Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিষের কৌটো খুঁজছে পুলিশ

বিষের কৌটোর সন্ধানে গ্রেফতারের পর লিপিকা ও শ্বেতাকে আলাদা আলাদাভাবে তাদের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ৷ কিন্তু তাতেও বিষের কৌটো মেলেনি৷ এই অবস্থায় বিষক্রিয়ায়, না অন্য কোনও কারণে উত্তমবাবুর মৃত্যু হল তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷

হেফাজত: লিপিকা মোহান্ত। ফাইল চিত্র।

হেফাজত: লিপিকা মোহান্ত। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৭
Share: Save:

এলআইসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্ত খুনের ঘটনার পর ১৮ দিন কেটে গেলেও খোঁজ বিষের কৌটোর। অভিযোগ, খুনে ব্যবহৃত হয়েছিল ওই কৌটো বা পাত্র৷ ওই বিষের পাত্রের খোঁজে গ্রেফতারের পর উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা ও মেয়ে শ্বেতাকে নিয়েও তাদের ভাড়াবাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ৷ কিন্তু তারপরেও সেটি মেলেনি৷ যদিও পুলিশের একটি সূত্রের আশা, এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণ ধরা পড়লেই হয়তো বিষের পাত্রের সন্ধান মিলবে৷

গত ২৯ জুন কদমতলা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকার ভাড়াবাড়িতে মৃত্যু হয় উত্তমবাবুর৷ কোচবিহারের ভেটাগুড়ির বাসিন্দা উত্তমবাবুর দাদারা পরদিন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেন, উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা ও তার প্রেমিক ষড়যন্ত্র করে উত্তমবাবুকে খুন করেছে৷ ঘটনার পরদিনই গ্রেফতার করা হয় লিপিকাকে৷ যদিও অনির্বাণ পালিয়ে যায়৷ লিপিকা গ্রেফতারের দু’দিন পর গ্রেফতার হন এক চিকিৎসক৷ তাঁর বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে উত্তমবাবুর ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ ওঠে৷ গত বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় উত্তমবাবুর মেয়ে শ্বেতাকেও গ্রেফতার করা হয়৷

ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল বিষ খাইয়েই খুন করা হয়েছে উত্তমবাবুকে৷ তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা এও জানিয়েছেন, গ্রেফতারের পর জেরায় লিপিকাও তাঁদেরকে অভিযোগ করেছে, বেশ কিছুদিন থেকেই অনির্বাণ উত্তমবাবুকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চাইছিল৷ এবং সে-ই উত্তমবাবুকে বিষ খাইয়েছে৷ কিন্তু কী ধরনের বিষ অনির্বাণ উত্তমবাবুকে খাইয়েছে তা অবশ্য লিপিকা জেরায় বলতে পারেনি বলেই দাবি পুলিশের৷

সেই বিষের কৌটোর সন্ধানে গ্রেফতারের পর লিপিকা ও শ্বেতাকে আলাদা আলাদাভাবে তাদের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ৷ কিন্তু তাতেও বিষের কৌটো মেলেনি৷ এই অবস্থায় বিষক্রিয়ায়, না অন্য কোনও কারণে উত্তমবাবুর মৃত্যু হল তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ লিপিকা ও শ্বেতার আইনজীবী সন্দীপ দত্ত সোমবার বলেন, ‘‘আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি উত্তমবাবুর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে৷ উত্তমবাবুর দাদাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বিষ খাইয়ে তাকে মারা হয়েছে বলে বারবার বলছে৷ কিন্তু এটা যে ঠিক নয় তা ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে৷’’

পুলিশের এক কর্তা অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, জেরায় লিপিকা জানিয়েছে অনির্বাণই বিষ খাইয়েছে৷ তার সেই দাবি যদি ঠিক হয়, তাহলে অনির্বাণ ধরা পড়লেই উত্তমবাবুকে কী বিষ খাওয়ানো হয়েছে বা বিষের পাত্র কোথায় রয়েছে সে ব্যাপারে অনেক কিছুই স্পষ্ট হবে৷

আজ, মঙ্গলবার এই ঘটনায় ধৃত লিপিকা ও চিকিৎসক ধনঞ্জয় চতুর্বেদীর জামিনের আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE