হঠাৎ বৃষ্টি শিলিগুড়িতে।
সকাল থেকেই জলপাইগুড়ির আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা ছিল। দুপুরের পরে কুচকুচে কালো মেঘে ঢেকে যায় শিলিগুড়ির আকাশ। দমকা হাওয়ার সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। অন্তত আধঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে বিকেল পর্যন্ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দুই শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
শিলিগুড়ির কিছু এলাকায় ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। সন্ধ্যার পরে বৃষ্টি না হলেও, আকাশে মেঘ ছিল। যার জন্য রাতের দিকে কিছু সময়ের জন্য তাপমাত্রাও বেড়ে যায় বলে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, উত্তর প্রদেশে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত এবং উত্তরবঙ্গ সিকিমের আকাশে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে এ দিন ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায়। দার্জিলিঙেও বৃহস্পতিবার দিনভর হালকা এবং মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি ছিল সিকিমেও। উত্তর সিকিমের কিছু এলাকায় এ দিন তুষারপাতও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “উত্তরপ্রদেশের পূর্ব দিকে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরেই সিকিম এবং উত্তরবঙ্গের উপরে নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হয়েছিল। সেই অক্ষরেখাটি সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়াতে এ দিন শক্তিশালী হয়। দু’য়ের জেরেই ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। একই কারণে শিলও পড়েছে কিছু এলাকায়।” গোপীনাথবাবু জানিয়েছেন, আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিকিমে বৃষ্টিপাত চলবে।
কোনও এলাকায় ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে আশেপাশের এলাকা থেকে ঝোড়ো হাওয়া ছুটে যায়। সে কারণেই এ দিন উত্তরবঙ্গ জুড়েই ঝড় হয়েছে। সেই সঙ্গে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে। রাতের দিকে আকাশে মেঘ থাকায় মাটির তাপমাত্রা বের হতে না পেরে সমতল এলাকায় উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয়। আবহাওয়ার পরিভাষায় যাকে অনেকটা ‘গ্রিন হাউস এফেক্ট’ বলা হয়ে থাকে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি দুই শহরেই এ দিন সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি ছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অন্তত ৫ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অন্তত ৬ ডিগ্রি বেশি ছিল বলে জানানো হয়েছে।
শিলিগুড়িতে এ দিন আড়াইটের পরে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। দেশবন্ধুপাড়া, হাকিমপাড়ার কিছু এলাকার রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে যায়। শিলিগুড়ি কলেজ মাঠেও জল জমে যায়। দমকা হাওয়ার জেরে এ দিন নিউ জলপাইগুড়ি এলাকায় বেশকিছুক্ষণ অটো চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। শিলিগুড়ির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডেও জল জমে যায় বলে বাসিন্দারা দাবি করেছেন। বৃষ্টি থামার কিছু পরেই অবশ্য জল নামতে শুরু করে। হঠাৎ বৃষ্টিতে বিকেলের ব্যস্ত সময়েও বিধানরোড, হিলকার্ট রোডে ভিড় কমতে শুরু করে। পরে অবশ্য সন্ধ্যার পরে ফের জনজীবন স্বাভবিক হয়ে যায়। একইভাবে জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়া, অশোকনগর, নতুন পাড়া আদরপাড়ায় জল জমে যায়। হাওয়ার ধাক্কায় ৩১ ডি জাতীয় সড়কের ধারে একটি হোর্ডিংও উপরে পড়ে বলে জানা যায়। দুপুরে আকাশ এতটাই অন্ধকার করে আসে যে বাড়িতে আলো জ্বালাতে হয়।
হঠাৎ ঝড়বৃষ্টিতে শহর লাগোয়া এলাকায় শস্য খেতের ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত হিসেব নিয়ে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy