পাহাড়ে অশান্তির কারণে দার্জিলিং হিমালয় রেলওয়ের (ডিএইচআর) সম্পত্তি নষ্ট হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার (ডব্লিউএইচসি)। ২০১৮-তে হতে চলা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪২তম অধিবেশনে এই প্রসঙ্গ তোলা হবে বলে জানানো হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে। মাসখানেকের বেশি সময় ধরে টয় ট্রেনের চলাচল বন্ধ হয়ে রয়েছে। বেশিদিন বন্ধ থাকলে হেরিটেজ তকমা হারানোর আশঙ্কাও রয়েছে।
ইতিমধ্যেই পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে ডিএইচআরের দার্জিলিং, গয়াবাড়ি ও সোনাদা স্টেশন-সহ অন্যত্র কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা দেখতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কাছে দু’টি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচসি-র ডিরেক্টর মেশটিল্ড রোসলার। চিঠিতে ডিএইচআর-র সংরক্ষণের সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ইউনেস্কোর তরফে ভারতকে ডিএইচআর-এর সংরক্ষণের বিষয়ে সাহায্য করা হবে বলেও জানিয়েছেন মেশটিল্ড রোসেলার।
গয়াবাড়ি এবং সোনাদা স্টেশন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিং স্টেশনেও হামলা হয়েছে। টয়ট্রেনের একটি কামরাতেও ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ। সারা বিশ্বে ছ়ড়িয়ে থাকা হেরিটেজ স্থানগুলোকে নিয়ে কাজ করে ইউনেস্কোর অধীনে থাকা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার। ১৮৭৯ থেকে ১৮৮১ সালের মধ্যে তৈরি হয়েছিল দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। যা ১৯৯৯ সালে বিশ্ব হেরিটেজের তকমা পায়।
ডিএইচআর-এর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ও ট্যুর অপারেটররাও চিন্তিত। মাসখানেকের বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলনে পর্যটন ব্যবসা বন্ধ। তার উপর গয়াবাড়ি, সোনাদার মতো স্টেশনে তাণ্ডবের জেরে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানান উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জন সংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা।
যদিও দার্জিলিং রেলওয়ের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিশেষ চিন্তার সুর শোনা যায়নি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির গলায়। তিনি বলেন, ‘‘রেলের ক্ষতি নিয়ে মাথা ঘামানো হচ্ছে। কিন্তু ন’জন গোর্খাল্যান্ড সমর্থক মারা গেলেন তার বেলা?’’ তাঁর পাল্টা দাবি, মোর্চাকে বদনাম করার জন্যই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ডিএইচআর-র সম্পত্তি নষ্ট করছে।
যদিও এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘মোর্চা দাবি করে তারা গোর্খাদের ঐতিহ্য নিয়ে লড়াই করে। তারা কি টয়ট্রেনকে দার্জিলিংয়ের ঐতিহ্য বলে মনে করে না?’’
এ দিকে রেলের তরফে শীঘ্রই একটি সমীক্ষা হবে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান তৈরির কাজও চলছে। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক একটি রিপোর্ট ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy