ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার শিকার হয়েছিলেন এম এম কালবুর্গি। —ফাইল চিত্র।
আরও এক বার দাঁতনখ বার করল ধর্মীয় মৌলবাদ। জনপ্রিয় মালয়ালি লেখক কে পি রামানুন্নি হুমকি চিঠি পেলেন, ৬ মাসের মধ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করলে তাঁর হাত-পা কেটে ফেলা হবে। আরও এক বার আক্রান্ত হল সভ্যতা। এই মুহূর্তে বিভেদকামী যে আক্রমণের মুখে প্রতিনিয়তই আমরা।
ধর্ম বা ধর্মাচরণের সঙ্গে মৌলবাদের ফারাকটা যে কতটা বিস্তর, এই দেশের আপামর মানুষ, হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে, সেটা উপলব্ধি করেন। এই দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ ধর্মবিশ্বাসী, নিজের ধর্ম পালন করেন নিষ্ঠাভরে এবং সেই বিশ্বাস ও আচরণে অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ বা অসহিষ্ণুতার পাঠ থাকে না। সেই জায়গাটাকেই আক্রমণ করতে চায় মৌলবাদীরা, লক্ষ্যটা হল ভারতের মূল শক্তিকে দুর্বল করার। সেই শক্তি এ দেশের সামাজিক আস্থা ও পারস্পরিক বিশ্বাসের কাঠামোয়। হিন্দু এবং মুসলিম মৌলবাদীরা এই এক প্রশ্নে এসে দাঁড়ায় এক পঙ্ক্তিতে। যেন দেওয়ালের দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে দুই মানব। দু’পক্ষের হাতেই মারাত্মক সব অস্ত্র, দু’পক্ষই ভাঙার চেষ্টা করছে দেওয়াল, যে দেওয়াল সভ্যতার বিরুদ্ধে শত্রুর জোরালো আক্রমণকে প্রতিহত করে এসেছে এ যাবৎ।
ধিক্কারযোগ্য এই হানা। কেরলে লেখককে হুমকি-চিঠি পাঠানো তাই কোনও এক বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর প্রতিটি পরতে আছে সুদূরুপ্রসারী ষড়যন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। প্রশাসনকে শক্ত হাতে এর মোকাবিলা করতে হবে। দেশের প্রতিটি স্তম্ভকে হয়ে উঠতে হবে প্রতিরোধে অটুট। কিন্তু সবচেয়ে বড় দায়িত্বটা এসে পড়ছে আমাদেরই কাঁধে। এ দেশের প্রতিটি রাম এবং প্রতিটি রহিম পরস্পরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াক, হাতে থাক হাত, মন্দির বা গির্জার ঘণ্টা মিলে যাক আজানের ধ্বনির সঙ্গে। দুর্বৃত্তেরা সক্রিয় হয়েছে। এই দেশের মাটি যে দুর্জয় ঘাঁটি, এটা বোঝানোর সময় এসেছে।
আমরা যথেষ্ট তৈরি তো?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy