ভারতে নিয়মিত নির্বাচন হয়, আর নেতারা তাকে যথেষ্ট গুরুত্বও দেন। তীব্র গরমেও মানুষের বাড়ি বাড়ি যান, প্রচুর অর্থব্যয় করেন। সে তুলনায় উন্নয়নে ভাল কাজ দেখানোর চেষ্টা কতটা করেন?
কেন নেতারা মনে করেন, ভোটে জেতার জন্য ভাল কাজ করার দরকার হয় না? একটা বড় কারণ অবশ্যই জাত-পাতের রাজনীতি, যেখানে প্রার্থীর পরিচয়ই (সে দলিত, নাকি মুসলিম, নাকি ব্রাহ্মণ) সব ছাড়িয়ে যেতে চায়। উত্তরপ্রদেশের কোন নেতা কত দুর্নীতিগ্রস্ত, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের মতামত সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে একটা মূল্যায়ন হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, নিম্নবর্ণ এলাকার নিম্নবর্ণ বিজেতারা, এবং উচ্চবর্ণ এলাকার উচ্চবর্ণ বিজেতারা সব চাইতে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত। ভাল কাজের দরকার নেই, বরং জাত-ধর্ম নিয়ে আবেগ উস্কে দিলে কাজ হয় বেশি। তাই গোরক্ষকদের মাঠে নামাতে হয় বিজেপিকে।
এমনই কি চলতে থাকবে? তা বুঝতে আমরা খুব সহজ একটা কাজ করেছিলাম। উত্তরপ্রদেশে ২০০৭ বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটি অসরকারি সংস্থার সাহায্যে কিছু এলাকায় পোস্টার সাঁটা হয়েছিল। তাতে কেবল এটুকু লেখা ছিল, ‘উন্নয়নের কাজ দেখে ভোট দিন।’ কোনও দল, মতবাদের উল্লেখই ছিল না। ফল বেরোতে দেখা গেল, যে সব এলাকায় পোস্টার পড়েছে, সেখানে জাতি-ভিত্তিক ভোট কমে গিয়েছে দশ শতাংশ। যার মানে, ‘আপনা আদমি হ্যায়,’ এই চিন্তা খুব শক্ত কোনও মত নয়। তাই উন্নয়নকে একটি সূত্র হিসেবে ধরিয়ে দিতে অনেকেই দ্রুত মত বদলে ফেললেন।
পরের বছর দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের ‘রিপোর্ট কার্ড’ তৈরি করি। একটি হিন্দি দৈনিকে তা প্রকাশিত হয়, যা কয়েকটি বস্তি এলাকায় বিনা পয়সায় বিলি করা হয়। ভোটের ফলে দেখা যায়, সেরা রিপোর্ট যাঁদের, সেই প্রার্থীরা সাত শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছেন। যেখানে দুই-তিন শতাংশ ভোট জেতা-হারা ঠিক করে দেয়, সেখানে সাত শতাংশ মোটেই তুচ্ছ নয়।
এই গবেষণার সময়েই আমরা বোঝার চেষ্টা করেছি, ভোটাররা কোন বিষয়ের উপর জোর দেন। দেখা গিয়েছে, কত টাকা খরচ হয়েছে, কেবল সেই হিসেব নয়। কীসে খরচ হয়েছে, সেটা তাঁদের কাছে বেশি জরুরি। নেতারা খরচ করতে চান রাস্তায়, বস্তির মানুষ চান ড্রেন, টয়লেট। যখন তাঁরা জানতে পারছেন খরচ কীসে হচ্ছে, তখন তাঁরা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় মানুষের এই সংযোগ গণতন্ত্রের একটি প্রধান দিক।
ভোটদাতা তাঁর সম্পর্কে কী ভাবছেন, নেতা কি তাকে গুরুত্ব দেন? তা বোঝার জন্য দিল্লির পুর-নির্বাচনের দু’বছর আগে (২০১২) কিছু কাউন্সিলরকে চিঠি পাঠাই। বলা হয়, ‘আপনার কাজের রিপোর্ট কার্ড কাগজে ছাপা হবে।’ বাকিদের লেখা হয়, ‘আপনার রিপোর্ট কার্ড তৈরি করা হচ্ছে না।’ দু’বছর পরে দেখা গেল, যাঁদের রিপোর্ট কার্ড ছাপা হল, তাঁদের খরচ করার নকশা অনেকটাই গরিবের চাহিদার কাছাকাছি এসেছে। কেমন সে চাহিদা? আগেই সমীক্ষায় ধরা পড়েছিল, ড্রেন তৈরি, আবর্জনা সাফ, শৌচ নিকাশি গরিবের সর্বোচ্চ চাহিদা। কিন্তু কাউন্সিলাররা সর্বাধিক টাকা খরচ করেন রাস্তা তৈরিতে। যাঁদের রিপোর্ট কার্ড তৈরি হয়েছিল, তাঁরা রাস্তায় খরচ কমিয়ে ড্রেন, নিকাশিতে বাড়িয়েছিলেন। যাঁদের রিপোর্ট কার্ড তৈরি হয়নি, তাঁদের খরচের নকশায় সে তুলনায় পরিবর্তন হয়েছিল কম।
উন্নয়নের সব তথ্য যে মানুষকে দিতে হয়, এমনও নয়। তাঁরা তো চোখের সামনেই সব দেখছেন-শুনছেন। অনেক খবর রাখেন। কিন্তু কাজে লাগান না। তখন ‘কাজ দেখে ভোট দিন, জাত-ধর্ম দেখে নয়,’ এমন সাধারণ কথাও একটা প্রণোদনা তৈরি করে অন্য ভাবে চিন্তা করার। তা থেকে ভোটের নকশায় পরিবর্তন হয়।
শুধু তাই নয়। উন্নয়নের কাজ কে ভাল করছেন, কে কোন খাতে খরচ করছেন, তার হিসেব পেলে গণতন্ত্রের কার্যক্রমে মানুষের আগ্রহ জন্মায়। তাতে ভোটদাতা রাজনীতির সঙ্গে, প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে সংযুক্ত হন। নাগরিকের সতর্কতা যত বাড়ে, গণতন্ত্র তত ফলপ্রসূ হয়।
তা যে হতে পারছে না, তার একটা কারণ হিংসা। যে কোনও ছুতোয় খুনখারাপির বাতাবরণ তৈরি করলে সাধারণ মানুষ সরে যায়, নেতাদের প্রশ্ন করার সাহস করে না। হিংসা উস্কে দেওয়াটা দায়বদ্ধতা এড়ানোর সহজ উপায়। আর একটা উপায় পুরো ব্যবস্থার উপর অনাস্থা তৈরি করা। ‘সব নেতাই চোর’, এমন মনোভাব এখন খুব চলে।
অথচ আমাদের গবেষণা বার বার দেখিয়েছে, ‘সবাই সমান’ এ কথা ভুল। কার কত সম্পত্তি, কে কত দুর্নীতিগ্রস্ত, বুঝতে আমরা তাঁদের সম্পদের তথ্য জোগাড় করেছি। আবার নেতারা যাঁদের পরিচিত (যেমন সাংবাদিক), তাঁদের মতও নিয়েছি। বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, নেতায় নেতায় পার্থক্য অনেক। সেই পার্থক্যের বিচার নির্বাচনে আসা চাই। ‘সব দল সমান, সব নেতা ধান্দাবাজ,’ এটা ধরে নিলে এর সঙ্গে ওর কাজের তুলনা অর্থহীন হয়ে পড়ে। তখন মানুষ প্রশ্ন করতে উৎসাহ পায় না, আরও উন্নত ভবিষ্যতের কল্পনা করতে সংকোচ করে। এই হতাশা একটা ফাঁদ। এ থেকে বেরোতেই হবে।
এক মস্ত সমস্যা হল, রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রমুখিতা বড় বেশি। শীর্ষ নেতারা যা বলবেন, তার বাইরে আর কোনও কথা নেই। কে কেমন কাজ করছেন, তার গুরুত্ব সামান্য। প্রার্থীর কাছে একমাত্র প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়, অমিত শাহ (বা রাহুল গাঁধী, বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কি আমাকে পছন্দ করেন? এই প্রশ্ন এমনই সর্বগ্রাসী, যে নিজের গ্রামে কিংবা ওয়ার্ডে কে কী কাজ করলেন, সেটা এলেবেলে হয়ে যায়। কেউ প্রত্যয়ের সঙ্গে বলতে পারেন না, আমি ভাল কাজ করেছি, তাই আবার টিকিট পাব।
কী করলে রাজনৈতিক দলের কাছে প্রার্থী মনোনয়নের সময়ে উন্নয়নের কাজে সাফল্য-ব্যর্থতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, তা নিয়ে চিন্তা দরকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘প্রাইমারিজ’ বলে একটি স্তর হয়, যেখানে স্থানীয় ভোটাররা প্রত্যেক দলের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। তাঁদের মধ্যে থেকে শেষ অবধি প্রার্থী নির্বাচন করে দলগুলি। এই ব্যবস্থাও ত্রুটিমুক্ত নয়। চরম মতালম্বী প্রার্থীরা নির্বাচিত হন বেশি, কারণ চরম মতালম্বী ভোটাদাতারা প্রাইমারিতে অংশগ্রহণ করেন বেশি। কিন্তু এর কোনও একটা রকমফের ভাবা দরকার। যেমন, এলাকার মানুষের মনোনয়নের ভিত্তিতে প্রার্থীদের তালিকা তৈরি হতে পারে, দল প্রার্থী বাছাইয়ের সময়ে সেই তালিকাকে গুরুত্ব দিতে পারে। এমন একটা ব্যবস্থা না থাকলে উন্নয়নে ভাল কাজের পুরস্কার, খারাপ কাজের জন্য বর্জন, এগুলো রাজনীতিতে স্থান পাবে না। মানুষের জন্য কাজ আর নির্বাচনী রাজনীতি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, গণতন্ত্র নিষ্ফল হবে।
মুশকিল হল, কাজ দেখানোর খুব একটা সুযোগও অধিকাংশ জনপ্রতিনিধির নেই। একমাত্র পঞ্চায়েতে নির্বাচিত সদস্য ছাড়া, আর কেউ সরাসরি উন্নয়নের কাজের দায়িত্ব পান না। সাংসদ বা বিধায়কদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল বাদ দিলে টাকা বরাদ্দে বা খরচে তাঁদের ভূমিকা প্রায় নেই। তাই চিন্তা করা দরকার, আমাদের রাজনৈতিক ‘ইউনিট’গুলিকে ছোট করা দরকার কি না।
নির্বাচনী ক্ষেত্র ছোট হলে বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের জন্য কিছু কাজ করা সহজ হয়। সার্বিক নীতি বিষয়ে বৃহৎ সিদ্ধান্ত ক’টা আর নিতে হয়? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয় সমস্যার সমাধানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। কোথায় রাস্তা প্রয়োজন, কোথায় জলের ব্যবস্থা দরকার, সময়মত তার সমাধান চাই। নির্বাচনী ক্ষেত্রে বাসিন্দার সংখ্যা পরিমিত হলে তা সম্ভব। ব্রিটেনে সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষের জন্য ছ’শো জন মেম্বার অব পার্লামেন্ট রয়েছেন।
আর ভারতে? একশো কুড়ি কোটি মানুষের জন্য পাঁচশো চল্লিশজন সাংসদ। গড়ে পঁচিশ লক্ষ মানুষের প্রতিনিধি এক জন। কিন্তু সাংসদদের নির্বাচনী ক্ষেত্র ছোট করা মুশকিল। কুড়ি-বাইশ হাজার সদস্য থাকলে সংসদে আলোচনাই অসম্ভব হয়ে পড়বে। ছোট করা দরকার বিধায়কদের নির্বাচনী ক্ষেত্র। সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে রাজ্যের সংখ্যা। না হলে গণতন্ত্রে প্রতিনিধিত্ব অর্থহীন হয়ে পড়ছে।
বিধায়কদের প্রণোদনা বাড়ানোর আর একটি উপায় হল রাজ্যের স্তরে তাঁদের মূল যে কাজ, অর্থাৎ আইন তৈরি, তার গুরুত্ব বাড়ানো। এখন যা কিছু গুরুত্বপূর্ণ আইন তার খসড়া কেন্দ্রই তৈরি করে, সংসদে পাশ করা হয়। বিধানসভাগুলো তাতে ছাপ লাগায় কেবল। সরকারের কাজের ভাল-মন্দ নিয়ে শোরগোল করাটাই বিধায়কদের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যের মানুষের প্রয়োজনে বিধানসভায় ক’টা আইন তৈরি হচ্ছে? আইন প্রণয়নে এই অতিরিক্ত কেন্দ্রমুখিতাও গণতন্ত্রবিরোধী। রাজ্য ছোট হলে, নির্বাচনী ক্ষেত্রে ছোট হলে, আইন ও নীতি বেশি করে স্থানীয় মানুষের উপযোগী হবে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, রাজ্যের সংখ্যা বাড়লে কি তাদের মধ্যে সমন্বয় করা কি আরও কঠিন হয়ে পড়বে না? যদি সমন্বয় করতে হত, তা হলে হয়তো কঠিন হত। কিন্তু সমন্বয় করা চাই, এই ধারণাটাই এখন চলে গিয়েছে। সে কাজটা ছিল যোজনা কমিশনের, তাকে তুলেই দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র (ফেডেরাল) পরিকাঠামোয় বিভিন্ন রাজ্য পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে উন্নয়ন করবে, সেই উদ্দেশে তৈরি করা হয়েছে নীতি আয়োগ। তাই রাজ্যের সংখ্যা বাড়ানোয় আমি সমস্যা দেখছি না।
সেই সংখ্যা কত হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলতে পারে। আমার তো মনে হয়, যতগুলো জেলা, ততগুলো রাজ্য করার কথাও ভাবা যায়। প্রায় সাড়ে ছশো রাজ্য তৈরি হবে। তাতে মানুষের চাহিদার প্রতি নেতার সংবেদনশীলতা বাড়বে, রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষমুখিতাও কমবে। আজকাল নির্বাচনী প্রচারে সাফল্যের কৃতিত্ব সম্পূর্ণই মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বা শীর্ষনেতা দাবি করেন। অথচ গণতন্ত্রে স্থানীয় প্রতিনিধিদের স্বীকৃতি দেওয়ার কথা। কাজে আমরা দেখি তার উল্টো। বিধায়ক বা কাউন্সেলাররা যা কিছু করেন, আগে ‘দিদি’ বা ‘মোদী’-কে ভাগ না দিয়ে তার কৃতিত্ব দাবি করার সাহস পান না।
অনেকে বলবেন, উন্নয়ন যাতে কেন্দ্রমুখী না হয়, এলাকার উন্নয়নের কাজে নেতাদের যাতে উৎসাহ আসে, সেই জন্যই তো সংবিধান সংশোধন করে বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছিল। ভাবা গিয়েছিল, গ্রাম পঞ্চায়েতে বা পুরসভায় জনপ্রতিনিধিরা ভাল কাজ করে বেশি ভোট পাবেন, এলাকারও উন্নতি হবে। দু’পক্ষেরই লাভ। কিন্তু তা হচ্ছে কি?
কেন বিকেন্দ্রীকরণ কাজ করে না? ধরা যাক একশো দিনের কাজের প্রকল্পের কথাই। মহারাষ্ট্রে গ্রামীণ রোজগার নিশ্চয়তা প্রকল্প শুরু করেছিলেন এক জেলাশাসক। প্রকল্পটি ছিল সম্পূর্ণ প্রশাসনিক, উপরের নির্দেশ অনুসারে প্রতি স্তরের আধিকারিককে কাজ দিতেই হত। তার সঙ্গে নির্বাচনী রাজনীতির কোনও যোগ ছিল না। জাতীয় স্তরে প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতকে। তাতে প্রধানদের জন্য বেশি কাজ তৈরির প্রণোদনা হওয়ারই কথা। কিন্তু তিনি উদ্যমহীন, অদক্ষ হলে গ্রামের মানুষ নিরুপায়।
প্রধান উদ্যমী হলেই হবে না। কেন্দ্র কত টাকা বরাদ্দ করল, রাজ্য কত টাকা পাঠাল, তার উপরেও নির্ভর করে কর্মদিবস। দায়িত্ব প্রধানের, রাশ কেন্দ্র-রাজ্যের হাতে। আবার, যে প্রধান যত বেশি মানুষকে কাজ দেবেন তিনি তত বেশি ভোট পাবেন, সে নিশ্চয়তাই বা কোথায়? সংরক্ষণের নীতির ফলে এক জন প্রধান বা সরপঞ্চ একই আসনে দ্বিতীয় বার দাঁড়াতে পারবেন না, সেটাই বরং নিশ্চিত। তাই প্রধানরা ভাবতে পারেন, এত গা ঘামিয়ে কী লাভ?
দলিত, জনজাতি, মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের প্রয়োজন অবশ্যই আছে। কিন্তু সংরক্ষণের নীতি যদি ভাল কাজের প্রণোদনার বিপরীতে দাঁড়ায়, তবে ফের চিন্তা করতে হবে না কি? একটি আসনের সংরক্ষণ আরও দীর্ঘমেয়াদী করা যেতে পারে। বিকেন্দ্রীকরণ করলেই তো হবে না। কী শর্তে নীচের তলার মানুষকে ক্ষমতা দেওয়া হল, তা বুঝতে হবে। ক্ষমতা কাজে লাগানো সম্ভব কি না, কাজ করার প্রণোদনা তৈরি করল কিনা, সে প্রশ্ন করতে হবে।
গণতন্ত্রের একটা মডেল নিয়ে ভারত পথ চলা শুরু করেছিল সাত দশক আগে। মাঝে বিকেন্দ্রীকরণের জন্য সংবিধান সংশোধন ছাড়া খুব বেশি অদল-বদল হয়নি। কিন্তু গণতন্ত্র দাবি করে অনবরত পরীক্ষা-নিরীক্ষা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার খামতিকে স্বীকার করা, আর তার মোকাবিলা করার কাজ ক্রমাগত করে যাওয়া চাই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাসাচুসেট্স্ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-তে অর্থনীতির শিক্ষক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy