Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সাক্ষাৎকার

এখনকার ছেলেমেয়েরা সেনাবাহিনীকে ভয় পায় না

মোদী বিরাট ভোটে জিতে এসেছিলেন। সবাই মনে করেছিল তিনি বাজপেয়ীর পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন। মনে রাখতে হবে, বাজপেয়ী কিন্তু সাম্প্রতিক কালের একমাত্র সর্বভারতীয় নেতা কাশ্মীরিরা যাঁকে আজও পছন্দ করেন।

সহানুভূতি: ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত জঙ্গি কাশ্মীরি নেতা ফৈয়জ আহমেদ-এর সমাধি অনুষ্ঠানে মানুষের ঢল, কায়মো, ৭ মে। ছবি: রয়টার্স

সহানুভূতি: ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত জঙ্গি কাশ্মীরি নেতা ফৈয়জ আহমেদ-এর সমাধি অনুষ্ঠানে মানুষের ঢল, কায়মো, ৭ মে। ছবি: রয়টার্স

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

প্রশ্ন: কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখন কেমন?

মেহবুবা মুফতি: সম্প্রতি কাশ্মীর অনেক পাল্টেছে। ২০০৮ সালের পর থেকে জঙ্গি হানা কমছিল, কিন্তু আন্দোলনের রাজনীতি বাড়ছিল। হয়তো তার ফলেই, আজ আমরা দেখছি তরুণ প্রজন্ম নিজেরাই এগিয়ে এসে গোটা অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করছে। রাজনীতি তো আছেই, কিন্তু এর পিছনে আরও কতগুলো বিষয় আছে। দিল্লি থেকে উসকানি আছে। উপত্যকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা/ইচ্ছার অভাবটাও আছে। বিধানসভায় আমি ও আমার দল যখন কাশ্মীরি পণ্ডিত ও সৈনিক কলোনি নিয়ে স্থানীয় মানুষের সংশয় দূর করতে চেয়েছি, পরের দিনই দেখেছি অকারণ উল্টোপাল্টা উসকানিমূলক মন্তব্য যে সৈনিক কলোনি তৈরি নাকি শুরু হয়ে গিয়েছে। অশান্তি জিইয়ে রাখতে চাওয়ার মানুষের তো অভাব নেই। সমস্যার সমাধান যাঁরা চান, উপত্যকায় শান্তি চান, কাশ্মীরিদের মর্যাদাময় জীবন চান, তাঁদের পাশাপাশি ওই মানুষরাও আছেন সমস্যা চলতে থাকলেই যাঁদের স্বার্থসিদ্ধি, সমস্যা থাকলে তবেই যাঁরা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারেন! টাকার খেলাও আছে এ সবের পিছনে।

প্র: বিজেপির ভূমিকাটা কী রকম? বর্তমান সরকারে বিজেপি কি পিডিপির আস্থা ভঙ্গ করেছে?

উ: আমার বাবা মুফতি মহম্মদ সইদ যখন এই জোটের মধ্যে ঢুকেছিলেন, তাঁর ভাবনাটা অনেক বড় ছিল। বলা যায়, ১৯৪৭ সালে যখন শেখ মহম্মদ আবদুল্লা দ্বিজাতিতত্ত্ব পরিহার করে জোট তৈরি করেছিলেন, ধর্মনিরপেক্ষ ভারত ইউনিয়নে মহারাজার প্রবেশকে সমর্থন করেছিলেন, আমার বাবার ভাবনাও অনেকটা সেই রকম ছিল। ভোটের ফল সে দিন স্পষ্ট দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। মোদী বিরাট ভোটে জিতে এসেছিলেন। সবাই মনে করেছিল তিনি বাজপেয়ীর পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন। মনে রাখতে হবে, বাজপেয়ী কিন্তু সাম্প্রতিক কালের একমাত্র সর্বভারতীয় নেতা কাশ্মীরিরা যাঁকে আজও পছন্দ করেন। উনিই একমাত্র নেতা যিনি কাশ্মীরিদের কাছে পৌঁছতে চেয়েছিলেন, পাকিস্তানিদের কাছেও পৌঁছনোর চেষ্টা করেছিলেন, কারগিল যুদ্ধের পরও, সংসদ আক্রমণের পরও। মুফতি সাহেব তাই ভেবেছিলেন, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চললে হয়তো উপত্যকার ভালই হবে। উনি নিজের সুবিধের কথা ভাবেননি, নিজের দল, কাশ্মীরের স্বার্থ, সরকার গঠন এ সবের ঊর্ধ্বে উঠে ভেবেছিলেন। ওঁর স্বাস্থ্য বাদ সাধল। ঘটনার গতি অন্য দিকে ঘুরতে শুরু করল। আর মিডিয়ার ভূমিকা, বিশেষত ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা তো আছেই। কে যেন সে দিন বলছিলেন, ১৯৯০-এর দশকে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার এই প্রতাপ থাকলে কাশ্মীর আর এত দিন থাকত না। কী হত জানি না।

প্র: তার অর্থ, কাশ্মীরের এই পরিস্থিতি তৈরিতে বিজেপির চেয়ে মিডিয়ার দায়িত্বই বেশি?

উ: কোনও আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে একটা উপযুক্ত পরিবেশ চাই। আমার বাবা কিছু পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছিলেন তাঁর শাসনের প্রথম দিকে যখন কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছিল। সেই সময় পরিবেশ উপযুক্ত ছিল। ভাল প্রশাসন, রাজনৈতিক অগ্রগতির চেষ্টা, এই সব ছিল। মুফতি সাহেব নিজে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিজেপির চাপ শুরু হয়। ৩৭০ ধারা নিয়ে মামলা শুরু হল।

প্র: অ্যাজেন্ডা অব অ্যালায়েন্স-এ যা যা ঠিক হয়েছিল, সেগুলো তো কিছুই মানা হচ্ছে না।

উ: অ্যাজেন্ডা অব অ্যালায়েন্স ধরে এগোনো ছাড়া কিন্তু আর কোনও পথ নেই। এটা একটা রোড ম্যাপের মতো: বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ-এর রিপোর্ট-এর উপর ভর করেই এটা তৈরি হয়েছে। কাশ্মীরকে এই সংকট থেকে বার করতে হলে যে রোড ম্যাপ জরুরি। অ্যাজেন্ডা অব অ্যালায়েন্স-এর তিনটি পয়েন্ট এখনও অবধি গুরুত্ব পেয়েছে, কিছু কাজও এগিয়েছে। যেমন, পাক-শাসিত কাশ্মীরে (পিএকে) উদ্বাস্তু, পশ্চিম পাকিস্তানের উদ্বাস্তু আর কাশ্মীরি পণ্ডিত। পশ্চিম পাকিস্তানি উদ্বাস্তুদের কিছু মৌলিক সুযোগসুবিধের ব্যবস্থা তো আমাদেরই দাবি, বিজেপির নয়। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিষয়টি নিয়ে আমার বাবার চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন কাউকে দেখিনি। উনি বলতেন, মাত্র কয়েক ঘর পণ্ডিত, তাঁদেরও আমরা ধরে রাখতে পারছি না! এই মানবিক বিষয়গুলি নিয়ে এগোনোটাই দরকার, এগুলোই কাশ্মীর সংকট সমাধানের পথ। আরও আছে। আপনি কি মনে করেন না যে আফস্পা তুলে নেওয়া হলে কাশ্মীরের অবস্থা পাল্টাত? অথচ আর্মির বাড়াবাড়ি এখন যে পর্যায়ে, তাতে আফস্পা প্রত্যাহারের কথা বলাটাই হাস্যকর হয়ে গিয়েছে!

প্র: হুরিয়তের সঙ্গে আলোচনাও অ্যাজেন্ডা অব অ্যালায়েন্স-এর অংশ ছিল।

উ: নিশ্চয়ই। প্রধানমন্ত্রী লাহৌরে গেলেন। বাজপেয়ীর পর এই প্রথম কেউ গেলেন। যেন প্রতিবেশীর বাড়িতে যাচ্ছেন, এমন ভাবেই গেলেন মোদীজি। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, তার পর পরই ঘটল পঠানকোট। গণতান্ত্রিক দেশ, তাই প্রধানমন্ত্রী মানুষের প্রশ্নের কাছে, বিরোধীদের কাছে দায়বদ্ধ। তার উপর প্রচারমাধ্যমের বাড়াবাড়ি। সকলেরই মত প্রকাশের অবাধ অধিকার। পুরো পরিস্থিতিটাই পাল্টে গেল। আমার মতে, এটা ছিল চক্রান্ত, সাবোতাজ। কে করল বলতে পারব না, কিন্তু সাবোতাজ। আর ডায়লগ? আমার তো মনে হয়, আমিই জম্মু ও কাশ্মীরের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী যে হুরিয়তকে চিঠি লিখেছি, সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বে সংসদীয় দলের সঙ্গে কথা বলতে তাদের অনুরোধ করেছি। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কি ডায়লগ হতে পারে যেখানে এক দিক অন্য দিককে জোর করে গৃহান্তরিন থাকতে বাধ্য করে? নেলসন ম্যান্ডেলা, গাঁধী, অনেক নেতাই তো জেলে গিয়েছেন, জেল থেকে বেরিয়ে এসে ডায়লগে অংশও নিয়েছেন।

প্র: গত বছরের অশান্তিতে কি পাকিস্তানের বড় ভূমিকা ছিল?

উ: বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা যা বলছেন, তাতে তো তেমনই মনে হয়। কিন্তু শুধু পাকিস্তান বা হুরিয়ত দিয়ে ভাবলে তো চলবে না, অন্য দিকগুলোও ভাবতে হবে। ভারতীয় নেতাদের কথা, কেবল মোদী আর তাঁর মন্ত্রীরা নন, গোটা দেশের নেতৃত্বের কথা। কাশ্মীর নিয়ে তাঁরা কী ভাবেন? পাকিস্তান কাশ্মীরের ওই অংশে অর্থনৈতিক করিডর বানিয়েছে, বাঁধ বানিয়েছে, আরও কাজ করেছে। কাশ্মীরের যে অংশটি চিন অধিকার করেছে, তাতেও অনেক কাজ হয়েছে। অথচ ভারত এখনও বড্ড ব্যস্ত, সত্তর বছর পরও কাশ্মীরের দিকে মন দেওয়ার সময় তার নেই। কাশ্মীরিদের রাগের কারণ এই অবহেলা।

প্র: কার দোষ এটা?

উ: মুফতি সাহেব বলতেন, এটা যেমন জম্মু ও কাশ্মীরের নেতাদের দোষ, তেমন ভারতীয় নেতৃত্বেরও দোষ। জওহরলাল নেহরু থেকে যিনিই দিল্লিতে ক্ষমতায় এসেছেন, সকলেরই এক সমস্যা। কাশ্মীর নিয়ে কী কী করা যায়, ভাল করে ভেবেছি কি আমরা? ভেবেছি কি, জম্মু ও কাশ্মীরকে সার্ক সহযোগিতার মডেল হিসেবে তৈরি করা যায় কি না? চিন যদি কাশ্মীরের এক অংশে অর্থনৈতিক করিডর তৈরি করে ফেলতে পারে, তা হলে সার্ক দেশগুলো কেন আমাদের অফিস, ব্যাঙ্ক, ইউনিভার্সিটি, কারিগরি এই সব বিষয়ে সদর্থক ভূমিকা নিতে পারে না? আসলে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা একটা অন্য স্তরে ওঠা দরকার। এখনও তার কোনও ইঙ্গিত নেই।

প্র: পিডিপি যখন স্বশাসনের কথা বলে, সেটা তো নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করেই ভাবা হয়। সেটা তো কেবল ভারতীয় কাশ্মীর নয়।

উ: হ্যাঁ। দুই কাশ্মীরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের কথা আমরা বহু দিন ধরে বলে আসছি। ওয়ার্কিং গ্রুপগুলি যে ধরনের প্রস্তাব দিয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে একটা যৌথ প্রশাসন তৈরির কথা ভাবা দরকার। যাতে দুই দিকের অধিবাসীরা যোগাযোগ করতে পারে বছরে অন্তত দুই বার, কিংবা একসঙ্গে কিছু যৌথ পরিকল্পনা করতে পারে, পরিবেশ বা পর্যটন নিয়ে। কাশ্মীরি পণ্ডিতরা এখন ও পারের সারদা পেঠ যেতে পারেন না, রাজৌরির শিখরা তাঁদের অঞ্চলে ফিরতে পারেন না। অথচ ওখানে বেশ কিছু গুরুদ্বার আছে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দুই কাশ্মীরকে কাছে টানা দরকার, নয়তো মানুষের আবেগকে বেশি দিন সামাল দেওয়া অসম্ভব।

প্র: কাশ্মীরে ১৯৯০ সালের পর যে প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে, তারা বলছে, তারা ভারতীয় নয়, মৃত্যুকেও তারা ভয় পায় না। এ অবস্থায় কী করণীয়? সামরিক সমাধানই কি একমাত্র সমাধান?

উ: না। মিলিটারির নিজস্ব কাজ আছে। সন্ত্রাসবাদ সামলানো, সন্ত্রাসবাদকে আটকানো। কিন্তু এই অল্প বয়সি ছেলেমেয়েদের সামলানোর জন্য অন্য ভাবনা চাই, বহুমাত্রিক পরিকল্পনা, ডায়লগ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধূলা, চাকরিবাকরি, কত কী করার আছে। এদের বোঝাতে হবে যে মিলিটারি বা পুলিশ সব সময় এদের তাড়া করছে না। সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে, বাবামাদের, শিক্ষকদের এদের কাছে টানতে হবে। এরা আগের প্রজন্মের মতো নয়, প্রযুক্তি ব্যবহারে এরা মহা দক্ষ, মোবাইল, ইন্টারনেট ব্যবহার। শিক্ষকদের, বাবা-মাদের সেই কথাটা মনে রেখেই এদের চালনা করতে হবে। নয়তো একটার পর একটা প্রজন্ম আমরা হারাতে থাকব।

প্র: সন্ত্রাসবাদের কথা বলছিলেন। এ দিকে জঙ্গিদের সমর্থন এখন সমানে বাড়ছে, হাজার হাজার লোক জঙ্গিদের সমাধি অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছে...

উ: মানুষের ভাবনা পাল্টাচ্ছে। এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ প্রতিবাদে যোগ দিচ্ছেন, আন্দোলনে শামিল হচ্ছেন। ভয় অনেক কমে গিয়েছে। ভাবুন ২০১০ সালের কথা, যখন আর্মি ক্যাম্পের কাছে যেতেই লোকে ভয় পেত। যে কোনও কারণেই হোক, আর্মিকে এখন আর কেউ ভয় পায় না। হিলিং টাচ নীতি যখন নেওয়া হয়েছিল, তার পর থেকেই ভয় কমেছে, পোটা (প্রিভেনশন অব টেররিজম অ্যাক্ট) তুলে নেওয়ার পর ভয় আরও কমেছে। এখনকার ছেলেমেয়েরা আগেকার সেই দমবন্ধকরা পরিবেশ দেখেনি। এরা অনেক সাহসী। আর একটা কথা। আন্দোলন আয়োজন করাটাও কিন্তু একটা বিরাট কাজ। আয়োজকরা সংখ্যায় বাড়ছে। এই সব আন্দোলন তো স্বতঃস্ফূর্ত নয়। বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারাই স্বীকার করছেন, তাঁদের লোকজন কী ভাবে উপত্যকার নানা জায়গায় আন্দোলন সংগঠিত করে বেড়াচ্ছে।

প্র: বিরোধীরা বলছেন, পিডিপি-বিজেপি জোটের জন্যই এই হাল। জোট একটা খারাপ বাজি ছিল।

উ: বিরোধীরা যা-খুশি বলতে পারেন, কিন্তু পিডিপি-বিজেপি জোটের মধ্যে যে একটা বড় সম্ভাবনা ছিল, সবাই হয়তো সেটা বুঝবে না। যে বিজেপির সঙ্গে আমরা জোট বাঁধছি, সেই বিজেপিই কেন্দ্রে শাসন করছে। জোট মানে যারা কেবল ক্ষমতা ভাগাভাগি ভাবে, তারা মুফতি সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতেই পারবে না— কী ভাবে পুরো কমিটমেন্ট নিয়ে একটা জোটে ঢুকতে হয়, সেটা কার্যকর রাখার জন্য প্রতি মুহূর্তে চেষ্টা করতে হয়।

এটুকুই বলতে পারি, এটা কোনও আনতাবড়ি বাজি ছিল না। যে কিছু না জেনে বাজি ধরে, সে জানে না কিসের মধ্যে ঢুকছে। আমার বাবা খুব ভালই জানতেন কিসের মধ্যে ঢুকছেন। শেষ পর্যন্ত এই জোটে তিনি আস্থা রেখেছেন। মনে করেছেন, মানুষের জন্য সত্যিই কিছু কাজ করা যাবে। রক্তপাত, গ্রেফতার, অশান্তি কমানো যাবে। গত বছরে এই সব ঘটার আগে পর্যন্ত কত কোম্পানি কাশ্মীরে অফিস খোলার অনুমতি চেয়েছে। আশায় থেকেছি, বেকারত্ব কমবে। তার পর সব ওলোটপালট হয়ে গেল। আমাদের দলও বিরাট ধাক্কা খেল। তবে এটা দলের ভালমন্দের থেকে অনেক বড় ব্যাপার। গোটা কাশ্মীরের অস্তিত্বের প্রশ্ন।

প্র: কাশ্মীরিরা কি আর নির্বাচনে উৎসাহী হবেন?

উ: দেখুন, এটা একটা সাময়িক পর্ব। ১৯৯৬ সালে আমি যখন প্রথম বার নির্বাচন লড়েছিলাম, তখন ভোটার শতাংশ ছিল এক সংখ্যাবিশিষ্ট। ক্রমে পরিস্থিতি পাল্টাল। কিছুই স্থায়ী নয়, সব সাময়িক। ফলে আজকের অবস্থাও পাল্টাতেই পারে।

প্র: সেই মেহবুবা মুফতি কোথায় যিনি জঙ্গিদের বাড়ি বাড়ি ঘুরতেন, সেই জনপ্রিয় নেত্রী, যিনি আর্মি ক্যাম্প থেকে মানুষদের বার করে আনতেন?

উ: মেহবুবা মুফতি এখনও একই আছেন। তিনি এখনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চান। লড়াই দিয়েই আমার কেরিয়ার শুরু হয়েছিল, সবচেয়ে জঙ্গি-অধ্যুষিত এলাকায় যেখানে কেউ প্রার্থী হতে চান না, সেখানে আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। পিছনে তাকালে বুঝতে পারি, রাজ্যের এমন কোনও কোণ নেই যেখানে আমি যাইনি, মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াইনি। আজ আমার সামনে একটা অন্য রকম চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমি লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছি, যাব।

(সংক্ষেপিত)

সাক্ষাৎকার: সুজাত বুখারি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE