Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

নদীতে প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ হোক

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

নদীতে প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ হোক

দুর্গা-পুজোর ভাসানের সময় বিবিধ প্রচার মাধ্যমের সক্রিয় উপস্থিতিতে বেশ উত্‌সাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে ফি বছর লোকদেখানো ‘গঙ্গা দূষণ রোধক’ নাটক অনুষ্ঠিত হয়।

নাটকের মূল বিষয়টি প্রশংসনীয় হলেও এতে প্রকৃতপক্ষে গঙ্গার দূষণ কতটা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। তা ছাড়া দূষণ কম করার জন্য গঙ্গার ঘাটে ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিমাগুলিকে দৃষ্টিকটু ভাবে টেনে হিঁচড়ে ডাঙায় তোলা হয়। এর পর ক্রেনে ঝুলিয়ে কর্পোরেশনের ট্রাকে বোঝাই করে সেগুলিকে নিরুদ্দেশে পাঠানো হয়। এই ব্যবস্থা প্রতিমা নিরঞ্জন বিধির নিরিখে কতটা গ্রহণযোগ্য তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। বিধি অনুসারে বিসর্জনের পর পিছন ফিরে না তাকানোরই কথা। কিন্তু এখানে সে বিধির পালন সম্ভবপর হচ্ছে না। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে যে পাঁচ দিন ধরে যে প্রতিমার এত সাড়ম্বরে পুজো করা হল, যাঁদের দর্শনে এত উত্‌সাহ এবং উদ্দীপনা, বিসর্জনের অব্যবহিত পরেই সেই প্রতিমার নামে এমন অ-দৈবিক আচরণ কেন হবে?

এর চেয়ে বরং রাজ্য জুড়ে গঙ্গাসহ সমস্ত নদীতে সকল প্রকার প্রতিমা বিসর্জন নিষিদ্ধ করা হোক। পরিবর্ত ব্যবস্থা হিসেবে বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কিছু পুকুর বা জলাশয় নির্দিষ্ট করা হোক বিসর্জনের জন্য। পুজো কমিটির কাছ থেকে উচিত-অঙ্কের ‘বিসর্জন কর’ আদায় করা হোক। এ ছাড়াও বিসর্জনের অনুষ্ঠানগুলিকে দর্শনীয় মেলার আকার দিয়ে সেখানে দর্শনেচ্ছু মানুষের কাছ থেকে প্রবেশমূল্য নেওয়ার ব্যবস্থা করে কিছু আয় করা সম্ভব। বিসর্জনের পরে জলাশয়গুলির সংস্কারের কাজে ব্যয় করা হোক সেই অর্থ। প্রশাসন, পুজো কমিটি তথা ধর্মীয় সংগঠনগুলির যৌথ সম্মতিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। প্রসঙ্গত, বিসর্জনের জন্য প্রশাসন কর্তৃক শহরের দুটি পৃথক স্থানে দুটি জলাশয় চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য। সমগ্র রাজ্য জুড়ে সার্বিক ভাবে এমন একটি ব্যবস্থা গৃহীত হলে গঙ্গাসহ রাজ্যের সমস্ত নদীতে বিসর্জনজনিত দূষণ যেমন বন্ধ হবে তেমনই বন্ধ হবে প্রতিমা নিরঞ্জনের ওই অ-দৈবিক ব্যবস্থাও। আর উপরি পাওনা হিসেবে পাওয়া যাবে ক’টি তরুণ তাজা প্রাণ, প্রশাসনের অক্লান্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিসর্জনকালে ফিবছর যেগুলি তলিয়ে যায় নদীর অতল গহ্বরে।

অণুজ লাল। মুকুন্দপুর, কলকাতা-৯৯

আইন নেই

আমি কলকাতা হাইকোর্টে ২৩ বছর ধরে কর্মরত। দীপেশ চক্রবর্তী মহাশয় তাঁর নিবন্ধের (‘যৌবন প্রতিবাদের...’, ১৫-১০) ৪ এবং ৫ অনুচ্ছেদে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান সমস্যার সমাধান করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

আমি নিজে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। দীপেশ চক্রবর্তী মহাশয়কে সম্মান জানিয়ে বলি, আমার সীমিত জ্ঞানের মধ্যে যেটুকু জানি তা হল এই যে, ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ২টোর সময় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর কিছু ছাত্রছাত্রীর উপরে আলো নিভিয়ে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী কালে যাদবপুর থানায় আইপিসি’র বিভিন্ন সেকশনে একাধিক এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে শ্লীলতাহানির অভিযোগটি আইপিসি ৩৫৪ ধারার এক্তিয়ারে পড়ে, যেটি নন-কম্পাউন্ডেবল (এবং নন-বেলেবল) অফেন্স। এর মানে হল, এই ধারাতে কোনও অপরাধ সংগঠিত হলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতে প্রোডিউস করে এবং তদন্ত করে চার্জশিট জমা দেয়। তার পরে কোর্ট বিচার করে যে, অভিযুক্ত দোষী না নির্দোষ।

অতনু মিত্র। সেকশন অফিসার, কলকাতা হাইকোর্ট

শৌচাগার

২০১৩ সালের ২ অক্টোবর নদিয়া জেলায় নির্মল ভারত অভিযান ও একশো দিনের কাজের সমন্বয়ে সারা জেলা জুড়ে শৌচাগারবিহীন পরিবারগুলির জন্য শৌচাগার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী ১ লক্ষ ৩২টি শৌচাগার ইতিমধ্যেই নির্মাণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের মূল লক্ষ্য ২০১৫ মার্চ মাসের মধ্যে নির্মল জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া। নদিয়া জেলার বাসিন্দা হিসেবে জেলা প্রশাসনের এই মহতী উদ্দেশ্যকে সাধুবাদ জানাই ও গর্ববোধ করি। কিন্তু একই সঙ্গে আতঙ্কিত হচ্ছি জেলার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। কারণ শৌচাগার নির্মাণের একটি বড় উদ্দেশ্য জলকে মলবাহিত রোগ মুক্ত করে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা। কিন্তু বাস্তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শৌচাগারের মডেল স্কিম অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে না। চার ফুট গভীরতার দুইটি কুয়োর পরিবর্তে, একটি আট ফুট গভীরতার কুয়ো নির্মাণ করা হচ্ছে। দুইটি কুয়োর মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী জায়গা রাখা হচ্ছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ‘y’ জংশন

ব্যবহার করা হচ্ছে না। ফলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর দূষিত হতে বাধ্য। সুতরাং সমস্ত বিষয়টি বুমেরাং হিসেবে ফিরে আসবে ও জলবাহিত রোগ মহামারির আকার নেবে। একই সঙ্গে নির্মিত শৌচাগারগুলির মালপত্র বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিম্নমানের। শৌচাগারগুলি তিন-চার বছর টিকবে কি না সন্দেহ হয়। জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন, কেবলমাত্র সংখ্যা বা পরিমাণের দিকে নয়, শৌচাগারগুলির গুণমানের দিকেও বিশেষ ভাবে নজর দিন, নতুবা ভবিষ্যতে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনতে চলেছি।

বিশ্বপতি সিংহ। কৃষ্ণনগর

বদহজম কা ওষুধ

অরূপরতন আইচ ‘কী করে বাঙালি চিনবেন’ (৮-১০) চিঠিতে অসমাপ্ত তালিকাকে সমাপ্ত করবার অনুরোধ করেছেন। তালিকা বোধহয় অসমাপ্তই থেকে যাবে। তবু বলি, বছর দশ-পনেরো আগে বোধ হয়, মনে পড়ছে কুমায়ুনের শীতলাখেতে দাঁড়িয়ে দেখছি নন্দাদেবী, পঞ্চচুল্লি ইত্যাদি পাহাড়ের পিছনে এক অলৌকিক সূর্যোদয়। হঠাত্‌, পিছন থেকে এক ভদ্রলোকের গলার আওয়াজ পেলাম। তিনি তাঁর পথপ্রদর্শককে পরিশীলিত, বিশুদ্ধ হিন্দিতে বলছেন, ‘এ কোন থার্ডক্লাস জায়গাতে আনা হ্যায়, ইধারমে তো কোই দোকান নেহি হ্যায়। বদহজম কা ওষুধ কিধার মিলেগা?’ বুঝতে পারলাম ভদ্রলোক নির্ভুল ভাবেই বাঙালি।

শান্তভানু সেন। শ্রীপল্লি, শান্তিনিকেতন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE