সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তিন তালাক প্রথা এখন অবৈধ ভারতে। ছবি: সংগৃহীত।
দেশের অর্ধেক আকাশকে মেঘমুক্ত করার পথে আরও একটা ধাপ। তিন তালাক প্রথা রদ করতে এবং এই কু-প্রথার অনুসরণকারীর শাস্তি বিধান করতে সংসদে বিল আনছে ভারত সরকার। সে বিলে অনুমোদন দিয়ে দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। মুসলিম মহিলাদের জন্য তো বটেই, সমগ্র ভারতের জন্যই সুসংবাদ এ।
ভারতের সর্বোচ্চ আদালত আগেই তিন তালাক প্রথাকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। এই অবৈধ প্রথাকে এর পরেও যাঁরা অনুসরণ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য সরকারকে আইন প্রণয়ন করতেও বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশের রূপায়ণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপটা অধিক কালক্ষেপ না করেই করল ভারত সরকার। তাৎক্ষণিক তালাক দেওয়াকে যাতে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে যাতে আসামিকে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যায়, সেই মর্মে আইন আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। বিলে মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়ে দিল।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তিন তালাক প্রথা এখন অবৈধ ভারতে। কিন্তু সে রায় অনেকেই মানতে প্রস্তুত নন এখনও। মৌখিক ভাবে তো বটেই, এসএমএস, ই-মেল বা হোয়াটসঅ্যাপে তালাক দেওয়াও চলছে বলে খবর আসে মাঝে-মধ্যেই। ভারতই এই মুহূর্তে একমাত্র দেশ এই পৃথিবীতে, যেখানে এখনও এমন তাৎক্ষণিক উচ্চারণে স্ত্রীয়ের থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারেন মুসলিম পুরুষ। মুসলিমপ্রধান দেশগুলিতেও আর অনুসৃত হয় না এ প্রথা। সব দেশই নিজেদের মুক্ত করে নিয়েছে তিন তালাকের গ্লানি থেকে। কিন্তু এত বছর ধরেও বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রটি তা পেরে ওঠেনি। এ কিন্তু খুব কম গ্লানির বিষয় নয়।
আরও পড়ুন
অবৈধ তালাকে জেল, সায় বিলে
গ্লানির থেকে নিজেদের মুক্ত করার লক্ষ্যে সদর্থক এক দিশায় ভারত যে পদক্ষেপ করল, সে অবশ্যই আশান্বিত হওয়ার বিষয়। মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত বিলে এ বার সংসদের অনুমোদনও জরুরি। সে প্রক্রিয়া কোনও অনাকাঙ্খিত উপদ্রবে আক্রান্ত হবে না বলেই আশা করা যায়। সরকার পক্ষ শুধু নয়, বিরোধী পক্ষও প্রগতির পক্ষে তথার গ্লানিমুক্তির পক্ষেই দাঁড়াবে, এ আশা একবিংশ শতকের ভারতবাসী রাখতেই পারেন। সংসদের প্রত্যেক সদস্যেরই সে কথা মনে রাখা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy