Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

টিএমসিপি থেকে এবিভিপিতে যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের এক প্রতিনিধি-সহ অন্তত ১১ জন ছাত্র নেতা টিএমসিপি এবং ছাত্র পরিষদ ছেড়ে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এ যোগ দিলেন। রবিবার শিলিগুড়ি প্রেস ক্লাবে এবিভিপি’র জেলা নেতৃত্বের হাত থেকে পতাকা হাতে নেন তাঁরা।

পতাকা নিয়ে যোগ এবিভিপিতে। —নিজস্ব চিত্র।

পতাকা নিয়ে যোগ এবিভিপিতে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৪
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের এক প্রতিনিধি-সহ অন্তত ১১ জন ছাত্র নেতা টিএমসিপি এবং ছাত্র পরিষদ ছেড়ে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এ যোগ দিলেন। রবিবার শিলিগুড়ি প্রেস ক্লাবে এবিভিপি’র জেলা নেতৃত্বের হাত থেকে পতাকা হাতে নেন তাঁরা। যাঁরা এ দিন এবিভিপি’তে যোগ দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে ছাত্র পরিষদ ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের এক প্রতিনিধিও রয়েছেন। তাঁর নাম বিজেন্দ্র শর্মা। রয়েছেন ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল নামে তৃণমূলের এক ছাত্রনেতা যাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেও দেখা গিয়েছিল। এবিভিপি’র দাবি, আরও কিছু ছাত্রনেতা এবং নির্বাচনে জয়ী ছাত্র প্রতিনিধিদের একাংশ টিএমসিপি ছেড়ে আসতে চাইছেন। তবে তাঁদের নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সে ব্যাপারে পুলিশে অভিযোগও জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবিভিপি।

এ দিন মূলত মুক্তিনাথ শর্মার নেতৃত্বে ওই ছাত্রনেতারা এবিভিপি’তে যোগ দেন। মুক্তিনাথ শর্মা বর্তমানে এমফিলের ছাত্র। তিনি মাস কয়েক আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর হাত থেকে পতাকা নিয়ে সিপি ছেড়ে টিএমসিপি’তে যোগ দিয়েছিলেন । বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের সময় তাঁকে ফের ছাত্র পরিষদের হয়ে কাজ করতে দেখা যায়। শেখর বাগচী, প্রীতম মহুরির মতো আরও কয়েকজন ছাত্রনেতা টিএমসিপি ছেড়ে আসেন। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রোনাল্ড দে বলেন, “এক ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া বাকিরা কেউই সংগঠনের সঙ্গে ছিল না।”

এ দিন শিলিগুড়িতে সংগঠনের কাজে এসেছিলেন টিএমসিপি’র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র। তিনি বলেন, “এবিভিপি কোনও শক্তি নয়। পড়ুয়ারা আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। এবিভিপি বা অন্য কোথাও কেউ যাননি।” টিএমসিপি’র জেলাসভাপতি নির্ণয় রায়ের দাবি, “দোকানে মোটা টাকা বাকি রাখার মতো বিভিন্ন অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি ইন্দ্রনীলকে সংগঠন থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। অন্যান্য যাঁরা টিএমসিপি ছেড়ে গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে তাঁরা সংগঠনের কেউ নয়।”

এবিভিপি’র রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বিমল দাস জানান, টিএমসিপি-সহ আরও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের অনেক নেতাই তাঁদের সংগঠনে আসতে চাইছেন। বাম জমানায় যেমন ক্যাম্পাস দখল, একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই চলত, এখনও তেমনই চলছে। তাতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। খাতা কলমের বদলে বোমা, পিস্তল নিয়ে জেলায় জেলায় বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস দখলের লড়াই চলছে। বিমলবাবু বলেন, ‘আমরা সেভ ক্যাম্পাস, সেভ এডুকেশন’ এই নীতি নিয়ে চলতে চাই।

ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ি কলেজ, শিলিগুড়ি কমার্স কলেজ থেকে শুরু করে মালবাজার কলেজ, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন কলেজে ছাত্র সংসদ গঠন নিয়ে টিএমসিপি’র সদস্যদের মতোবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। মালবাজার কলেজে টিএমসিপির জেলা নেতৃত্বকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল। এবিভিপি’তে টিএমসিপি’র একাংশের যোগদানের প্রবণতা নিয়েও সংগঠনের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি বাগডোগরা কলেজে এবিভিপি-সহ অনান্য বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা মিলে সংসদ দখল নেওয়া, মেখলিগঞ্জ কলেজে এবিভিপির জয় শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংগঠনের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চাপা দিতে জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং দুই জেলার সংগঠনের নেতাদের নিয়ে এ দিন হিলকার্ট রোডে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে বৈঠক করেন অশোক রুদ্র। কোনও সমস্যা বা বিষয় নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকলে সরাসরি রাজ্য নেতৃত্বকে জানানোর নির্দেশ দেন। তবে সংগঠনের সিদ্ধান্ত বা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিরোধিতা বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন। এ দিন টিএমসিপি’র রাজ্য সভাপতির বৈঠকে জেলা সভাপতিদের অনুগামীদের ডাকা হলেও, অনান্যদের জানানো হয়নি বলে একাংশের অভিযোগ। জেলা নেতৃত্বদের দাবি, সকলকেই বৈঠকে আসতে বলা হয়েছিল। অশোক রূদ্র জানান, বড় পরিবারে মতানৈক্য হতেই পারে। তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ব্যাপার নেই। সাংগঠনিক নানা বার্তা দিতেই দুই জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmcp abvp uttarbanga university siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE