Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

আদিবাসী বিক্ষোভের জেরে ভাঙচুর-আগুন, রায়গঞ্জে ব্যবসা বন্‌ধ

পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে আজ, শনিবার রায়গঞ্জে ২৪ ঘণ্টা ব্যবসা বন্‌ধের ডাক দিয়েছে ব্যবসায়ীদের দু’টি সংগঠন রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স।

গৌর আচার্য
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৭
Share: Save:

পুলিশকে খবর দেওয়ার পরেও লাভ হয়নি। পুলিশের সামনেই ভাঙচুর, লুঠপাট হয়েছে শুক্রবার সকাল থেকে প্রায় দিনভর। তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহরের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।

পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে আজ, শনিবার রায়গঞ্জে ২৪ ঘণ্টা ব্যবসা বন্‌ধের ডাক দিয়েছে ব্যবসায়ীদের দু’টি সংগঠন রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স। একই দাবিতে ওই দিন জেলায় পরিবহণ ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছে উত্তর দিনাজপুর বাস ও মিনিবাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

ছোটগাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে এ দিন বিকেলে রায়গঞ্জের সুপারমার্কেট এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টা শহরের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান চালকেরা। একই সময়ে ব্যবসায়ীরা তাঁদের ও বাসিন্দাদের নিরাপত্তা, ভাঙচুর এবং অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সরকারি ক্ষতিপূরণের দাবিতে রায়গঞ্জের ঘড়ির মোড় ও বিবিডি মোড় এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টা পথ অবরোধ করেন।

এরপর ব্যবসায়ীরা রায়গঞ্জ থানায় ঢুকে প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের উপর লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। লাঠির আঘাতে জখম হয়েছেন রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী।

পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুণ্ডুর দাবি, ‘‘পুলিশের নজরদারি ঠিক থাকলে যেমন ধর্ষণের ঘটনা ঘটত না, তেমনই সব অভিযুক্ত গ্রেফতার হলে এদিন আদিবাসীরা শহরে তাণ্ডব ঘটাত না। তাই পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জেরেই এদিন আদিবাসীরা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্যবসায়ীদের লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পত্তি নষ্ট করল।’’

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগ, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জেরে রায়গঞ্জ শহরের আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। গত ১০ দিনে শহরে এক ঠিকাদারকে গুলি করে খুন ও এক যুবক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি গত রবিবার বাসস্ট্যান্ড চত্বরে আগ্নেয়াস্ত্র সহ তিন যুবক গ্রেফতার হয়েছে। পরের দুদিন ধৃত তিন যুবক সহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে আদিবাসী নাবালিকাদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়। পরপর এমন ঘটনায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা।

জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আদিবাসীরা শহরে ঢুকে তাণ্ডব চালাল। অথচ পুলিশের কাছে সেই ঘটনার আগাম খবর না থাকায় পুলিশ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারল না। পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তার জেরেই আদিবাসী মহিলারা ধর্ষিতা হয়েছেন। একাধিক অভিযুক্ত এখনও অধরা।

অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়া সহ জেলা পুলিশের কর্তাদের বদলি করা না হলে দলের তরফে আন্দোলন হবে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দামের বক্তব্য, রায়গঞ্জ শহরে পুলিশের নজরদারি বলতে কিছু নেই। তার জেরেই খুন, ধর্ষণ-সহ নানা সমাজবিরোধী কার্যকলাপ বাড়ছে। আর তার মাসুল দিতে হচ্ছে নিরীহ শহরবাসী ও ব্যবসায়ীদের।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বাসস্ট্যান্ড চত্বরে নাবালিকা ধর্ষণে অভিযুক্তদের দলের তরফে কঠোর শাস্তির দাবি জানান। ওই ঘটনায় কোনও অভিযুক্ত ফেরার থাকলে পুলিশের কাছে তাদের গ্রেফতার করারও দাবি জানিয়েছি। তিনি বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে হবে। আদিবাসীদের ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের পিছনে বিরোধী কোনও শক্তির হাত রয়েছে কি না, তা পুলিশের খতিয়ে দেখা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Business Strike Raiganj রায়গঞ্জ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE