প্রশ্ন: রোগী মৃত্যুর জেরে কোচবিহারের নার্সিংহোমে পুলিশের সঙ্গে বচসা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন বাসিন্দারা। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে কোচবিহার শহরের নতুন বাজার সংলগ্ন একটি নার্সিংহোমে। ঘটনার সময় একে একে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান চিকিৎসক, নার্সিংহোম থেকে সমস্ত কর্মী। ফাঁকা নার্সিংহোমে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে শয্যা থেকে উঠে বেরিয়ে গেলেন রোগীরা। পরে পুলিশ গিয়ে ওই নার্সিংহোমে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এমনই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে। পুলিশ জানায়, রোগীর পরিবারের অভিযোগে চিকিৎসকের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। চিকিৎসক বর্তমানে পলাতক। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “তদন্ত করা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, পায়ে ঘা নিয়ে শনিবার ওই চিকিৎসক তপন পালের নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় কোতোয়ালি থানার মোয়ামারির বাসিন্দা মধুসূদন নাগকে (৪৫)। তাঁর মেয়ে মাধবী নাগের অভিযোগ, ভর্তি করানোর সময় চিকিৎসক আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছিলেন পায়ে ছোট্ট একটা অস্ত্রোপচার হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। রাতে মধুসূদনবাবুর দেখভালের জন্য তাঁর স্ত্রী ছিলেন। শেষরাতের দিকে কর্তব্যরত নার্স মধুসূদনবাবুকে একটি ইঞ্জেকশন দিতে যান। কীসের ইঞ্জেকশন জানতে চাইলে রোগীর আত্মীয়কে ওই নার্স জানান, চিকিৎসকের নির্দেশেই ওই ইঞ্জেকশন দিচ্ছেন তিনি। ইঞ্জেকশন দেওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে যন্ত্রণায় ছটফট শুরু করে মধূসূদনবাবু। তাঁর কিছু ক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান। মাধবী বলেন, “ভূল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বাবার। নার্সিংহোমে কোনও মেডিক্যাল অফিসার ছিলেন না। এমনকী ওই ঘটনার পরে চিকিৎসক থেকে সবাই হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান।”
সকালে রোগীর আত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দারা নার্সিংহোমের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। তত ক্ষণে হাসপাতালের ১৫ জন রোগীর কেউ নিজেই বেরিয়ে যান। কাউকে তাঁর আত্মীয়রা বের করে নিয়ে যায়। বালাকুঠির বাসিন্দা জহরুদ্দিন মিয়াঁ জানান, অ্যাপেনডিক্স অপারেশনের জন্য তাঁর আত্মীয় আনারুল হককে ভর্তি করানো হয়। আনারুল বলেন, “রোগী ভর্তি করে এমন অবস্থার মধ্যে পড়তে হবে ভাবিনি।” আরেক বাসিন্দা নান্টু রায় বলেন, “আমার বাবাকে ভর্তি করিয়েছিলাম। অবস্থা খারাপ দেখে আজ বের করে নিয়ে আসি।” ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তপন কুমার পাল দাবি করেন, ওই রোগীর ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ছিল। তিনি বলে, “রোগী অ্যালকোহলিক ছিলেন। সারাদিন নেশা করতেন। পায়ে গ্যাংরিন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। আমরা চেষ্টা করেছি। বাঁচাতে পারিনি।” হামলা শুরু হওয়ায় সবাই হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy