয়ী হয়েছেন বলে দাবি সৈকত গোষ্ঠীর৷ কমার্স কলেজে ১৮টির মধ্যে ১৫টিতে তাঁরা জিতেছেন বলে দাবি অভিজিৎ গোষ্ঠীর৷ আনন্দচন্দ্র কলেজে ৪৮টি আসনের মধ্যে তাঁরা ৪৫টিতে জয়ী বলে দাবি সৈকত গোষ্ঠীর৷ যদিও অভিজিৎ গোষ্ঠী এত আসনে সৈকত গোষ্ঠীর জয় মানতে নারাজ৷

সৈকত বলেন, ‘‘আমি ছাত্র রাজনীতি করি না৷ কিন্তু যে ভাবে শুভঙ্করকে আক্রমণ করা হল, তাতে করে তৃণমূলপন্থী ছাত্র-ছাত্রীদের দাবিতেই তাঁদের পাশে দাঁড়াই৷ এই অবস্থায় এ দিনের এই জয় তৃণমূলপন্থী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটা ঐতিহাসিক জয়৷’’ সেই সঙ্গে সৈকতের বক্তব্য, ‘‘এই লড়াইয়ে কিছু ছাত্র-ছাত্রীর সঙ্গে আমাদের মতান্তর হলেও, মনান্তর হয়নি৷ আমি চাই যারা পরাজিত হয়েছেন তাঁরাও টিএমসিপি-র মূল স্রোতে ফিরে আসুন৷’’

অভিজিৎ কিন্তু বলেন, ‘‘শহরের দু’টি কলেজে সৈকত অনুগামীরা জিতলেও, জেলার বাকি কলেজগুলিতে প্রকৃত টিএমসিপি প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছেন৷’’ সৈকত অনুগামীরা হুমকি দিয়ে জিতেছেন বলে তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMCP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE